কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতাল
চুরি যাওয়ার ভয়ে তোলা থাকে হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র
গ্নিনির্বাপক যন্ত্র কেনা হয়েছিল। কিন্তু চুরি যাওয়ার ভয়ে তা ঝোলানো হয়নি হাসপাতালে!
এই পরিস্থিতি কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালের। মাস আটেক আগে এই হাসপাতালে ওটি রুমের এসি-তে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে গিয়েছিল। আতঙ্কে রোগীরা বাইরে বেরিয়ে আসেন। সেই ঘটনা কোনও ভাবে সামাল দেওয়া গেলেও বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কী হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।
হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দু বিকাশ মণ্ডল। তিনি বলেন, “ছ’টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আছে। সেগুলি চুরি হওয়ার ভয়ে দেওয়ালে লাগানো হয়নি। ঠিক জায়গায় গুছিয়ে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবহারও হয়েছে।” কিন্তু এ ভাবে সিলিন্ডার গুছিয়ে রেখে বড়সড় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে মোকাবিলা করা যাবে কিনা, তার স্পষ্ট জবাব নেই কর্তৃপক্ষের কাছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমা-সহ বিভিন্ন এলাকার বহু মানুষ। যদিও পরিকাঠামো ও পরিষেবা নিয়ে আরও বিস্তর সমস্যার কথা শোনালেন তাঁরা। স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালের গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মহকুমা হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ১০০। যার তুলনায় ভর্তি হতে আসা রোগীর সংখ্যা অনেক গুণ বেশি। মেঝেতে, এখানে-ওখানে আরও ২০-৩০ জন রোগীকে সব সময়েই ভর্তি রাখতে হয় বলে জানালেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিজস্ব চিত্র
সমস্যা আছে আরও। এই মহকুমা হাসপাতালে নেই ফিজিসিয়ান, মেডিসিন, শল্য-চিকিৎসক, জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল চিকিৎসক। ব্লাড ব্যাঙ্ক এখনও চালু হয়নি। সাফাইকর্মী ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর সংখ্যা অনেক কম। ফলে মাঝে মধ্যেই আবর্জনায় ভরে যায় হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলিতে। নিকাশি ব্যবস্থা ভাল না-থাকায় বেশি বৃষ্টি হলেই জলে থই থই করে হাসপাতালের মাঠ। একটি মাত্র নলকূপ। প্রাচীর না-থাকায় রাতে দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও অবাধ বলে অভিযোগ।
হাসপাতালের পরিষেবা প্রসঙ্গে পাথরপ্রতিমা থেকে আসা নন্দ গোপাল দাস জানালেন, “আমার রোগী এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি ছিল। পেটের রোগ নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকে চিকিৎসকদের দেখা পাওয়া ছিল দুরূহ ব্যাপার। বেশির ভাগ সময় প্রাইভেট চেম্বারে ব্যস্ত থাকেন ওঁরা।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটু বিপজ্জনক রোগী দেখলেই সোজা ডায়মন্ড হারবারে ‘রেফার’ করে দেন চিকিৎসকেরা। সুন্দরবনের এই এলাকার দুঃস্থ মৎস্যজীবী মানুষ বেশি বসবাস করেন। সে ক্ষেত্রে কোনওই দুঃস্থ পরিবারের রোগীর ডায়মন্ড হারবারে স্থানান্তরিত করলে ৫০ কিলোমিটার রাস্তা যেতেই রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। অ্যাম্বুল্যান্স সময় মতো না-পাওয়ায় গাড়ি ভাড়াও গুণতে হয় রোগীর পরিবারকে।
রোগীর পরিবারের এই সব অভিযোগ মানতে নারাজ সুপার উজ্জ্বলেন্দুবাবু। তাঁর কথায়, “আরও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন আছে। তাই বলে বিপজ্জনক রোগীর চিকিৎসা সাধ্যমতো করে যদি না পারি তখনই রেফারে বাধ্য হই। সমস্যাগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.