ধৃত তিন
মঙ্গলকোটে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, জখম ৮
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বোমা-গুলিতে ফের অশান্ত হল মঙ্গলকোটের আওগ্রাম। শুক্রবার সকালের ঘটনা। এক মহিলা-সহ তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এক বালিকা-সহ জখমের সংখ্যা মোট আট। ওই বালিকার পায়ে বোমার স্প্লিন্টার লেগেছে। কাটোয়ার সিআই শচীন্দ্রনাথ পুড়িয়ার নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গুলিবিদ্ধদের বর্ধমানের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দুই গোষ্ঠীর দুই নেতা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম জাহিরুল শেখ, মহম্মদ সাহাবুদ্দিন ও মুস্তাকিন শেখ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত দেড় বছরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে আওগ্রামে বারবার সংঘর্ষ হয়েছে। এই গ্রামের একটি গোষ্ঠীর নেতা সাহাবুদ্দিন শেখ। অন্য দিকে রয়েছে জাহিরুল মল্লিক। গ্রামে কারা নেতৃত্ব দেবে, সেই নিয়ে ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বারবার সংঘর্ষ হয়েছে। প্রায় আট মাস আগে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে সাহাবুদ্দিনরা গ্রামছাড়া ছিলেন। তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যস্থতায় ওই দুই গোষ্ঠী গত পাঁচ মাস ধরে গ্রামেই থাকছিলেন। পুলিশ জানায়, মঙ্গলকোটের লাখুরিয়া পঞ্চায়েত এলাকায় আজাদ মুন্সী ও সাইফুল শেখের গোষ্ঠীর মধ্যে ‘দূরত্ব’ বাড়ার প্রভাব আওগ্রামেরও পড়েছে। আজাদ মুন্সীর ‘ঘনিষ্ঠ’ জাহিরুল। স্বাভাবিক নিয়মে সাইফুলরা সাহাবুদ্দিনের পাশে রয়েছে।
গুলিতে জখম। —নিজস্ব চিত্র।
কয়েক দিন আগে কল্যাণপুরে সংঘর্ষের সময় সাইফুলের বিরুদ্ধে ‘লড়াই’ করেছিল জাহিরুল ও তার দলবল।
পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার পরে মঙ্গলকোট থানার সামনে সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে জাহিরুল গোষ্ঠীর লোকজনের বচসা হয়। সাহাবুদ্দিন গোষ্ঠীর অভিযোগ, জাহিরুলরা ভয় দেখিয়ে ধান লুঠ ও তোলা আদায় করে। তাদের বাড়ির লোকের কাছে তোলা চেয়েছিল। তোলা না দেওয়ায় শুক্রবার সকালে গ্রামে হামলা চালায়। সাহাবুদ্দিনের ভাই তারিকুদ্দিন শেখ ও কাকা হাসেম শেখের পায়ে গুলি লাগে। তারা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তারিকুদ্দিন শেখ ও হাসেম শেখের অভিযোগ, “আমরা সকালে খামার বাড়ির সামনে ধান বিক্রি করছিলাম। সেই সময় জাহিরুলরা বোমা মারতে মারতে এসে গুলি চালায়। অথচ দু’পক্ষই তৃণমূল সমর্থক।”
পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষই গ্রামের ভিতরে অন্তত ৫০টি বোমা ফাটিয়েছে ও প্রায় ১০-১২ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে। জাহিরুল গোষ্ঠীর অভিযোগ, সাহাবুদ্দিনরা তৃণমূল হলেও সিপিএম ‘ঘনিষ্ঠ’। তাই তারা দলীয় দফতরে আগুন লাগিয়ে দেয় ও পতাকা ছিঁড়ে যায়। জাহিরুল শেখের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার রাতে ওরা পতাকা ছেঁড়ে। দলীয় দফতরে আগুন লাগায়। শুক্রবার সকালে তা দেখার পরে আমরা প্রতিবাদ করতেই সাহাবুদ্দিনরা বোমা-গুলি নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। তাতে এক মহিলা জখম হন।” পুলিশ জানিয়েছে, জাহিরুলের বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক দুষ্কর্মের অভিযোগ রয়েছে। এই জাহিরুলই কাটোয়া মহকুমা আদালতের বিচারকের কাছে মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্কর সরকারের বিরুদ্ধে লকআপের ভিতর তাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল।
সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক দুর্যোধন সর বলেন, “সরকারি অর্থ নয়ছয়, তোলাবাজি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে গোলাগুলি চলেছে।” তৃণমূল অবশ্য এই ঘটনাকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলতে রাজি নয়। দলের মঙ্গলকোট ব্লকের সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী বলেন, “ধান কাটা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও দ্বন্দ্ব নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.