আউশগ্রামে এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে আটক চার যুবকের মধ্যে এক জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত পার্থ সিংহ (৩৫) ওরফে রাজুর বাড়ি স্থানীয় মাঝের গ্রামে। মঙ্গলবার ভোরে তাঁর গলায় ফাঁস লাগানো দেহ দেখতে পান বাড়ির লোকেরা। গ্রামের সালিশি সভার চাপে ওই যুবক আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। পুলিশ দেহটিকে বর্ধমান মেডিক্যালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
রবিবার আউশগ্রামের যাদবগঞ্জ জঙ্গলে এক ৪৫ বছরের গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেছেন, “আউশগ্রাম থানার পুলিশ রবিবার চার যুবককে ধরে আনে। গ্রামের মানুষের দাবি ছিল, চার জনই ধর্ষণে জড়িত। কিন্তু অভিযোগকারিণী এক জনকে শনাক্ত করেন ধর্ষণকারী হিসেবে। ফলে, অন্যদের পুলিশ ছেড়ে দিয়েছিল। পার্থ সিংহের দেহ উদ্ধারের পরে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। পার্থর উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ মিললে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”
পার্থর আত্মীয় জ্যোতি দত্তর অভিযোগ, “সোমবার গ্রামে সমস্ত রাজনৈতিক নেতারা বসে ঠিক করেন, ওই চার যুবককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ধর্ষিতাকে প্রায় দু’লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে তাঁরা ফতোয়াও দেন। ওই টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না পেশায় খেতমজুর পার্থর পক্ষে।”
তৃণমূল এবং সিপিএমদু’পক্ষই মেনে নিয়েছে সোমবারের সালিশি সভার কথা। তবে সেখানে কী হয়েছে, তা নিয়ে ভিন্ন মত দু’দলের নেতারা। তৃণমূলের আউশগ্রাম-১ ব্লক সভাপতি চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “রাজু আমাদের সমর্থক। সালিশিসভায় আমাদের লোকেরা ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সমর্থন করেন। দু’টি পরিবার ক্ষতিপূরণ দিতে না চাওয়ায় চাপ গিয়ে পড়েছিল রাজু এবং আর এক জনের উপরে।” এক স্থানীয় সিপিএম নেতার আত্মীয় বলে একটি ছেলেকে এলাকাবাসী আর চাপাচাপি করেননি বলেও দাবি ওই নেতার। পক্ষান্তরে, সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মজুমদারের দাবি, সালিশি সভার কথা জানলেও সেখানে ছিলেন না তাঁদের দলের কেউ। |