ব্যান্ডেলে থানা ঘেরাও
মাদক কারবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আক্রান্ত ব্যবসায়ী
লাকায় সমাজবিরোধী কাজকর্ম ও মাদক ব্যবসা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। সেই আক্রোশে ওই ব্যবসায়ীকে প্রাণে মারার চেষ্টা করল এক দল দুষ্কৃতী। বুধবার সকালের ওই ঘটনাকে ঘিরে জনরোষ ছড়িয়ে পড়ে ব্যান্ডেলের বালিকাটা এলাকায়। পুরুষ ও মহিলারা পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। দোষীদের ধরার আশ্বাস দেওয়ার পরে বিক্ষোভ ওঠে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বালিকাটায় বেশ কিছু সমাজবিরোধী দীর্ঘদিন ধরে হেরোইন-সহ নানা মাদকের কারবার চালাচ্ছে প্রকাশ্যে। কেউ প্রতিবাদ জানালে প্রাণনাশের হুমকি শুনতে হয়। তাঁদেরই কয়েক জন বললেন, “দিনেরাতে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোর করে তোলা আদায় করছে। তোলা না দিলে অথবা অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করলে কপালে জোটে বেধড়ক মারধর বা খুনের হুমকি। প্রাণের ভয়ে সরাসরি কেউ প্রতিবাদ না করলেও গোপনে পুলিশকে জানানো হয়েছিল সবই। তবু পুলিশ হাত গুটিয়ে রয়েছে।”
জনরোষ: পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও ব্যান্ডেলে। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র
বালিকাটারই বাসিন্দা এবং গদি তৈরির ব্যবসায়ী মহম্মদ রহমত আলি অবশ্য প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ করার সাহস দেখিয়েছেন। মাদক ব্যবসা বন্ধের দাবিতে পুলিশের কাছে একাধিকবার অভিযোগও করেছেন। এ দিনের হামলা তারই পরিণতি বলে এলাকার মানুষের দাবি। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে তিনি যখন দোকানে ব্যস্ত, তখন কিছু দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয়। তাঁকে দোকান থেকে বের করে এলোপাথাড়ি কিল-চড়-লাথি মারতে থাকে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই ব্যবসায়ীর হাতে ও বাঁ পায়ে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। শ্যালক গোলাম রসুল বাধা দিতে গেলে তিনিও বেধড়ক মার খান। দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্ত্রী ও শ্যালিকার শ্লীলতাহানি করে বলেও অভিযোগ।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও দুষ্কৃতীরা ততক্ষণে পগারপার। এর পরেই এলাকা তেতে ওঠে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে দলবদ্ধ ভাবে ব্যান্ডেল পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করেন। উত্তেজিত জনতা ফাঁড়ির বড়বাবুর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। পরে কিছু এলাকাবাসী এবং আক্রান্ত ব্যবসায়ী চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানান।
মার খেয়ে রহমত আলির মুখ ফুলে গিয়েছে। পায়ে গভীর ক্ষত। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বালিকাটা এলাকার কিছু সমাজবিরোধী প্রকাশ্যে হেরোইন, গাঁজা-সহ নানা মাদকদ্রব্যের ব্যবসা চালাচ্ছে। ফলে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বাড়ির মহিলারা ছিনতাই ও বোমাবজির আতঙ্কে বাইরে বেরনোর সাহস পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা তোলা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এলাকায় সুস্থ পরিবেশ ফেরাতেই আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলাম।
তারই বদলা নিল দুষ্কৃতীরা। প্রতিবেশী ও বাড়ির লোকেরা এগিয়ে না এলে আমাকে হয়তো মেরেই ফেলত!”
হুগলি জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ব্যান্ডেলের ওই দুই সমাজবিরোধী গোষ্ঠীর বিরোধ দীর্ঘ দিনের। ব্যবসায়ীর উপর হামলার একটা লিখিত অভিযোগ হয়েছে। দোষীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা। স্থানীয় মানুষ কিন্তু জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ এর পরেও নড়েচড়ে না বসলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.