|
|
|
|
অতিথিশালায় বোর্ড মিটিং |
তমালিকাদের পুরসভায় ঢুকতে বাধা তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের গা-জোয়ারির অভিযোগ। ফের সিপিএম পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডাশেঠ এবং বাম কাউন্সিলরদের হলদিয়া পুরসভায় ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। যার জেরে বুধবার পুরসভার অতিথিশালায় বোর্ড মিটিং সারতে হল পুরপ্রধানকে।
গত ২৬ জুন হলদিয়া পুরসভার বর্তমান বোর্ড গঠনের দিন থেকেই তৃণমূল বারবার বাম কাউন্সিলরদের পুরভবনে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রায় প্রত্যেক বারই বোর্ড মিটিংয়ের দিন পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা। কখনও দলীয় ব্যানারে, কখনও বা ব্যানার ছাড়াই।
বুধবার, পঞ্চম বোর্ড মিটিংয়ের দিনে, তৃণমূলের নামেই পুরসভার গেটে মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ চলছিল। সাতসকালেই পুরভবনের মূল ফটকের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। সঙ্গে ছিলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। বেলা এগারোটা নাগাদ তমালিকা ও ১৫ জন বাম কাউন্সিলর তিনটি গাড়িতে এসে পৌঁছলে পুরভবনের গেট আটকে শুরু হয় বিক্ষোভ। শেষ মুহূর্তে ছুটির দিনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল।
এমন ঘটনা যে ঘটতে চলেছে, তার পূর্বাভাস অবশ্য আগেই দিয়ে রেখেছিলেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। গত ১৫ ডিসেম্বর শহরে এক সভায় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, “পুর-নির্বাচনের ছ’মাস পরে আপনারা যে দিন চাইবেন, সে দিন পুরবোর্ড পাল্টে দেব। সেই সাহস ও যোগ্যতা আমাদের আছে।” এ দিনই হলদিয়া পুরভোটের পরে ছ’মাস অতিক্রান্ত হল। |
পুরপ্রধানের গাড়ি আটকানো নিয়ে গণ্ডগোল। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র |
তবে কি পুর-বোর্ড পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এ দিনের বিক্ষোভ? শুভেন্দু সে কথা স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “পুরসভার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তাই বিক্ষোভ হচ্ছে।” কী ধরনের ক্ষোভ? পুরসভার গেটের সামনে তৃণমূল কর্মীরা দাবি তোলেন পানীয় জলের কর প্রত্যাহার করতে হবে, পুরসভার সামনের ঝিল থেকে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু এই সব দাবিদাওয়া আদায়ের নাম করে বারবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পুরভবনে ঢুকতে বাধা দেওয়া কি সঙ্গত? ‘মন্তব্য করব না’ বলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান শুভেন্দু। তবে কেশিয়াড়িতে এ দিন সূর্যকান্ত মিশ্র অভিযোগ করেন, “গায়ের জোরে পুরসভা দখলের চেষ্টা হচ্ছে।”
বিক্ষোভ চলাকালীন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর দুলাল জানাকে গাড়ি থেকে টেনে বার করা হয় বলে অভিযোগ। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের দেবপ্রসাদ মণ্ডলের অবশ্য বক্তব্য, “আগের বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের মহিলা কাউন্সিলরদের হেনস্থা করেন উনি। তাই এ দিন মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।”
পুরভবনে ঢুকতে না-পেরে পাশেই পুরসভার অতিথিশালায় চলে যান বাম কাউন্সিলররা। সেখানে এ দিনের বোর্ড মিটিংয়ে আগে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। উপ-পুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, “নতুন প্রস্তাব গৃহীত না হলেও ৯ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের দেওয়া নানা প্রস্তাব গৃহীত হয়। রাস্তা ও পুকুর বাঁধানো, টিউবয়েল বসানো ইত্যাদি।”
তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দেবপ্রসাদবাবু জানিয়েছেন, পুরসভার বাইরে হওয়া বোর্ড মিটিং তাঁরা মানেন না। তমালিকাদেবীর বক্তব্য, “পুর আইন অনুযায়ী যে কোনও সরকারি জায়গায় বোর্ড মিটিং করতে পারি। সেই মতো পুরসভার অতিথিশালায় বোর্ড মিটিং করেছি। কেউ যদি
অনাস্থা আনে, আমরা প্রস্তুত আছি।” যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এখনও অনাস্থার কথা বলেননি।
|
|
|
|
|
|