|
|
|
|
স্কুলের স্বার্থে ভোট বাদ, সমঝোতাই মন্ত্র পিংলায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পিংলার এই স্কুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা। ‘আমরা-ওরা’ সংঘাতে যখন রাজ্যে স্কুল-কলেজ, পঞ্চায়েত-শিল্পোদ্যোগ অচল হতে বসেছে, তখন সাহড়দা কালীপদ বিদ্যাপীঠ ব্যতিক্রম। স্কুলকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এখানে ভোটাভুটি এড়িয়ে চলেন রাজনৈতিক নেতারাই। স্কুলভোট কাছে এলে সবাই আলোচনা করে আসন সমঝোতা করে নেন। এটাই এখানকার ট্র্যাডিশন।
এ বারও তাতে ছেদ পড়ল না। লাল-সবুজের বিভেদ এড়িয়ে আসন সমঝোতা করল কংগ্রেস-তৃণমূল-সিপিএম, সবাই। ৬টি আসন প্রধান তিন দল দু’টি করে ভাগ করে নিয়েছে। ফলে, রবিবার অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের দিন নির্দিষ্ট থাকলেও ভোট আর হয়নি। প্রধান শিক্ষক অজিত সামন্ত বলেন, “এখানে কখনও ভোট হয়নি। আসন পিছু একটি মনোনয়নই জমা পড়ে। এ বারও তাই হয়েছে।”
১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই ভোটাভুটির রেওয়াজ নেই। স্থানীয় তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ নায়েক বলেন, “আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়।” কিন্তু কেন? কংগ্রেস নেতা বগলাপদ মিশ্রের বক্তব্য, “স্কুলভোটে রাজনৈতিক সমস্যা কারও অজানা নয়। সব দলের কর্মী-সমর্থকদের সমান সচেতনতা থাকে না। ফলে, অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে। আমরা এখানে এই ঘটনা চাই না।” সিপিএম নেতা স্বপন মাইতির কথায়, “স্কুলের পরিবেশ সুন্দর রাখতেই আসন সমঝোতা।”
রাজনীতি থেকে দূরে থাকা এই স্কুল পড়াশোনাতেও যথেষ্ট এগিয়ে। খড়্গপুর মহকুমায় যে সব স্কুল মাধ্যমিকে ভাল ফল করে, এই স্কুল তাদের অন্যতম। গত বার এখান থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া ১৩০ জনের সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণের সংখ্যা ৮৫। ২০১০ সালে স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে। ২০১২-এ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৫২ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৪৫ জন। প্রথম বিভাগ পেয়েছে ১৪ জন। ছাত্র সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। সেই অনুপাতে শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক সবই রয়েছে। শুরু হয়েছে নতুন হস্টেল তৈরির কাজও। প্রধান শিক্ষক বললেন, “স্কুলের উন্নয়নে দলমতের উর্ধ্বে উঠে সকলে এগিয়ে আসেন। সহযোগিতা করেন।” স্কুলভোটে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যতিক্রমী ভূমিকায় খুশি এলাকার মানুষও। সাহড়দার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলছিলেন, “স্কুল ক্যাম্পাসে রাজনীতি না থাকাই ভাল। এখন তো স্কুল ভোট ঘিরে কত জায়গায় কত ঘটনা ঘটছে। মারমারি চলছে। অশান্তি ছড়াচ্ছে। আমাদের এলাকা এ ক্ষেত্রে আলাদা।” |
|
|
|
|
|