বন্ধ বাগান খুলবে কবে, উদ্বেগে শ্রমিকেরা
খন তিনি বিরোধী দলনেত্রী। ডুয়ার্সের বন্ধ চা বাগান পরিদর্শনে গিয়ে বলেছিলেন, তাঁরা ক্ষমতায় থাকলে বাগান খুলতে পাঁচ মিনিট সময় লাগত। দেড় বছর আগে তিনি রাজ্যে ক্ষমতাসীন হয়েছেন। এখনও কেন আইনি জটিলতা কাটিয়ে বন্ধ হয়ে থাকা ঢেকলাপাড়া ও দলমোড় চা বাগান চালু হল না সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন চা শ্রমিকেরা। মুখ্যমন্ত্রীর ডুয়ার্স সফরের প্রাক্কালে বন্ধ ঢেকলাপাড়ায় চলছে নানা জল্পনা। একদল শ্রমিক ভাবছেন, নিশ্চয়ই এ বার কোনও ভাল খবর মিলবে। অন্য পক্ষ ‘আশ্বাস ছাড়া কিছুই মিলবে না’ এ কথা ভেবে আগের মতোই হতাশায় ডুবে রয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য ঢেকলাপাড়া দ্রুত খোলানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেছেন।
• গত সফরে উত্তরবঙ্গে এসে মুখ্যমন্ত্রী পর্যটন,
ফল প্রক্রিয়াকরণ, চা নিয়ে পরিকল্পনা হচ্ছে
বলে বলেছিলেন। এ বার নিশ্চয়ই সেই সব
পরিকল্পনাগুলি রূপায়ণ নিয়ে বলবেন।
সেই আশাই করছি।
সমরেন্দ্রপ্রসাদ বিশ্বাস
• শিল্প-কারখানায় উত্তরবঙ্গ আজও রাজ্যের
মধ্যে সব থেকে অবহেলিত। রেল-সড়ক ও
বিমান যোগাযোগ মান্ধাতা আমলের। জমি
জটে যেন উন্নয়ন থমকে না যায়। আশা
করব, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বঞ্চনা ঘুচবে।
বিশ্বজিৎ দাস

• ডুয়ার্স ও তরাইকে পঞ্চম তফসিলের কিছু
সুযোগ সুবিধে দিতে গত মার্চেই রাজ্য কাউন্সিল
গঠনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এখনও তা
হয়নি। তবে জমির পাট্টা,হিন্দি মাধ্যমে
শিক্ষা ইত্যাদি নিয়ে রাজ্য এগোচ্ছে।
বীরসা তিরকে
• বাম আমলেও সব বন্ধ বাগান খোলানোর
জন্য বহুবার বলেছি। এখন তৃণমূল জমানাতেও
বারবার সে কথা বলছি। আশা করি মুখ্যমন্ত্রী
এ বার এসে চা-বাগানের শ্রমিকদের
মুখে হাসি ফোটাবেন।
রাজেশ লাকড়া
তিনি বলেন, “উচ্চ আদালতে একটি মামলা থাকায় জটিলতার নিষ্পত্তি হচ্ছে না।” তৃণমূল শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন এবং শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বন্ধ বাগান নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। শ্রমমন্ত্রী বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার উত্তরবঙ্গের দায়িত্ব প্রাপ্ত যুগ্ম শ্রম আধিকারিক বলবেন।” উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম আধিকারিক মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, “আইনি জটিলতায় ঢেকলাপাড়া চালু করা যাচ্ছে না।” সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মন্দার জন্য অনেক চা বাগান বন্ধ হয়েছে। অনেক চেষ্টা করে অনেক বাগান খুলিয়েছি। কয়েকটি বাগান খোলাতে পারিনি। তৃণমূল সরকার মাত্র দু’টি বাগান খুলতে হিমসিম খাচ্ছে।” বামেরা যা-ই দাবি করুন, ঘটনা হল, ঢেকলাপাড়া চা বাগানের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে গত ডিসেম্বরেই শ্রমিক-বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। শুনতে হয়েছে, “ক্ষমতায় যখন ছিলেন, তখন আসেননি কেন?”
২০০৭ সালের গোড়ায় বন্ধ কাঁটালগুড়ি, ঢেকলাপাড়া বাগানে পর পর শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ২০০৭-এ ডুয়ার্সের ভার্নাবাড়ি এবং কাঁঠালবাড়ি চা বাগানে যান মমতা। বন্ধ বাগান নিয়ে তৎকালীন বাম-সরকারকে তুলোধোনা করেন। ২০০৮-এ ভার্নাবাড়ি, ২০১০-এ কাঁঠালগুড়ি বাগান চালু হয়। বাগানগুলি খুললেও আজও অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন ঢেকলাপাড়া ও দলমোড়ের শ্রমিকরা। সেখানে অপুষ্টিজনিত অসুখে ভুগে শতাধিক শ্রমিক পরিবারের সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। দলমোড়ে গত দেড় বছরে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বাগান শ্রমিকদের দাবি। ওই বাগানে সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত ১৫ জন শ্রমিক স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানালে তা নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে তদন্তও হয়েছে। যেখানকার কলোনির বাসিন্দারা স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছিলেন, তাঁদের এলাকায় ১০০ দিনের কাজ শুরু হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.