পাঁচ মাস আগে অভিযোগ দায়ের হলেও ধরা পড়েনি ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত দু’জন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন গলসির তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের নেতারা।
তৃণমূলের গলসি ২ ব্লক সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি নূর মহম্মদ মল্লিকের অভিযোগ, “অভিযুক্ত দু’জন গ্রামে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা আমাদের দলের ব্লক সভাপতি বাসুদেব চৌধুরীর অনুগামী। তাই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে না।” তাঁদের আরও দাবি, রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা নেতা মলয় ঘটক এই ঘটনায় পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বললেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ মানেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া থেকে আসা ধান কাটার কাজ করতে গলসির তেঁতুলমুড়ি গ্রামে এসেছিলেন এক আদিবাসী তরুণী। গত ২৭ জুলাই মাঝ রাতে গ্রামের চার জন ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে তরুণীর অভিযোগ। তিনি পুলিশের কাছে জানান, তাঁর চিৎকারে এলাকার লোকেরা ছুটে আসায় ওই চার জন পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে দু’জনকে তিনি চিনতে পারেন। এই দু’জনের নাম সারাফত হোসেন মল্লিক ও নূর মহম্মদ শাহ। অন্য দু’জনকে দেখলে চিনতে পারবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। গলসি থানার পুলিশ ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করে। কিন্তু তার পরে পাঁচ মাস কেটে গেলে তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি গলসি থানার পুলিশ। নূর মহম্মদ মল্লিকের দাবি, এলাকায় তো বটেই, ওই দু’জনকে এর মধ্যে তৃণমূলের মিছিলেও দেখা গিয়েছে।
গলসি ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী বলেন, “ওই দু’জন আমার পরিচিত, এ কথা সত্য। তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত এ কথাও ঠিক। তবে পুলিশকে তো আমি তাঁদের গ্রেফতার করতে বারণ করিনি। পুলিশি তদন্তে তাঁরা দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই গ্রেফতার করা উচিত।” গলসি থানার ওসি দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনার তদন্ত করছেন বর্ধমানের ডিএসপি (এনফোর্সমেন্ট) ভাস্কর গোস্বামী। ডিএসপি ভাস্করবাবু বলেন, “অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি নিয়ে নূর মহম্মদেরা আমার কাছে বেশ কয়েক বার এসেছেন। আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ধরতে পারিনি। ওই দু’জন পলাতক জানিয়ে আমরা গত ৩০ নভেম্বর আদালতে চার্জশিটও জমা দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছে।” অভিযোগকারিণীর আইনজীবী শিবাজি সামন্তের অবশ্য দাবি, “পুজোর আগেই ওই তরুণী সিজেএম আদালতে গিয়ে অভিযোগ করেন, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না। তার পরে আদালত অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পরোয়ানা দু’টির নম্বর হল পি আর ২২৭ ও ২২৮। তা হাতে পেয়েও পুলিশ দু’জনকে ধরেনি।” পুলিশ অবশ্য এমন গ্রেফতারি পরোয়ানার কথা জানা নেই বলে দাবি করেছে। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার বক্তব্য, “ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা না-গেলে আমরা তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানাব।” |