ঠাকুরপুকুর থানায় বিক্ষোভ
এ বার কলকাতা, বাসেই অত্যাচার মহিলার উপরে
দিল্লি দূর অস্ত নয়। বরং বাসে নারী-নিগ্রহের দিক থেকে দিল্লির খুব কাছেই কলকাতা! ঠাকুরপুকুর-কদমতলার একটি ঘটনা অন্তত সেই রকম সাক্ষ্যই দিচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে একটি চলন্ত বাসে ডাক্তারি ছাত্রীর উপরে গণধর্ষণ নিয়ে দেশ জুড়ে তুলকালাম চলছে। আর তারই মধ্যে সোমবার গভীর রাতে ঠাকুরপুকুরের কদমতলায় এক যুবক পরিত্যক্ত একটি বাসে মানসিক ভারসাম্যহীন মাঝবয়সি এক মহিলার উপরে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ। প্রথমে পালালেও পরে যুবকটিকে ধরে ফেলেন এলাকার লোকজনই। তাঁদের অভিযোগ, ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ রাতেই তাকে ছেড়ে দেয়। মহিলা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করলেও তাদের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের অভিযোগ ‘অসত্য’ বলে জানিয়েছে। পুলিশের দাবি, ছেড়ে দেওয়া তো দূরের কথা। যুবককে মোটেই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে বাসিন্দারা মঙ্গলবার ঠাকুরপুকুর থানায় বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, মামলা ধামাচাপা দিতেই পুলিশ ওই যুবকটিকে ছেড়ে দিয়েছে।
কী হয়েছিল সোমবার রাতে?
এই সেই বাস। —নিজস্ব চিত্র
বাসিন্দারা জানান, কদমতলায় ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে চার মাস ধরে একটি বাস দাঁড় করানো আছে। মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলাকে কয়েক দিন ধরে বাসের পাশে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছিল। সোমবার রাত প্রায় পৌনে ১১টা নাগাদ এক মহিলা এলাকার একটি দোকানে জিনিস কিনতে গিয়ে জানান, বাসের ভিতর থেকে তিনি একটি মেয়ের গোঙানি শুনতে পেয়েছেন। দোকান-মালিক গিয়ে দেখেন, বাসের ভিতরে মহিলার উপরে চড়াও হয়েছে এক যুবক। দোকানদার এলাকার বাসিন্দাদের ডেকে আনেন। তখন যুবকটি গায়ে চাদর জড়িয়ে বাসের জানলা দিয়ে লাফ মেরে পালায়। মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা তখনও বাসের ভিতরে শুয়ে। বাসটির পাশে সাইকেল ও প্যান্ট রাখা ছিল। ভিতরে পড়ে ছিল যুবকটির জামাকাপড়, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ এবং চটি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মিনিট পনেরো পরে যুবকটি নিজের জিনিসপত্র নিতে বাসটির কাছে ফিরে আসে। তখনই জনতা তাকে ধরে থানায় খবর পাঠায়। কদমতলার বাসিন্দাদের বক্তব্য, যুবকটি হিন্দিতে কথা বলছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অভিযুক্তকে তার জিনিসপত্র-সহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ অভিযুক্ত যুবক এবং ওই মহিলাকে ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যায়। কিছু পরে সাক্ষ্য দিতে কয়েক জনকে ফোন করে ডাকা হয় থানায়। কিন্তু একটু পরেই দেখা যায়, যুবকটি ওই রাস্তা দিয়েই হেঁটে যাচ্ছে! সঙ্গে সঙ্গে থানায় বসে থাকা এলাকার দুই বাসিন্দাকে ফোন করা হয়। তখনই জানা যায়, যুবকটি থানার লক-আপে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ তাঁদের বলেছে, মহিলাকে ভ্যান থেকে নামানোর সময়েই অভিযুক্ত কোনও ভাবে হাত ফস্কে পালিয়ে গিয়েছে। এলাকাবাসীর এই বক্তব্য ‘অসত্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। ডিসি (এসএসডি) সুব্রত মিত্র জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ভিড়ের মধ্য থেকেই অভিযুক্ত যুবক পালিয়ে যায়। পরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মহিলাকে পাঠানো হয় পিজি-তে। তবে পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি বলে পুলিশের দাবি। ডিসি বলেন, “এলাকার মানুষ ধর্ষণের কথা বললেও ঘটনাটি অন্য রকম। মহিলার বয়ান অনুযায়ী শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করেছি।” তিনি জানান, মহিলা আদৌ মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তা জানতেও ডাক্তারি পরীক্ষা হবে। কেননা তিনি নিজে পুলিশ ও ডাক্তারের কাছে ঘটনার বিবরণ দেন। তিনি জানান, এক মদ্যপ যুবক তাঁকে জাপটে ধরে। তিনি চেঁচামেচি করায় আশপাশের লোকজন থানায় খবর দেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.