বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে প্রায় তিন মাস আগে। দোতলা ভবনের চতুর্দিকে গজিয়ে উঠেছে আগাছা। এখানে-ওখানে সাপখোপের আস্তানা। ভবনের কোনও দেওয়াল থেকে ঝরে পড়ছে পলেস্তারা, কোথাও ভেঙে পড়ছে ছাদের চাঙড়।
শ্রমিকদের পরিবারের স্বার্থে ষাটের দশকে ৭ বিঘা জমিতে চন্দননগরের গৌরহাটিতে শ্রম দফতর ‘আদর্শ শ্রমিক মঙ্গল কেন্দ্র’ নামে গড়ে তুলেছিল ওই ভবন। কিন্তু ভবনটির বর্তমানে যা অবস্থা, তাতে আদৌ তাঁরা সে ভাবে উপকৃত হচ্ছেন না বলে মনে করছেন ওই এলাকার শ্রমিকেরাই। আর এই পরিস্থিতির জন্য শ্রম দফতরের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন তাঁরা। |
তবে, আশার কথা শুনিয়েছেন রাজ্য শ্রম দফতরের ডেপুটি ওয়েলফেয়ার কমিশনার মহম্মদ মহসিন। তিনি বলেন, “আদর্শ শ্রমিক মঙ্গল কেন্দ্রটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। খুব শীঘ্রই জরুরি ভিত্তিতে জঙ্গল পরিষ্কার ও ভবন সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানি এলাকার বেশ কয়েকটি জুটমিলের শ্রমিক পরিবারের মহিলাদের এই কেন্দ্রে সূচিশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় শুরু থেকেই। তা ছাড়া, ভবনে টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, ক্যারম খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। শ্রমিকদের সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্যও দোতলাটি ভাড়া দেওয়া হত। কিন্তু বিদ্যুতের বিল বাকি থেকে যাওয়ায় প্রায় তিন মাস আগে ওই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। ফলে, হল ভাড়া দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হচ্ছে শ্রম দফতর। তা ছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রশিক্ষণ নিতে আসা শ্রমিক পরিবারের মহিলারাও। কেননা, সন্ধ্যার আগেই তাঁদের প্রশিক্ষণের কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে।
ইনচার্জ মঞ্জুশ্রী সরকার বলেন, “আমরা সমস্যার কথা শ্রম দফতরে জানিয়েছি। বিল দিতে না পারার জন্যই বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা থেকে হলের সংস্কার সবই প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দা এবং চন্দননগর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার স্বরূপ ঘোষ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রটি অবহেলার শিকার। সংশ্লিষ্ট দফতরে দরবার করেও কোনও ফল হচ্ছে না।” |