নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁইথিয়া |
স্কুলভোটে বিরোধীদের ভয় দেখিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে না দেওয়া বা সন্ত্রাস করে জেতার অভিযোগ প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ সবের মধ্যেও আবার কোনও স্কুলে প্রার্থী দিয়েও তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা। যেমনটা ঘটেছে সাঁইথিয়ার দেবেশ্বরতলা নিত্যানন্দ ব্রহ্মচর্য শিক্ষা নিকেতনে (জুনিয়র হাইস্কুল)।
সাঁইথিয়ার ওই স্কুলে কাল রবিবার নির্বাচন। অথচ তার আগেই তৃণমূলের দুই প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল কি হার নিশ্চিত জেনেই প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিল? না কি দলীয় কোন্দল?
সাঁইথিয়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ সরকারের দাবি, “ওই স্কুলে আগের বার নির্বাচনে তৃণমূল ও সিপিএম প্রার্থী দিয়েও সুবিধা করতে পারেনি। তিনটি আসনের সব কটিতেই আমরা জিতেছিলাম। হার নিশ্চিত জেনে তৃণমূলের তিন জন প্রার্থীর মধ্যে দু’জন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।” একই দাবি করেছেন সিপিএমের সাঁইথিয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক জুরান বাগদি। তিনি বলেন, “এই এলাকায় সন্ত্রাস করার ক্ষমতাও তৃণমূলের নেই। তাই পরাজয় জেনে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছে।”
গত রবিবার জেলার চারটি থানা এলাকার যে আটটি স্কুলের পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছে, তার পাঁচটিতেই জয়ী হয়েছেন বামপন্থী প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীরা। অন্য দিকে, কংগ্রেস ও কংগ্রেস-তৃণমূল জোট একটি করে স্কুলে জয়ী হয়েছে। একটি স্কুলে বাম ও কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের ফল ৩-৩।
ব্রহ্মচর্য শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক তণ্ময় মুখোপাধ্যায় জানান, গত ২০ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া এবং ২৩ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। কাল রবিবার নির্বাচন। ভোটার রয়েছেন ১৩৪ জন। তবে মোট ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে তিন জন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনই তৃণমূলের। বাকি এক জন সিপিএমের। প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়া সঞ্জয় পালের দাবি, “নেতৃত্বের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা পাইনি। মনোবল ভেঙে গিয়েছে। সে জন্য দু’জন প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছি।” তৃণমূলের সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান বলেন, “অসহযোগিতার অভিযোগ ঠিক নয়। কংগ্রেস ও সিপিএমের হুমকির ভয়ে দু’জন প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।”
অন্য দিকে, সাঁইথিয়া হাইস্কুলেও একই দিনে নির্বাচন রয়েছে। সেখানে তৃণমূল প্রার্থীই দেয়নি। পুরপ্রধান কংগ্রেসের বীরেন্দ্রকুমার পারখ দাবি করেন, “প্রার্থী না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত এখানে কাউকে দাঁড় করাতে পারেনি তৃণমূল।” তৃণমূলের শহর সভাপতি মানস সিংহ অবশ্য স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, “নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক অভিভাবককে নির্বাচন সংক্রান্ত ফর্ম (ইন্টিমেশন ফর্ম) পাঠানোর কথা। কিন্তু তা না হওয়ায় নির্বাচন বয়কট করা হয়েছে।” অভিষোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক অরুণকুমার দাস। তিনি বলেন, “নিয়ম মেনে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” |