রজতজয়ন্তী বর্ষেও সেই চিরাচরিত ভাবেই শুরু হল বিষ্ণুপুর মেলা। রবিবার দুপুরে জেলার বিভিন্ন লোকশিল্পের সমাহারে বিশাল শোভাযাত্রা দিয়ে মেলার সূচনা হয়। সেই মিছিলে ছিল রাবণকাটা মুখোশ নৃত্য, টুস ভাসানের চৌদল প্রভৃতি। মেলা এ বার ২৫ বছরে পড়ল বলে শোভাযাত্রায় লালপাড় শাড়িতে কলসি নিয়ে ২৫ জন বধূ ও ২৫ জন ঢাকি ছিলেন।
শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে ঘুরতে শেষে গত কয়েক বছর ধরে মেলা বসছে বিষ্ণুপুর হাইস্কুল ও কে জি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মাঠে। রবিবার বিকেলে পাঁচ দিনের এই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্যদের মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। শ্যামবাবু আবার মেলা কমিটির সভাপতিও বটে। তিনি বলেন, “বিষ্ণুপুরের কালজয়ী শিল্প-সংস্কৃতিকে তুলে ধরার উদ্দেশ্য নিয়ে বিষ্ণুপুর মেলার যে সূচনা হয়েছিল, তা আজ জেলা ও রাজ্য ছাড়িয়ে জাতীয় স্তরে পরিচিতি পেয়েছে।” কিন্তু এই মেলাতে যে ভাবে বাণিজ্যিক পণ্য নিয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলি স্টল করেছে, তাতে হস্তশিল্পীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। |
এই মেলায় জেলার হস্ত ও কুটিরশিল্পীরা ১৪০টি স্টলে নিজেদের পশরা সাজিয়েছেন। অন্য জেলার শিল্পীরা ১৬টি স্টলে মেলে ধরেছেন নিজেদের শিল্প-সামগ্রী। বিষ্ণুপুরের ধ্রুপদের সঙ্গে ভাদু, টুসু, ঝুমুর, বাউল গান পরিবেশিত হচ্ছে মেলায়। সেই সঙ্গে অসম, ওড়িশা ও ছত্তীসগঢ়ের লোকশিল্পীরাও তাঁদের সংস্কৃতি এখানে তুলে ধরতে হাজির হয়েছেন। কলকাতার সঙ্গে বলিউডের শিল্পীদেরও অনুষ্ঠান রয়েছে এখানে। মেলা কমিটির সম্পাদক তথা বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অদীপ রায় জানান, এ বার মেলার বাজেট ৫৬ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। মোট ২৫৪টি স্টল রয়েছে। ভারতীয় জাদুঘর, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পর্যটন, তথ্য-সংস্কৃতি, কৃষি, শিশুকল্যাণ, প্রাণিসম্পদ, স্বাস্থ্য বিভাগ-সহ ১২টি দফতর মেলায় যোগ দিয়েছে। এ বার মেলার থিম ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উন্নয়ন ভাবনা’। এই নিয়ে প্রদর্শনী ও আলোচনাচক্র মেলায় রয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকছে। যানজট এড়াতে শহরের কয়েকটি জায়গায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। |