চিড়িয়াখানা মানেই...
মানবিক
লমলে শীতের দুপুর মানেই চিড়িয়াখানা জমজমাট। ডিসেম্বর আর জানুয়ারি এই দু’মাসে নাকি আলিপুর চিড়িয়াখানায় দশ লক্ষ মানুষ আসেন। খাঁচাবন্দি পশুপাখিদের নাভিশ্বাস ছেড়ে দে মা, পালিয়ে বাঁচি। মানুষের কিন্তু পোয়াবারো। জমজমাট লোকালয়ে বিচিত্র পশুপাখি দেখা, পারলে তাদের ছোঁয়া। কিংবা আরও বেশি কিছু। বাঘ একটু খেয়েদেয়ে ঘুমোবে, কুমির চুপচাপ রোদ পোয়াবে মানা যায়? তাই ঢিল ছোড়া বা বিকট চেঁচানো, বাঁদরকে ভেঙচানো, শিম্পাঞ্জিকে জলের বোতল ছুড়ে মারা, সিগারেট খাওয়ানো, লাঠি দিয়ে খোঁচানো, খাঁচার সামনে লটকানো নির্দেশ থোড়াই কেয়ার করে অকাতরে খাদ্য-কুখাদ্য বিলানো, অধিকাংশ দর্শকের কাছে এটাই বিনোদন। চিড়িয়াখানায় নিত্য দিনের টুকরো টুকরো ছবি। জঘন্য অত্যাচারের ঘটনায় প্রায়ই ‘পাশবিক’ শব্দটা বলা হয়, পশুপাখিদের অভিধানে এই বিনোদন ‘মানবিক’ আখ্যা পেতেই পারে!
শিল্পী: অনুপ রায়
পশুপাখিদের আচারবিচার কাছ থেকে দেখার সুযোগের জন্যই নাকি তাদের লোকালয়ের মধ্যে খাঁচায় পুরে চিড়িয়াখানা বানানো। বাস্তবে খাঁচার সামনে মিনিট পাঁচেক। সুতরাং পর্যবেক্ষণ নয়, নিছক মনোরঞ্জন। তার মূল্য চোকাতে বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় কোথাও পাখির ডানায় ক্লিপ আটকানো, জলের প্রাণীদের সামান্য জলে ফেলে রাখা, দলবদ্ধ হয়ে ঘুরতে না দেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি চলতেই থাকে। মোদ্দা কথা, ওদের স্বাভাবিক জীবন বরবাদ। আর হাতের নাগালে পশুপাখিদের দেখে আহ্লাদে আটখানা মানুষও নিজেকে সামলাতে পারে না। বাঘের ছবি তুলতে সটান খাঁচার ভেতর হাত ঢুকিয়ে দেয়। যে ক’জন নিরাপত্তার দায়িত্বে বহাল, তাঁরাও পাবলিকের হাতে পশুপাখিদের সমর্পণ করে সরে পড়েন।
এই অবস্থায় একটু অদলবদল হোক না। চিড়িয়াখানার খোলা জায়গায় পশুপাখিরই স্বচ্ছন্দ রাজত্ব থাক। মানুষের জন্য তৈরি হোক বিশেষ খাঁচা। সেখান থেকে মানুষ দেখবে মুক্ত পশুপাখিদের, আর উপভোগ করবে খাঁচার ভেতর থাকার অনবদ্য মুহূর্ত! শুধু পশুদের যদি তখন ‘মানবিকতা’ পায়, তা হলেই বিপদ!

অভাবনীয়
অনেক অপেক্ষার পর চিন সফর বাতিল হল গৌতম বুদ্ধের। দিল্লির জাতীয় সংগ্রহশালা এবং সাঁচি, ভারহুত, সারনাথ, অমরাবতী, মথুরা, নাগার্জুনকোণ্ডা, নালন্দা-র মতো বৌদ্ধশিল্পকেন্দ্রের সংগ্রহশালা থেকে নির্বাচিত আঠাশটি ভাস্কর্য এবং এগারোটি চিত্রের প্রদর্শনী যাওয়ার কথা ছিল চিনে। সফর বাতিল হওয়ায় এ বার ঘরে ফেরার পালা। তার আগে ভারতীয় জাদুঘরের আশুতোষ শতবার্ষিকী হলে এদের এক সঙ্গে দেখার অভাবনীয় সুযোগ কলকাতাবাসীর। ‘ইন্ডিয়ান বুদ্ধিস্ট আর্ট’ প্রদর্শনীটি চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত (১১-৪টে)। সঙ্গে তারই একটি, নালন্দা থেকে পাওয়া উৎসর্গ-ফলক। ২০ ডিসেম্বর প্রদর্শনীটি উদ্বোধনের সঙ্গে আয়োজিত হয়েছিল সভ্যতার উন্নতিতে জল-নদী-সমুদ্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা ‘ওয়াটারস্কেপস: লেকস, রিভার্স অ্যান্ড সিজ’। ভারতীয় জাদুঘরের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে চন্দননগর ইনস্টিটিউট।

