ঝাড়গ্রামে শুরু জেলা বইমেলা
ঘোষণা ও বাস্তবের মধ্যে ফারাক রেখেই ঝাড়গ্রামে শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বইমেলা।
ঝাড়গ্রামে জেলা বইমেলা হওয়ার ফলে স্থানীয় ভাষা ও সাহিত্য গুরুত্ব পাবে বলে মনে করেছিলেন এলাকাবাসী। সাঁওতালি ভাষায় উদ্বোধনী বক্তৃতায় এমন আশ্বাস শোনালেন বিশিষ্ট সাঁওতালি সাহিত্যিক খেরওয়াল সরেনও। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সাঁওতালি ও মুণ্ডারি ভাষায় মাত্র দু’টি স্টল রয়েছে। স্থানীয় লিটল ম্যাগাজিনগুলোকেও উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে মেলাকমিটির বিরুদ্ধে।
একাদশ বর্ষের জেলা বইমেলার আয়োজক ‘স্থানীয় গ্রন্থাগার কৃত্যক’, পশ্চিম মেদিনীপুর। পরিচালনায় জেলা বইমেলা কমিটি। সহযোগিতায় রয়েছে ‘রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন’। এই মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
এ দিন বিকেলে শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে প্রদীপ জ্বালিয়ে ও পরে ফিতে কেটে মেলার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সাঁওতালি সাহিত্যিক খেরওয়াল সরেন। সাঁওতালি ভাষায় উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন তিনি। খেরওয়ালবাবু বলেন, “বই হল শিক্ষা ও প্রগতির হাতিয়ার। বইয়ের মাধ্যমেও শান্তি ও উন্নয়ন ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এ ধরনের মেলায় জঙ্গলমহলের মূলবাসীদের ভাষা ও সাহিত্যেরও প্রচার ও প্রসার ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।” প্রধান অতিথি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা বলেন, “শান্ত জঙ্গলমহলে এই মেলা কার্যত ভাষার মেলবন্ধনের মিলন মেলা। স্থানীয় ভাষা-সাহিত্যকে জানার ও শেখার সুযোগ করে দেয় এই ধরনের মেলা।” অন্যদের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমনকুমার ঘোষ, ঝাড়গ্রামের এসপি ভারতী ঘোষ, ঝাড়গ্রামের এএসপি (সদর) সুমিত কুমার, মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়, লোককবি ভবতোষ শতপথী, শিক্ষাব্রতী পরিব্রাজিকা আত্মহৃদয়া, সাহিত্যিক নলিনী বেরা প্রমুখ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসপি ভারতী ঘোষ জানান, ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও বইমেলায় একটি স্টল থাকছে। জঙ্গলমহলে আইনের শাসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পুলিশের কর্মপদ্ধতি ও জনসংযোগ সংক্রান্ত সচিত্র বিবরণ থাকবে ওই স্টলে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজ্যের গ্রন্থাগার অধিকর্তা জীবন চক্রবর্তী স্থানীয় ছোট পত্রপত্রিকা ও লিটল ম্যাগাজিনগুলির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এখান থেকেও অনেক প্রতিভাসম্পন্ন সাহিত্যিক উঠে আসেন।” আমন্ত্রিত অতিথি সাহিত্যিক অনিল ঘড়াইও “লিটল ম্যাগাজিনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়” বলে জানান। অথচ, উপেক্ষার অভিযোগেই উদ্বোধন মঞ্চের পাশে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে এ দিন নীরব প্রতিবাদ জানান কৌশিক বর্মণ, আশুতোষ রানার মতো স্থানীয় কবি-লেখকেরা। আশুতোষবাবুদের অভিযোগ, “মেলা-কর্তৃপক্ষ জেলার লিটল ম্যাগাজিনগুলিকে উপেক্ষা করেছেন। স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকদের অনেককেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কমিটিতে কবি-লেখকদের পরিবর্তে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রশাসনিক কর্মীদেরই প্রাধান্য রয়েছে।” বস্তুত, বইমেলায় এবার ৬১টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে কলকাতার কয়েকটি নামি প্রকাশনা সংস্থার স্টলও রয়েছে। তবে সাঁওতালি ও মুণ্ডারি ভাষা-সাহিত্যে মাত্র দু’টি স্টল রয়েছে। লিটল ম্যাগাজিনের জন্য ৫টি স্টল বরাদ্দ হলেও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ বসেনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.