ভাঁড়ে মা ভবানী, পুড়শুড়া পঞ্চায়েত সমিতিতে সঙ্কট
পুড়শুড়া পঞ্চায়েত সমিতির ‘নিজস্ব তহবিল’ প্রায় শূন্য। ওই তহবিল থেকে এলাকায় যে সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের কথা, সেগুলি তো হচ্ছেই না, দৈনন্দিন অফিস পরিচালনাই দুরূহ হয়ে উঠেছে বলে পঞ্চায়েত সমিতির হাহাকার মহকুমা প্রশাসনের কানে পৌঁছেছে। আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতি বা পঞ্চায়েত যা থেকে নিজস্ব সম্পদ বাড়াতে পারে সে রকম অনেকগুলি ক্ষেত্র বেঁধে দিয়েছে সরকার। সে বিষয়ে উদাসীনতার জন্যই এই দূরবস্থা। এখনই তৎপর না হলে পুড়শুড়া পঞ্চায়েত সমিতির মতোই হাল হতে চলেছে মহকুমার খানাকুলের দু’টি, গোঘাটের দু’টি এবং আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতিরও। সমস্ত বিডিওদের এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।”
পুড়শুড়া পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমানে কী হাল?
পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় দামোদর নদী থেকে মির্জাপুর জঙ্গলপাড়া-সহ আরও এলাকায় নভেম্বর মাস পর্যন্ত জল তুলে সেচের জন্য বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। এই টাকা শোধ করা হয় নিজস্ব তহবিল থেকে। কিন্তু তহবিলে আছে ১ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার মতো। আধিকারিকদের গাড়ি ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়েছে। সভা চলাকালীন টিফিন সরবরাহ বন্ধ। কাজের মাঝে বার কয়েক চায়ের ব্যবস্থাও এখন নেই। কর্মীরা নিজেদের পয়সায় চা খান। গাড়ি ব্যবহার বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন উন্নয়নের কাজে তদারকি বা কাজের জায়গা পরিদর্শন হচ্ছে না বললেই চলে।
পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের কিঙ্কর মাইতির অভিযোগ, বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নিষ্ক্রিয়তায় সমিতিটি দুঃস্থ। সমিতির আয়ের ক্ষেত্রগুলির অধিকাংশ অধরা। আর যেগুলি থেকে মোটা অঙ্কের আয় আসত, সেগুলি টাকা দেওয়া বন্ধ করা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়নি। যেমন বিদ্যাসাগর ভবন থেকে বছরে ৫ লক্ষ টাকা ভাড়ার চুক্তি হয়েছিল বছর সাতেক আগে। কিন্তু গত ৩ বছর ধরে সেই ভাড়া আদায় হচ্ছে না। পরপর ৩ বছর ভাড়া না দিলে উচ্ছেদ করার চুক্তি থাকলেও সেই পদক্ষেপ করা হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির বিল্ডিং-এ অফিস চলায় ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর এবং রেজিস্ট্রার দফতর দীর্ঘদিন ভাড়া দিচ্ছে না। খালি গোটা কয়েক ফেরিঘাট, জলকর এবং ঠিকাদারদের নিবন্ধীকরণের জন্য ফি আদায়ের ব্যবস্থা আছে। তা-ও ফেরিঘাট ইজারার এবং জলকর বাবদ প্রচুর টাকা বাকি থাকে। কিঙ্করবাবুর দাবি, “এলাকার উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নিজস্ব তহবিল শক্তিশালী করা হোক।”
পুড়শুড়ার বিডিও সম্রাট মণ্ডল বলেন, ‘‘নিজস্ব তহবিলের দুর্দশা কাটাতে বিশেষ পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ একই কথা বলেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের শিখা সাঁতরা। তাঁর বক্তব্য, ‘খুব শীঘ্রই অর্থ-সংক্রান্ত স্থায়ী সমিতির বৈঠক ডেকে বিদ্যাসাগর ভবন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, নিজস্ব তহবিল বলতে পঞ্চায়েত আইন অনুসারে মাসুল, ফি, কর, টোল ইত্যাদি মাধ্যমে অর্থগ্রহণ, ভাড়া, ইজারা, বিক্রয়লব্ধ অর্থ সংগ্রহ, জরিমানা বাবদ প্রাপ্য অর্থ, লাইসেন্স ফি, পঞ্চায়েত সমিতির পরিচালনাধীন রাস্তা বা সেতুর পারাপার আদায় কর, হাটবাজার থেকে ধার্য ফি, জলকর, আপত্তিজনক দ্রব্য বিষয়ে ব্যবসার জন্য ফি, চিলিং প্ল্যান্ট, শৌচাগার, কেব্ল লাইন ইত্যাদি নানান ক্ষেত্র থেকে আয়। মোট আয়ের ১০ শতাংশ শিক্ষা এবং ২০ শতাংশ জনস্বাস্থ্যে খরচ করা বাধ্যতামূলক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.