|
|
|
|
রক্ত দিয়ে আঁকা হল প্রতিবাদের ছবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন তিন বান্ধবী। আচমকাই পিছন থেকে এসে একটি মেয়ের চুল টেনে ধরল এক যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গালে চুম্বন। ঘটনাটি বড়দিনের দুপুরে গুয়াহাটির প্রাণকেন্দ্রের।
এই ছবি মেয়েদের অসহায়তার। পাশাপাশি প্রতিবাদের এক অভিনব খ্রিস্টান বস্তি থেকে মণিপুরের চান্দেল, শিবসাগরের ধর্ষণ থেকে দিল্লির ঘটনা-সব অত্যাচারের বিরুদ্ধেই আজ গর্জে উঠলেন গুয়াহাটির মেয়েরা। নিজেদের রক্ত দিয়ে আঁকালেন প্রতিবাদের ছবি।
মঞ্চে ব্লেড হাতে দাঁড়িয়ে এক যুবক। গটগটিয়ে সবার আগে আঙুল বাড়িয়ে যে মেয়েটি এগিয়ে গেল ব্লেডের দিকে, তার বয়স বড়জোর ১০ বা ১১। ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়ল কাচের বাটিতে। সেই রক্তে তুলি ডুবিয়ে বিষন্ন ভারতমাতার ‘রক্তাক্ত’ ছবি আঁকা হতে থাকল। বড়রা অনেকেই চোখ বুজে। কিন্তু চলতি আন্দোলনে রক্ত দিয়ে যোগ দেওয়ার আনন্দে তখন ঝলমল করছে ওই বালিকার মুখ।
কেবল হৃদয়ের টানে, গুয়াহাটি, দিল্লি বা উত্তর-পূর্বে মেয়েদের উপরে চলতে থাকা অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে আজ স্বতস্ফূর্ত ভাবে জমায়েত হয়েছিলেন গুয়াহাটির মেয়েরা। আঙুল কেটে রক্ত দেওয়া ৮৫ বছর বয়সী প্রতিমা দেবরায় বলেন, “গুয়াহাটি হোক, দিল্লি হোক বা মণিপুর-সব ক্ষেত্রেই অপরাধ সমান। তাই শাস্তিও তেমনই কড়া হওয়া উচিত।”
|
আট থেকে আশির রক্ত দিয়ে প্রতিবাদের ছবি আঁকা চলছে গুয়াহাটিতে। —নিজস্ব চিত্র |
এই নিয়ে রক্ত দিয়ে ১০৩ নং ছবি আঁকলেন গৌতম বর্ধন। তবে, আগে নিজের রক্ত ব্যবহার করেছিলেন। এ বার মেয়েরা যে ভাবে নির্ভয়ে নিজের রক্ত দিয়ে প্রতিবাদের ছবি আঁকালেন তাতে বিস্মিত তিনি। তৃতীয় শ্রেণির সবিতা, সঙ্গীতা, পঞ্চম শ্রেণির ঋ
তিস্মিতা বা শিলং থেকে আসা দূর্বা, প্রীতিরা অল্প ব্যথায় কেঁদে বাড়ি মাথায় করে। তারাই অবলীলায় আঙুল কেটে রক্ত দিল প্রতিবাদের স্বার্থে!
এ দিকে তিন দিন রক্তপাত, অবরোধ, আগুন জ্বলার পরে আজ দিনভর শান্তই ছিল মণিপুর। বড়দিনের খাতিরে, ২৬ ডিসেম্বর মধ্যরাত অবধি বন্ধ শিথিল করেছে যৌথ মঞ্চ। এখনও ধরা পড়েনি মোমোকোর শ্লীলতাহানির ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত লিভিংস্টোন। তাই আন্দোলন চলবেই।
তবে, কোনও বড় ঘটনা না ঘটায় আজ থেকে শিথিল হয়েছে কার্ফু। মণিপুরের ঘটনায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন বিজেপি সভাপতি নীতিন গডকড়ী। |
|
|
|
|
|