হারানো দিন
‘ছবি তো দেখানো হয়ে গেছে এখন কি হবে একমাত্র ভগবান জানেন।’ বিমল রায় চিঠি লিখছেন স্ত্রী মনোবীণাকে, সম্ভবত রোম থেকে, সেখানে ফিল্মোৎসবে তাঁর ছবি দেখানো হচ্ছে, কিন্তু সাল উল্লেখ নেই, সবটাই চিঠি থেকে অনুমান। বেশ লাগে এমন আর্কাইভ ঘাঁটতে, সে ভাবেই সাজানো পেঙ্গুইন বুকস ইন্ডিয়া-র ২০১৩-র ডায়েরি: আ সাইডওয়েজ গ্লান্স অ্যাট হিন্দি সিনেমা (সঙ্গে প্রচ্ছদের ছবি)। একদিকে দিন-তারিখ চিহ্নিত সাদা পাতা, অন্য পাতায় হিন্দি সিনেমার হারানো মুহূর্ত-- শু্যটিংয়ের অবকাশে দেবিকা রানি, শ্রী ৪২০-এ রাজ কপূরের সেই ‘মেরা জুতা হ্যায় জাপানি’র লাল টুকটুকে জুতোজোড়া, গুরু দত্তের পাসপোর্ট যাতে তাঁর পুরো নাম লেখা, এমন আরও কত কী...। সহায়তায় হাইফেন ফিল্মস, সম্পাদনায় নাসরীন মুন্নি কবীর।

লোকনৃত্য
ছো নাচের গুরু শশধর আচার্য এখন এ শহরে, ‘ব্রাত্যজন’-এর অভিনেতাদের সঙ্গে কর্মশালায়। নাটকে লোকনৃত্যের আঙ্গিক নিয়ে আলোচনা আর উপস্থাপন করলেন পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে। পাশাপাশি ছিটকালিকাপুরে লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের লালন মঞ্চে বিডন স্ট্রিট শুভম্-এর ২৫ বছর উপলক্ষে নাট্যমেলার মূল বিষয় লোকনৃত্য। দলের শিশু-কিশোর সদস্যদের সামনে বর্ধমানের রায়বেঁশে, মালদহের গম্ভীরা, পুরুলিয়ার নাটুয়া ও ছো, সিকিমের সিংহিছাম এবং ওড়িশার গোতিপুয়া নাচের আয়োজন ২৮-৩০ ডিসেম্বর।

বন্ধনহীন
দীর্ঘকাল পরে বাংলায় ফিরে তিনি বুঝেছিলেন, ভাষাটা বদলে গিয়েছে। কিন্তু না, তিনি তাঁর লেখার ভাষা পাল্টে ফেলেননি। বিজ্ঞান, সমাজ, সাহিত্য, দর্শন, শিক্ষা, স্মৃতিচর্চা এবং ব্যক্তিত্ব বিষয়ে অতঃপর লিখে গেলেন তিনি, তাঁর সেই কিশোরের মনে ছাপ ফেলা ভাষাতেই। তিনি বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার, ভেরিয়েবল এনার্জি সেন্টার, সাহা ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা বা উচ্চ পদের দায়িত্ব সামলে, প্রায় সাড়ে তিনশো মৌলিক গবেষণাপত্র লিখেও ‘সাহিত্য’কে ভোলেননি। নানা বিষয়ে তাঁর উজ্জ্বল ভাবনা ঝরঝরে গদ্যে ভাগ করে নিয়েছেন সাধারণ পাঠকের সঙ্গে। ভাবনা কিংবা ভাষায় চলতি হাওয়ার পন্থী তিনি নন, তবু বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে আসা-যাওয়া তাঁর চিন্তাগ্রন্থিগুলি বন্ধনহীন। গত প্রায় তিন দশকে তারই যত প্রবন্ধ-প্রকাশ তা নিয়ে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে সংকলন সৃষ্টি ও কৃষ্টি: বন্ধনহীন গ্রন্থি। প্রাক্কথন লিখেছেন সায়ন্তন মজুমদার। ২৬ ডিসেম্বর বিকেল চারটেয় সাউথ সিটি মলের স্টারমার্কে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। থাকবেন বিশ্বভারতী-র উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত, এবং অবশ্যই, বইটির লেখক।

