বরাদ্দ অমিল, চালুই হয়নি তফসিলি হস্টেল
ফসিলি জাতি ও উপজাতির পড়ুয়াদের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দু’বছর আগে তৈরি হয়েছিল দু’টি আশ্রম হস্টেল। কিন্তু সরকারি তরফে ছাত্রছাত্রীদের থাকা-খাওয়ার খরচ বাবদ কোনও বরাদ্দ না মেলায় চালুই হয়নি হস্টেল দু’টি। এরই মধ্যে আরও ৫টি আশ্রম হস্টেল তৈরির অনুমোদন পেয়েছে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। সেগুলির পরিকাঠামো তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি আরও পাঁচটি হস্টেল তৈরির অনুমোদন রয়েছে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের কাছে। কিছু দিন পর শুরু হবে সেগুলির নির্মাণ কাজ। কিন্তু পড়ুয়াদের থাকা-খাওয়ার খরচ না মিললে এই হস্টেলগুলিও চালু করা যাবে কিনা সংশয়।
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আশ্রম হস্টেলের পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের থাকা, খাওয়া, পোশাক, চিকিৎসা খরচ-সবই দেয় সরকার। ছাত্রছাত্রী পিছু বছরে ৯ হাজার টাকা সরকারি অনুদান মেলে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৫০টি আশ্রম হস্টেলে ১২৮৭ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কিন্তু তাতেও সঙ্কুলান না হওয়ায় আরও বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা তাঁদের স্কুলেও আশ্রম হস্টেল তৈরির আবেদন করেন। তার ভিত্তিতেই বছর দুই আগে গড়বেতা-২ ব্লকের হুমগড় বালিকা বিদ্যালয় ও গড়বেতা ৩ ব্লকের মানিকবাঁধ হাইস্কুলে ২টি আশ্রম হস্টেল তৈরি করা হয়।
পাশাপাশি ডেবরার আলোককেন্দ্র হাইস্কুল, ওই ব্লকেরই ঝিকুরিয়া হাইস্কুলকে একটি বালক ও একটি বালিকা আশ্রম হস্টেল, সবংয়ের রামবাড় কন্যা বিদ্যালয় ও নারায়ণগড়ের বিদিশা অধ্যাপক প্রবোধকুমার ভৌমিক বিদ্যায়তনকে একটি আশ্রম হস্টেলের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই হস্টেলগুলির কাজই চলছে এখন। এ ছাড়াও কেশপুর ব্লকের শ্যামচন্দ্রপুর সীতারামজিউ বিদ্যামন্দির, নারায়ণগড় ব্লকের পুরুনদা রামকৃষ্ণ শিখা সদন, ডেবরার পুয়ান পদ্মলোচন কন্যা বিদ্যাপীঠ, জামবনির চিচিড়া হাইস্কুল ও দাসপুরের নবীন মানুয়া ঈশ্বরচন্দ্র হাইস্কুলে আশ্রম হস্টেল নির্মাণের জন্য ৯২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
এক একটি আশ্রম হস্টেল তৈরি করতে ২০ লক্ষ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এই হস্টেলগুলিতে ২৫-৩০ জন ছাত্রছাত্রী থাকার পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রী পিছু সরকারি বরাদ্দ না মিললে কোনও লাভ নেই। তাই ভবন তৈরির পরেও সেগুলি যদি কার্যকর করা না যায় তাহলে কী লাভ! দু’বছর আগে হুমগড় বালিকা বিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছিল আশ্রম হস্টেল। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মালা মজুমদার বলেন, “আমাদের স্কুলে দূর থেকে ছাত্রীরা আসে। চারদিকে জঙ্গল থাকায় মেয়েদের পাঠাতে ভয় পান অভিভাবকেরা। আবার এলাকার মানুষ গরিব হওয়ায় টাকা খরচ করে মেয়েদের হস্টেলেও রাখতে পারেন না। ফলে আমাদের স্কুলে একটি আশ্রম হোস্টেলের খুবই প্রয়োজন ছিল। দু’ বছর হয়ে গেল সরকারি অনুমোদন পেয়ে ভবন তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের থাকা-খাওয়ার জন্য বরাদ্দ টাকা না মেলায় হস্টেল চালু করা যায়নি।” অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের মতে, সরকার পরিকাঠামো তৈরির অর্থ দেওয়ায় তা তৈরি করা হয়েছে। পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ অর্থ না দিলে তাদের কিছুই করার নেই। তাই দাবি উঠেছে, শুধু পরিকাঠামো তৈরি নয়, সরকার দ্রুত ছাত্রছাত্রীদের বরাদ্দ মঞ্জুর করুক। বিভিন্ন স্কুলের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকেও রাজ্য সরকারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। যাতে হস্টেলগুলি চালু করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.