রাজ্যে এখনও প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার শিশু শিক্ষার বাইরে রয়ে গিয়েছে। আর বাঁকুড়া জেলায় সংখ্যাটা প্রায় চার হাজার। খোদ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যই এ কথা জানালেন। বুধবার বাঁকুড়া শহরের রবীন্দ্রভবনে এক অনুষ্ঠানে তাঁর স্বীকারোক্তি, “সারা রাজ্যে এখনও প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার শিশু শিক্ষার বাইরে রয়ে গিয়েছে। এই জেলায় সেই সংখ্যাটা প্রায় ৪ হাজারের মতো। প্রত্যেকটি শিশুকে স্কুলে আনতেই হবে।” অনুষ্ঠানে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে শিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, এমন শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। ব্রাত্যবাবু বলেন, “প্রশিক্ষণ না নেওয়া প্রত্যেক প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষিত করা বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৪ সালের মধ্যেই সেই কাজ করব আমরা।
মন্ত্রী জানান, রাজ্যে মোট ৭৫ হাজার শিক্ষক রয়েছেন যারা প্রশিক্ষণ পাননি। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যে ভাবেই হোক তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। গোটা রাজ্যজুড়েই তাঁরা প্রশিক্ষণ শিবির করছেন। মঞ্চে মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিরা। ছিলেন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মৌমিতা বসু-সহ অনেক আধিকারিক। মৌমিতাদেবী বলেন, “শীঘ্রই বাঁকুড়া জেলায় চাইল্ড রেজিস্ট্রার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সের শিশুদের স্কুলের গণ্ডির মধ্যে নিয়ে আসতেই এই কাজ। প্রত্যেক শিশুর খুঁটিনাটি তথ্য সেখানে থাকবে।” |
এ দিন দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী সোনামুখীর বিধানচন্দ্র বয়েজ হাইস্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। সেখানে তিনি রাজ্যকে দেশের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা সব রকম ভাবে আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে থাকুন। পড়ানো আপনাদের কাজ। সংগঠন পরে।” মন্ত্রী জানান, প্রি-প্রাইমারি থেকেও দশম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিল দিতে চায় রাজ্য সরকার। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁরা দাবি জানাবেন। তিনি আরও জানান, বাঁকুড়া জেলায় ১১টি মডেল স্কুল ও ৯টি স্কুলে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হবে। স্থানীয় বিধায়ক দিপালি সাহা তাঁর কাছে নবাসন দেরিয়াপুকুর প্রাথমিক স্কুলটিকে মাধ্যমিকে এবং কোচডি সুকান্ত বিদ্যামন্দিরকে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছিলেন। মন্ত্রী এ ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম অতিথি ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ সুকুমার রায়ের ‘সৎপাত্র’ কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। সোনালিদি এত ভাল আবৃত্তি করেন, জানতাম না। তবে একটা লাইন বাদ থেকে গিয়েছে।” তবে ইদানিং কালে রাজ্যের শাসকদলের নেতা থেকে মন্ত্রীদের অনুষ্ঠানে সিপিএমের নেতা থেকে জনপ্রতিনিধিদের সে ভাবে দেখা যায়নি। এ দিন সোনামুখীতে তার ব্যতিক্রম দেখলেন বাসিন্দারা। তৃণমূল বিধায়ক শুভাশিস বটব্যাল, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়দের পাশে ছিলেন সোনামুখীর পুরপ্রধান সিপিএমের কুশল বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অদীপ রায়ও। |