লজের দরজা ভেঙে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করল রামপুরহাট থানার পুলিশ। মঙ্গলবার সকালের ঘটনা। মৃতের নাম সন্দীপ সরকার (২৮)। বাড়ি মাড়গ্রাম থানা এলাকার খামেড্ডা গ্রামে।
যদিও লজের খাতায় তাঁর নাম অমিত রায় এবং তিনি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলে উল্লেখ রয়েছে। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, লজে ঘর দেওয়ার জন্য ওই যুবকের পরিচয়পত্র দেখা হয়নি। এ ব্যাপারে লজের মালিক বলরাম ঘোষ বলেন, “লজের মালিক বলেন, “আমরা ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, প্যান কার্ড দেখি। কিন্তু ওই যুবক জানিয়েছিলেন, ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরতে এত রাত হয়ে যাবে বুঝতে পারেননি। তাই পরিচয়পত্র সঙ্গে ছিল না। তাঁর কথাবর্তায় আমরা অসংলগ্নতা ধরা পড়েনি। তাই বিপদে পড়েছেন ভেবে, ভাড়া দিয়ে দিই।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রামপুরহাট শহরের ধূলাডাঙা রোডের ওই লজে উঠেছিলেন সন্দীপ। লজের খাতায় বাড়ির ঠিকানা হিসেবে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার পারুলিয়া এলাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন। লজ ভাড়া নেওয়ার সময়ে এও জানিয়েছিলেন, বর্ধমান থেকে রাতে ডাক্তার দেখিয়ে আসছেন। সকালে বাড়ি ফিরে যাবেন। লজের মালিক বলরাম ঘোষ বলেন, “মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ এক কর্মী চা দিতে গিয়ে দরজায় ধাক্কা মারেন। কিন্তু ভেতর থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তিনি আমাকে জানান। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দিই।” এর পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। দেখা যায়, টেবিলে কীটনাশক ও বিস্কুটের প্যাকেট, মদের বোতল ছিল। উদ্ধার হয়েছে একটি ডায়েরি। তাতে সুইসাইড নোটও মিলেছে। তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে তাতে লেখা আছে।
মৃতের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধামোহন সরকার বলেন, “৫ ছেলেমেয়ের মধ্যে সন্দীপ ছোট। বছর তিনেক ধরে ছেলে একটি অর্থ লগ্নিকারক সংস্থায় কাজ করত। কর্মসূত্রে সে ময়ূরেশ্বরে ওই সংস্থার অফিসে থাকত। সোমবার দুপুরে ময়ূরেশ্বরে মহুরাপুর গ্রামে তার দিদির বাড়ি থেকে অফিসে গিয়েছিল সে। ওই দিন রাতে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথাও হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর পাই।” সন্দীপ কেন এমন করল বুঝতে পারছেন বাবা রাধামোহনবাবু।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ায় ওই যুবক কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য রামপুরহাট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। |