|
|
|
|
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশয় |
রাস্তা তৈরির কাজে মেলেনি ঠিকাদার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় জেলার ১৯টি পাকা রাস্তা তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। ঠিকাদার নিযুক্ত করতে দরপত্র চেয়ে একাধিক বার বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত দিনে মাত্র ৯টি রাস্তা তৈরির ঠিকাদার নিযুক্ত হয়েছে। গত তিন বছরেও মেলেনি বাকি ১০টি রাস্তা নির্মাণের ঠিকাদার। ফলে গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করতে না পারলে তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করছেন দলের জেলা নেতৃত্ব। তাই বাকি কাজ শেষ করতে ফের টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া চলছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ -সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “আসলে যখন ওই ১৯টি রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজের দরপত্র তৈরি হয়েছিল, তারপর থেকে দ্রুত হারে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। ফলে সড়ক তৈরির কাজে ঠিকাদারেরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে সরকারি নিয়ম মেনে ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা চলছে।”
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ২০০৯ -২০১০ আর্থিক বছরে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৯টি রাস্তা পাকা করার অনুমোদন মেলে। সব ক’টি রাস্তা মিলিয়ে প্রায় ১০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য ৬৬ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়। রাজ্য গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা ঠিকাদার নিয়োগ করতে টেন্ডার ডাকে। কিন্তু কয়েকটি রাস্তা নির্মাণের কাজ ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঠিকাদাররা দরপত্র জমা দেননি। ফলে রাস্তা তৈরির কাজ নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। একাধিক বার টেন্ডার প্রক্রিয়ার পর চলতি বছর এখনও পর্যন্ত মাত্র ৯টি রাস্তা পাকা করতে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। বাকিগুলির হাল সেই তিমিরেই। একই ভাবে ২০০৭ -২০০৮ আর্থিক বছরে গ্রাম সড়ক যোজনায় জেলার ১৩টি রাস্তার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু মাত্র ৭টি রাস্তার কাজে ঠিকাদার নিয়োগ হয়। বাকি ৬টি রাস্তার ক্ষেত্রে একাধিক বার টেন্ডার ডাকা হলেও এখনও ঠিকাদার মেলেনি। ফলে ওই ৬টি রাস্তা মিলিয়ে প্রায় ২৯ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার কাজ এখনও শুরু হয়নি। অর্থাৎ দুই আর্থিক বছর মিলিয়ে গ্রাম সড়ক যোজনায় পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ১৭টি রাস্তা পাকা করার কাজ নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। জেলা পরিষদের সহ -সভাধিপতি জানান, ২০০৭ -২০০৮ আর্থিক বছরে যে ৬টি রাস্তার কাজ বকেয়া রয়েছে সেগুলির জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করতে রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর ২০০৯ -২০১০ আর্থিক বছরে অনুমোদিত রাস্তার কাজের জন্য দ্রুত ঠিকাদার নিয়োগ করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
২০০৯ -২০১০ আর্থিক বছরে অনুমোদিত ১৯টি রাস্তার মধ্যে চণ্ডীপুরের ধান্যশ্রী থেকে আমদাবাদ, বৃন্দাবনপুর থেকে যাদব মিদ্যাচক, নরঘাট থেকে মোহনচৌধুরি চক, কাঁথি -১ ব্লকের রামচন্দ্রপুর থেকে সমুদ্রপুর, খেজুরি ২ ব্লকের শ্যামপুর কটকা থেকে নরশুলিয়াচক, নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের বাসুলিচক থেকে মনুচক, রামনগর ২ ব্লকের নারান্দিয়া থেকে ছোটপদমপুর, এগরা ১ ব্লকের নেগুয়া থেকে কসবাগোলা—এই সমস্ত রাস্তা নির্মাণের কাজে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। বাকি ভগবানপুর ১ ব্লকের কলাবেড়িয়া থেকে কুলবেড়িয়া, ভগবানপুর ২ ব্লকের উদবাদাল থেকে উত্তরখামার, এগরা ১ ব্লকের কসবাগোলা থেকে পানিপারুল, ময়না ব্লকের কালিকাদাড়ি থেকে কৃপানন্দপুর, নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের নন্দীগ্রাম থেকে কেন্দেমারিচর, গড়চক্রবেড়িয়া থেকে সাতখণ্ড জালপাই, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের সোয়াদিঘি থেকে হোগোলবেড়িয়া, চর চন্দ্রামেড় থেকে শান্তিপুর, রামনগর ১ ব্লকের তালদিহি থেকে কাইকুলি, দেউলি থেকে ঝুকি, কোলাঘাট ব্লকের রায়চক থেকে বাবুয়াএই ১১টি রাস্তার কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। |
|
|
|
|
|