রবিকথা
বাচ্চাদের মনের অলিগলি চিনতেন রবীন্দ্রনাথ। দার্জিলিঙে এক বার অনেকে এসেছেন কবিকে দেখতে। মায়ের কোলে একটি বাচ্চা বসে কবির কথা শুনছিল। একটু বাদে মা তাকে বললেন, ‘হল তো রবীন্দ্রনাথকে দেখা! এবার ফেরা যাক।’ বাচ্চাটি বলে উঠল, ‘চলতে তো দেখলাম না’। কথাটা কানে যেতেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন জোব্বা পরা রবীন্দ্রনাথ। হাঁটলেন ঘরের এ দিক-ও দিক। তার পর বাচ্চাটির কাছে এসে বললেন, ‘এবার দেখা হল তো?’ এমনই ছিলেন কবি। ভালবাসতেন বাচ্চাদের গল্প বলতে, ছেলেমানুষি করতে। আশ্রমের বাচ্চাদের শাসন করার পাশাপাশি মিশতেন বন্ধুর মতো। ছোটদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সেই সব মজার মজার গল্প নিয়েই বাচ্চাদের রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ডাঃ শ্যামল চক্রবর্তী (দীপ)। রোটারি সদনে বইটির উদ্বোধন করেন তপন রায়চৌধুরী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এবং পৌলমী সেনগুপ্ত। আয়োজনে ‘রবিকথা’।

সব ছোটদের
ক্যামেরা ধরছে ছোটরাই। তৈরি করছে ছোট্ট ছোট্ট সিনেমা। সে সব দেখে জুরিরা ঘোষণা করছেন প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়...। বিভিন্ন স্কুলকে নিয়ে এমনই অভিনব আয়োজন করেছিল শিশু কিশোর অ্যাকাডেমি। তাদের উদ্যোগে এখন শহরের বিভিন্ন হলে চলছে দ্বিতীয় কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু কিশোর চলচ্চিত্র উৎসব। সেখানেই দেখানো হবে ছোটদের তৈরি ছবিগুলি। প্রথম থেকেই উৎসব উদ্বোধন করে ছোটরাই। এ বারও উদ্বোধনী ছবি ‘আই অ্যাম কালাম’-এর নায়ক হর্ষ মায়ার উদ্বোধন করল। ১৩৫টি দেশের বহু সিনেমা এখানে দেখা যাবে। আমন্ত্রিত মূলত ছোটরাই, তাদের নামে ছবি দেওয়া ডেলিগেট কার্ড ইস্যু হয়েছে। অভিভাবকেরা আসবেন তাদের হাত ধরেই। বিশেষ থিম রাশিয়া, ট্রিবিউট ফেলুদাকে। ফেলুদাকে নিয়ে তৈরি সত্যজিৎ-সন্দীপের সব ছবি, এমনকী টেলিছবিও থাকছে। এ দিকে সত্যজিৎ রায়ের ভূতের ও ফেলুদার গল্প নিয়ে সন্দীপ রায়ের ‘সত্যজিতের গপ্পো’ টেলি-সিরিজটির দশটি ছবি ডিভিডি অ্যালবাম হিসেবে প্রকাশ করল এঞ্জেল ভিডিয়ো। ‘যেখানে ভূতের ভয়’-এর অনেক আগেই সত্যজিতের ভূতের গল্প নিয়ে ছবি করেছিলেন সন্দীপ, আর্কাইভ থেকে সে ছবি এখন সকলের হাতের মুঠোয়।

