জাঁকানো শীতে সকাল থেকেই হুল্লোড়ের বড়দিন
শীতকাল পড়লেও এতদিন হাড় কাঁপানো শীতের দেখা মিলছিল না জেলায়। তাই নলেন গুড়, পিঠেপুলি বা ধোঁয়া ওঠা কফি কোনওটারই স্বাদও জুতসই হচ্ছিল না। কিন্তু বড়দিনের আগে উৎসবের রেশ ফিরিয়ে আনতে শীত পড়ল সাড়ম্বরেই। আর ব্যস, দিকে দিকে পিকনিক, হুল্লোড়, খাওয়াদাওয়া আর নাচাগানা চালু। নদীর পাড় থেকে পার্ক, জঙ্গল বাদ পড়ছে না কিছুই। দলে দলে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন ওই সব পিকনিক স্পটে। গান, নাচ আর রকমারি রান্নাবান্নায় জমে উঠেছে ২৫ ডিসেম্বর।
চড়ুইভাতির ভিড়। গোপগড় ইকো-ট্যুরিজম পার্কে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
পশ্চিম মেদিনীপুরে পিকনিক স্পট প্রচুর। তবে মাওবাদী আতঙ্কে এতদিন জেলার অনেক এলাকাতেই সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ ছিল। এখন আতঙ্ক দূর হওয়ায় আনন্দের রেশ যেন একটু বেশিই। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক, জেলার পিকনিক স্পটগুলো। প্রথমেই আসে মেদিনীপুর-খড়্গপুর শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া কাঁসাই নদী লাগোয়া এলাকার কথা। নদীর চর এখন ধূ ধূ মাঠ, আর দু’দিকে প্রচুর খোলা জায়গা। এ ছাড়া রয়েছে গোপগড় ইকো ট্যুরিজম পার্ক, ক্ষুদিরাম পার্ক। আর একটু এগোলেই মিলবে মন্দিরময় পাথরা। সেখানে একদিকে রয়েছে নদীর সৌন্দর্য, অন্যদিকে প্রাচীন মন্দিরের ভাস্কর্য। এসব ছাড়িয়ে জঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে গুড়গুড়িপাল, চাঁদড়া। রয়েছে শালবনির আড়াবাড়ির জঙ্গলও। যেখানে জঙ্গলের অকৃত্রিম আনন্দ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করা যায়। তাই পায়ের তলার সর্ষেওয়ালা বাঙালি এই ছুটির দিনে বাড়িতে থাকেন কী করে।
মেদিনীপুরে কংসাবতীর তীরে। ছবি: কিংশুক আইচ।
বন্ধুবান্ধব, বা সপরিবারে, আবার কেউ একাধিক পরিবার জোট বেঁধে বেরিয়ে পড়েছেন চড়ুইভাতিতে। সঙ্গে হাঁড়ি, কড়াই, সব্জি ইত্যাদি রান্নার উপকরণ। তবে রান্নাটা মুখ্য নয়, একসঙ্গে খাওয়াটাই মজা। তাই মেদিনীপুর-খড়্গপুর দুই শহরের মানুষ যেমন শহরঘেঁষা কাঁসাই নদীতে ভিড় জমিয়েছেন তেমনি গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, ঘাটালের মানুষ ভিড় জমিয়েছেন শীলাবতির ধারে, ঘাটালের সাধুরবাঁধ, চন্দ্রকোনারোডের পরিমল কানন কিংবা গড়বেতার গনগনিতে। গনগনি নিয়ে আবার পৌরাণিক কাহিনিও রয়েছে। পুরাণ ছেড়ে দিলেও গনগনির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভূমিক্ষয়ের বাস্তব ইতিহাসও কম আকষর্ণীয় নয়। গনগনির পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে শীলাবতী নদী। আর নদীর টানে ক্ষয় হচ্ছে পাশের ভূ-পৃষ্ঠের। ক্ষয়ে যাওয়া ঢালগুলির মধ্যে দিয়েই ফুটে উঠেছে সৌন্দর্য। মনে হবে কেউ যেন এঁকে দিয়েছে নানা ধরনের নকশা। ক্ষয় রোধে গাছও লাগানো হয়েছে। ফলে জঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একেবারে ভরপুর। এ ভাবে কখনও হিমেল হাওয়ার কাঁপুনি,তার মধ্যে গায়ে রোদ্দুর মেখে নেওয়া কিম্বা রান্নার ফাঁকেই উনুনে হাত সেঁকে নেওয়া, সবমিলিয়ে দিনটা ভালোভাবেই উপভোগ করলেন জেলার মানুষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.