|
|
|
|
গুলিতে হত সাংবাদিক |
শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে মণিপুর উত্তাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
বনধ সমর্থক ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে ইম্ফলে এক চিত্র-সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেন। অনির্দিষ্ট কাল বন্ধের দ্বিতীয় দিনে রাজ্যের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। পুলিশের লাঠি-গুলিতে আহত বহু। পুড়েছে অজস্র গাড়ি। পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলে জারি হয়েছে কার্ফু। এর মধ্যেই, অভিনেত্রী মোমোকার শ্লীলতাহানির ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নিজেদের ‘লেফটেন্যান্ট কর্নেল’ লিভিংস্টোনের হয়ে সওয়াল করে বিষয়টি জটিল করে তুলেছে নাগা জঙ্গি গোষ্ঠী এনএসসিএন (আইএম)।
অভিনেত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার জেরে সুমং লীলা পরিষদ, মণিপুর ফিল্ম ফোরাম ও অন্যান্য নাগরিক সংগঠনের
|
নিহত দ্বিজমণি।
—নিজস্ব চিত্র |
যৌথ উদ্যোগে গত কাল থেকেই অনির্দিষ্টকালীন বনধ চলছে রাজ্যে। গত কাল রাত ৯টা নাগাদ দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ। কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতিতে থাকা আই-এম গোষ্ঠীর অভিযুক্ত জঙ্গিনেতাকে গ্রেফতার করার বিষয়ে কেন্দ্রের সবুজ সংকেত মিললেও, চান্দেলে আই-এম বাহিনীর শিবিরে লিভিংস্টোনের সন্ধান পায়নি আসাম রাইফেল্স। আশপাশের গ্রামেও চলছে তল্লাশি। জঙ্গি শিবিরের তরফে জানানো হয়, ঘটনার পরই লিভিংস্টোন ও তাঁর দুই সঙ্গী গা ঢাকা দিয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর যে অনুষ্ঠানে লিভিংস্টোন বন্দুকের মুখে মোমোকোর শ্লীলতাহানি করে, সেখানে প্রহরার দায়িত্বে থাকা এক এএসআই, ৫ কনস্টেবল এবং ৫ জন গ্রামরক্ষী বাহিনীর জওয়ানকে বরখাস্ত করেছে রাজ্য সরকার। এর পরে ক্রিসমাসের জন্য ২৬ তারিখ পর্যন্ত বনধ স্থগিত করেছে মণিপুর ফিল্ম ফোরাম। মণিপুরি নাগারাও নাগা জঙ্গিদের ভূমিকার প্রতিবাদে মেইতেইদের প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। কিন্তু, এনএসসিএন (আই এম) বিবৃতি পাঠিয়ে দাবি করে, ‘নাগাদের প্রতি কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করার জন্যই মোমোকোকে প্রহার করেন লিভিংস্টোন।’ এমনকী আই-এম বলে, ‘নাগাদের বিরুদ্ধে জনগণকে খেপানোর জন্যই সামান্য ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভ করা হচ্ছে।’ এতে জনরোষ আরও বেড়েছে। অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে আই-এম গোষ্ঠী জানিয়েছে, লিভিংস্টোন অপরাধ করে থাকলে জঙ্গি সংগঠনের সংবিধান অনুযায়ী তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। ঘটনার পরে ৫ দিন কেটে গেলেও পুলিশ লিভিংস্টোনকে ধরতে না পারায় আজ আন্দোলন তীব্রতর হয়। পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলের রাস্তা অবরোধ করে বেশ কিছু গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। আক্রান্ত হয় পুলিশ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, বড়দিনের বাজার করতে ইম্ফলে আসা পার্বত্য মণিপুরের বাসিন্দা নাগাদের কনভয় করে ইম্ফল থেকে বার করে আনা হবে। বেলা ১টা নাগাদ এমনই একটি কনভয়ে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। একটি ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তখনই পুলিশ গুলি চালাতে থাকে। দূরদর্শনের চিত্রগ্রাহক খোয়াইরাকপাম দ্বিজমণি (৩২)-র বুকে গুলি লাগে। রিমস হাসপাতালে মারা যান তিনি। অল্পের জন্য বেঁচে যান অন্য দুই সাংবাদিক। দ্বিজমণির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় হাঙ্গামা আরও বাড়ে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ার পাশাপাশি গুলিও চালালে আরও কয়েক জন জখম হন। ফলে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। |
|
|
|
|
|