গুরুদক্ষিণা
‘গুরুদক্ষিণা’ নামে একটি তহবিল গড়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের পাশে দাঁড়াল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-সংগঠন ‘বিদ্যালয় প্রাক্তনী’। বিশেষত বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের হাত শক্ত করতে চায় তারা। প্রাক্তনীর সভাপতি সত্য নারায়ণ সরকার বলেন, উদ্যোগে শামিল বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৯-তে মাধ্যমিক পাশ করা ছাত্ররাও। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সপরিবার আজীবন মেডিক্লেমের ব্যবস্থা ছাড়া প্রাক্তনীর সাহায্য নিয়ে তাঁরা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষাকর্মীদের পাশেও দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন। ২৫ ডিসেম্বর প্রাক্তনী আয়োজিত পুনর্মিলন উৎসবে ১৯৮৭-র প্রাক্তনীরা তাঁদের সময়ে (’৮১-’৮৭) বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের সম্মানিত করছেন। অন্য দিকে ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের ১৫০ বছর উপলক্ষে গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার থেকে নরেন্দ্রপুর পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজনও করেছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম এবং বিদ্যালয় প্রাক্তনী।

তীর্থদর্শন
স্বামীজির ভারত-পরিক্রমার স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলিতে ঘুরে শিল্পী রথীন মিত্র এঁকেছেন প্রায় আশিটি রেখাচিত্র। এরই তেতাল্লিশটি নিয়ে আই সি সি আর-এর বেঙ্গল আর্ট গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছে ‘ফ্রম নরেন্দ্রনাথ টু বিবেকানন্দ: আ পিলগ্রিম্স প্রগ্রেস’ শীর্ষক প্রদর্শনী (৩১ পর্যন্ত, রোজ ১১-৭টা)। প্রকাশিত হয়েছে পুস্তিকা ও কার্ড সেট। সঙ্গের ছবিতে কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ স্মারক।

নাট্যস্বপ্নকল্প
শেক্সপিয়রের ‘মিডসামার নাইটস ড্রিম’, ‘চৈতালি রাতের স্বপ্ন’ নামে বাংলায় অনুবাদ করেন উৎপল দত্ত। ১৯৬৪-তে তাঁরই নির্দেশনায় অভিনীতও হয় সে নাটক। প্রায় অর্ধশতক পরে সে নাটক আবার মঞ্চে, অন্য থিয়েটারের প্রযোজনায়। বর্ষশেষের দু’দিন অ্যাকাডেমি ও রবীন্দ্রসদনে ওদের বার্ষিক উৎসব নাট্যস্বপ্নকল্প-এ অবন্তী চক্রবর্তীর নির্দেশনায় অভিনীত হচ্ছে নাটকটি। থাকছে বিমল মিত্র, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা থেকে নাটক এবং তিনটি থ্রিলার নাটকও। অন্য দিকে, শোভাবাজার নাটমন্দিরে রবীন্দ্রনাথের ‘গৃহপ্রবেশ’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল কিছু দিন আগে। এ বার পাথুরিয়াঘাটার ঘোষবাড়িতে ‘লক্ষ্মণের শক্তিশেল’ মঞ্চস্থ করতে চলেছেন তরুণ পরিচালক-অভিনেতা জয়রাজ ভট্টাচার্য। কলকাতার অনেক পুরনো বাড়িই দেখা হয়েছিল। কিন্তু বিপুল খরচের অঙ্ক শুনে পিছিয়ে আসতে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ঘোষবাড়িতে এসে ভাগ্য খুলল। ওঁরা কোনও পয়সাই নিচ্ছেন না, জানালেন কৃতজ্ঞ জয়রাজ। ২৯-৩০ ডিসেম্বর দু’টি করে মোট চারটি অভিনয় হবে নাটকটির। এ দিকে ২৯-৩০ ডিসেম্বর কালীঘাট মুক্তাঙ্গনে কলাক্রান্তির উদ্যোগে ১৯তম ছোট নাটকের প্রতিযোগিতা, থাকছে বাংলা, ইংরেজি ছাড়াও বিভিন্ন ভাষার নাটক।


