সংক্রমণের ভয় তরুণীর রক্তে
পাঁচ দিন কেটে গিয়েছে। দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা এখনও কপালে ভাঁজ ফেলে রেখেছে চিকিৎসকদের। দু’একটি ক্ষেত্রে সামান্য উন্নতির চিহ্ন দেখা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সঙ্কট তো কাটেইনি। উপরন্তু নতুন করে সমস্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সফদরজঙ্গ হাসপাতালের চিকিৎসক বি ডি আথানি জানিয়েছেন, ওই তরুণী আজ নিজেই স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছেন। সে জন্যই তাঁকে দীর্ঘ সময় ধরে ভেন্টিলেটর থেকে সরিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। আথানি আরও জানান, ওই তরুণী এখন সচেতন অবস্থায় আছেন। নাড়ির স্পন্দনও স্বাভাবিক। রক্তে অণুচক্রিকার সংখ্যা আগের তুলনায় স্থিতিশীল। তবে এগুলি যদি ইতিবাচক দিক হয়, তা হলে চিন্তা বাড়িয়েছে বিলিরুবিন এবং শ্বেতকণিকার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। যা দেখে চিকিৎসকরা বলছেন, চূড়ান্ত আঘাতের ফলে রক্তে সংক্রমণের আশঙ্কা (সেপসিস) তৈরি হয়েছে। সে জন্য তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।
তবে তরুণী নিজেই শ্বাস নিতে পারার ফলে গত কাল রাত সাড়ে বারোটা থেকে রাত দু’টো পর্যন্ত তাঁকে ভেন্টিলেটর ছাড়াই রাখা হয়েছিল। আজ ভোর থেকে দুপুর সাড়ে তিনটে পর্যন্তও দেওয়া হয়নি ভেন্টিলেটর।
সে রাতের ভয়ঙ্কর ঘটনার পরে দেশজুড়ে যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তার প্রতি সম্মান দেখিয়েও চিকিৎসকরা আবেদন জানিয়েছেন, হাসপাতালে চত্বরটিকে এ সবের বাইরে রাখতে।
ইতিমধ্যেই তরুণীকে সাহায্য করতে প্রশাসনের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংস্থা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতও চিকিৎসায় সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দিল্লিরই একটি হাসপাতালের তরফে আজ সফদরজঙ্গ হাসপাতালে জানানো হয়েছে, ওই তরুণীর অন্ত্র প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হলে তারা সাহায্য করবে।
সেই রাতে তরুণীর সঙ্গে যে পুরুষ বন্ধু ছিলেন, গত কাল প্রথম বারের জন্য তিনি হাসপাতালে আসেন। তরুণীর সঙ্গে দেখাও করেন। আজ তরুণীর ভাই এ কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, “ওই বন্ধুটি মিনিট পাঁচেক ছিলেন। বোনের সঙ্গে কথাও বলেন।” তরুণী যখন শোনেন যে দুষ্কৃতীরা ধরা পড়েছে, তাঁর মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

দুষ্টুদের কড়া শাস্তি দিন, প্রণবের কাছে ছোটরাও
প্রতিবাদের মঞ্চ

ধর্ষণের প্রতিবাদে পথনাটিকা রাজধানীতে। ছবি: দেবস্মিতা চক্রবর্তী।
সারা ভারত ফুঁসছে। পিছিয়ে নেই ছোটরাও। ওদের মনকেও নাড়া দিয়েছে দিল্লিতে এক দিদির ভয়ানক অভিজ্ঞতা। তাই ছোট শিশুরাও দল বেঁধে শুক্রবার হাজির হয়েছিল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে। দিয়ে এসেছে তাদের দাবিসনদ, “উপযুক্ত শাস্তি দিন ওই দুষ্টু লোকগুলোকে।” রাজধানীর বুকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে চোখের জল সামলাতে পারেননি জয়া বচ্চন। ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলি তো ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে ছেয়ে গিয়েছে। কচিকাঁচারাও বুঝছে, ভয়ঙ্কর এক অন্যায় হয়েছে, ভাবী এক ডাক্তার দিদির উপরে। চিঠিতে তারা লিখেছে, “আশা করি আপনি এবং ভারত সরকার ওই দুষ্টু লোকগুলোকে উপযুক্ত শাস্তি দেবেন। আমরা, শিশুরা এই ঘটনায় খুবই দুঃখ পেয়েছি। আমাদের দিদির সঙ্গে ওরা যেটা করেছে তার জন্য আমরা চাই দুষ্টু লোকগুলোর ফাঁসি দেওয়া হোক।” অন্য দিকে দিল্লির শিশু অধিকার সংক্রান্ত এক সংগঠনের মাধ্যমে আর এক দল শিশুও চিঠি পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে। তাদের দাবি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এমন অপরাধে আইন আরও কঠোর করারও দাবি জানিয়েছে তারা।

ডাক্তারদের আবেদন
দিল্লির বিক্ষোভকারীদের প্রতি সম্মান দেখিয়েও ডাক্তাররা এ দিন আবেদন জানান, হাসপাতালে চত্বরটিকে এ সবের বাইরে রাখতে। একই সঙ্গে তাঁরা বলেন, তরুণীর বাবা-মাও একই অনুরোধ করছেন। ডাক্তারদের আরও আর্জি, ওঁদেরও এর মধ্যে আনবেন না। তা হলে ওঁরা মেয়ের কাছে বেশি সময় দিতে পারবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.