অভিভাবকেরা দাবি করেন, স্কুল লাগোয়া ট্রান্সফর্মারটি তুলে নেওয়ার জন্য বারবার দাবি জানানো হয়েছে। কোনও ফল মেলেনি। সোহেল শেখের আগে আর এক ছাত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল। অভিভাবকদের ক্ষোভ, “আমরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পড়তে পাঠিয়েছি। দুর্ঘটনার কবলে পড়তে নয়। ট্রান্সফর্মাটি সরানো না হলে আমরা আর ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাব না।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ট্রান্সফর্মার সরানোর জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন প্রধানও বারবার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিঠি পাওয়ার পরে কাটোয়া (পূর্বচক্র) এসআই (স্কুল পরিদর্শক) অন্তরা বিশ্বাস ঘোষ ওই গ্রামে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। অভিভাবকরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন ,ট্রান্সফর্মার সরানো হলে তবেই তাঁরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন। এর পরে কাটোয়া ১ যুগ্ম বিডিও, এসআই, বিদ্যুৎকর্তারা স্কুল পরিদর্শন করেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন ট্রান্সফর্মার সরানো হবে। মাসখানেক কেটে গেলেও তা হয়নি।
এ দিকে, সামনেই স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। মিড-ডে মিল চালু করার জন্য ব্লক প্রশাসন শিক্ষকদের উপর চাপ বাড়াচ্ছিল। সে কারণে গত ৭ ডিসেম্বর থেকে স্কুলের পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় গাছতলায় শিক্ষেকেরা ক্লাস নিতে শুরু করেন। প্রধান শিক্ষকের দাবি, “এই জায়গায় স্কুল শুরু করার আগে তো বটেই, এখনও আমরা পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে ছাত্র ধরে আনছি।” সহ-শিক্ষক দীপক সিংহ বলেন, ‘‘প্রথম দিকে ২-৪ জন পড়ুয়ার দেখা মিলেছিল। এখন অবশ্য সংখ্যাটা বেড়েছে। তবে খুব একটা বেশি নয়।”
অভিভাবক বিষ্ণু সাঁতরা, অশোক সাঁতরাদের কথায়, “খোলা জায়গায় গাছের নীচে ছেলেমেয়েদের পড়ানো হচ্ছে। এই শীতে সেখানে ছেলেরা যাবে কী করে!” পড়ুয়া মন্দিরা সাঁতরা, বিজন হাজরারা বলে, “আমাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু বাড়ি থেকে না ছাড়লে কী করব।” অস্থায়ী স্কুল যেখানে হচ্ছে, সেই জায়গার মালিক ছানু মাঝি বলেন, “ওই জায়গাটা আমাদের খামার। কয়েক দিনের মধ্যে স্কুলকে স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে।”
কাটোয়া (পূর্বচক্র)-র এসআই অন্তরা ঘোষ বিশ্বাস বলেন, “অভিভাবকদের দাবির যথার্থতা রয়েছে। আমরা অস্থায়ী ভাবে স্কুল শুরু করেছি। ট্রান্সফর্মার তোলার জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কাটোয়া গ্রুপের সহকারী বাস্তুকার লাল্টু মণ্ডল বলেন, “জায়গা নির্বাচন নিয়ে সমস্যার কারণে ট্রান্সফর্মার সরাতে দেরি হচ্ছে। আশা করি, খুব দ্রুত ব্যবস্থা হয়ে যাবে।” |