উত্তর ২৪ পরগনায় গৌতম দেব যা করে দেখাচ্ছেন, তার অনুসরণ করতে চাইছে কলকাতা জেলা সিপিএম-ও। দলের বড় কর্মসূচিকে সামনে রেখে উত্তর ২৪ পরগনার ঢঙেই এ বার শহরবাসীর বাড়ি বাড়ি যাবেন কলকাতার সিপিএম কর্মীরা। সই নেবেন, প্রচারপত্র দেবেন। কলকাতায় ঝিমিয়ে-পড়া সংগঠন চাঙ্গা করতে সিপিএমের দাওয়াই আপাতত এটাই।
সম্মেলন-পর্বের পরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সব জেলা কমিটির বর্ধিত বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএম। সেইমতোই প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শনি ও রবিবার বসেছিল কলকাতা জেলা কমিটির বর্ধিত অধিবেশন। বাকি জেলাগুলির মতো কলকাতায় পঞ্চায়েত ভোট নেই। কিন্তু সম্মেলনের এক বছর পরে সংগঠনের হাল কী, তার হিসাব নেওয়াই ছিল এই বৈঠকের লক্ষ্য। শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। ঘরে বসে না-থেকে, আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দল না-চালিয়ে শহরের সিপিএম কর্মীদের বিমানবাবু বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলেই দলীয় সূত্রের খবর। সেই পরিকল্পনা সফল করতেই হাতের কাছে দৃষ্টান্ত হিসাবে উঠে আসছে উত্তর ২৪ পরগনা ‘মডেল’। জেলায় বড় জনসভা, পদযাত্রার কর্মসূচি নিয়ে তার জন্য নিবিড় প্রচার চালিয়ে সুফল পেয়েছেন গৌতমবাবুরা। আলিমুদ্দিন চাইছে, অবিলম্বে ময়দানে নামুক কলকাতা জেলা সিপিএম-ও।
১০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা জেলা সিপিএমের জনসভা রয়েছে শহরে। সেই কর্মসূচিকে সামনে রেখেই শুরু হচ্ছে নতুন উদ্যমে জনসংযোগ। রাজ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, রাজ্যের কাজের ধরন, কলকাতা পুরসভার দুর্নীতির অভিযোগ এ সব নিয়ে কলকাতার মানুষ বেশি সচেতন। অথচ তাঁদের কাছে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে গাফিলতি থেকে যাচ্ছে কলকাতার সিপিএমের তরফে। কিছু জোনাল কমিটি নিষ্ক্রিয়তার ব্যাধিতে আক্রান্ত। সময় থাকতেই সংগঠনকে গা-ঝাড়া দেওয়ার বার্তা দিতে চাইছেন বিমানবাবুরা। বৈঠকে কিছু ক্ষণের জন্য ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও।
সরকার-বিরোধী অসন্তোষ বাড়ছে দেখে কলকাতায় সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে বাম শরিক ফব-ও। তাদের সদ্যসমাপ্ত কলকাতা জেলা সম্মেলনে ঠিক হয়েছে, শ’দুয়েক তরুণকে বেছে নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন ব্রিগেড তৈরি করা হবে আন্দোলনের জন্য। বয়সজনিত কারণে কলকাতা জেলা ফব-র চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন নীহার রায়চৌধুরী। তাঁর জায়গায় এসেছেন শ্যামল কানুনগো।
|