অ-ভূতপূর্ব
গ্রুপ থিয়েটারের উৎসব উদ্বোধনে টলিউডের সুপারস্টার প্রসেনজিৎ! এমন অ-ভূতপূর্ব ঘটনাটাই ঘটতে চলেছে নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে, গিরিশ মঞ্চে। গিরিশ আর মধুসূদন, শহরের দুই মঞ্চে বছরের প্রথম আট দিন সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত নাটকের উৎসব। শহরের থিয়েটার এখন ব্র্যান্ডমনস্ক হচ্ছে, গ্রুপ ছাপিয়ে নায়কও যেন কোথাও উঁকি মারছে, সেই বার্তা দিতেই কি প্রসেনজিৎকে দিয়ে সূচনা করানোর পরিকল্পনা? “একেবারেই না।” স্পষ্ট জবাব সুরজিতের। অবিশ্যি ইতিহাস বলছে, মঞ্চে বহু অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ, তথাকথিত বাণিজ্যিক থিয়েটারে। ‘ছোট্ট জিজ্ঞাসা’রও আগে অবনমহলে শ্যামল সেনের নির্দেশনায় ‘রামের সুমতি’র রাম হন। পরে পিএলটি-র মৃণাল ঘোষের সঙ্গে কাজ করেছেন। তবে মঞ্চে তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় কাজ বোধহয় স্টার থিয়েটারে বহু রজনী চলা মহেন্দ্র গুপ্তের ‘সমাধান’। এ থেকেই সিনেমা হয়েছিল ‘দাদু’। সিনেমার ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোলটা নাটকে করেন প্রসেনজিৎ। স্মৃতিতে ডুব দিচ্ছিলেন সুরজিৎ। তবে এর আগে গ্রুপ থিয়েটারের মঞ্চে টলি-তারকা? না, বহু খুঁজেও এমন তথ্য পাওয়া গেল না।

শতবর্ষে
ফাদার রবের আঁতোয়ান (১৯১৪-১৯৮১) ছিলেন বেলজিয়ামের জেসুইট সন্ন্যাসী। গ্রিক-ল্যাটিন-ফরাসির সঙ্গে সংস্কৃতে পণ্ডিত, বাংলাতেও সমান ব্যুৎপত্তি। ভাই ফাদার ফালোঁর (১৯১২-১৯৮৫) সঙ্গে থাকতেন প্রিন্স গোলাম মহম্মদ রোডে মিশনের নিজস্ব দোতলা বাড়ি ‘শান্তি ভবন’-এ। স্বল্পভাষী আঁতোয়ান চমৎকার গাইতেন রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মসঙ্গীত, সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় গান লিখে সুরও দিতেন, শেষ জীবনে ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। আমৃত্যু যাদবপুরে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপনায় জড়িয়েছিলেন, ব্যস্ত থাকতেন বাল্মীকি-রামায়ণ অনুবাদে, ‘রঘুবংশ’ও অনুবাদ করেছিলেন। গ্রিক ট্র্যাজেডি, সংস্কৃত নাটক, ভরত ও অ্যারিস্টটল, এবং ইন্দো-ইউরোপীয় মহাকাব্য ছিল তাঁর চর্চার বিষয়। তাঁর রাম এবং চারণেরা: রামায়ণে এপিকস্মৃতি (পত্রলেখা) বইটির সুবীর রায়চৌধুরী-কৃত অনুবাদ বেরিয়েছিল ‘হীনযান’ পত্রিকায়। কালো ব্যাকব্রাশ করা চুল, কালো চশমার পিছনে তেজি চাউনি কলকাতার হারানো সম্পদ এই মানুষটির (সঙ্গের ছবি) ও ফাদার ফালোঁর ‘১০০ স্মরণে’ এবং ‘ফাদার দ্যতিয়েনের ৮৯তম জন্মদিনে’ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘মিলন মঞ্জিল’, মিলনবীথি-তে (বি/৯৬ সুকান্তপল্লি, কেওড়াপুকুর বাজার, হরিদেবপুর, কল-৮২)। ‘বিশ শতকের বিদেশীদের বাংলা সাহিত্য’ নিয়ে বলবেন বিশ্বজ্যোতি দাশগুপ্ত সুরঞ্জন মিদ্দে, বিশেষ অতিথি তাপস বসু, সভাপতি বিনয়ভূষণ রায়। ৩০ ডিসেম্বর রবিবার বিকেল ৪টেয়।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.