বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা এখনই মেটাতে সক্রিয় ভারত
তিস্তা চুক্তি আটকে গেলেও বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল-সীমান্ত চুক্তিটির দ্রুত বাস্তবায়ন চাইছে ভারত সরকার। এ জন্য মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি, এমনকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলতে আগামী মাসে ঢাকায় যাচ্ছেন খুরশিদ। সলমনের আগেই যাচ্ছেন বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই। আর বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি ও জঙ্গি দমন নিয়ে আলোচনার জন্য জানুয়ারির শেষে ঢাকা যাওয়ার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের।
সোমবার সাউথ ব্লকে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি নিয়ে বৈঠকে বসেন সলমন। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে দিন দিল্লিতে রয়েছেন, এই যুক্তিতে তৃণমূলের কোনও সাংসদ এই বৈঠকে যাননি।
তবে লোকসভায় বিরোধী দলনেত্রী বিজেপির সুষমা স্বরাজ ও অন্য দলের প্রতিনিধিরা বৈঠকে হাজির ছিলেন। এই চুক্তিতে ভারত কী ভাবে লাভবান হবে, সুষমাকে তা বোঝানোর চেষ্টা করেন সলমন। তবে তৃণমূল ও বিজেপি, দু’পক্ষই এই সীমান্ত চুক্তির বিরোধী।
সলমন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত চুক্তিটি প্রথমে মন্ত্রিসভায় পাশ করাতে হবে। এর পর সংসদের দুই সভাতেই এটিকে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ করাতে হবে। কিন্তু যে হেতু ছিটমহল হস্তান্তর এবং জমি আদানপ্রদানের বিষয়টিতে সব থেকে বেশি প্রাসঙ্গিক পশ্চিমবঙ্গ, তাই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কেন্দ্র বারবার আলোচনা করছে। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র বলছে, মমতার সঙ্গে সলমনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। তাই ঢাকা সফরের আগে তিনি মমতার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় আগ্রহী। আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমারও সম্প্রতি ঢাকা ঘুরে এসেছেন। সংসদে মমতার সঙ্গে দেখা করে অশ্বিনী বলেছেন, বাংলাদেশের সব মানুষ তিস্তা চুক্তি ও সীমান্ত চুক্তিতে তাঁর সমর্থনের আশায় দিন গুনছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্র বলছে, রাজ্য সরকার এর আগে আমলা পর্যায়ে চিঠি দিয়ে এই চুক্তি রূপায়ণের ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিবাদ সৃষ্টির পরে মমতা স্থল-সীমান্ত চুক্তি নিয়েও বেঁকে বসেন। তৃণমূলের যুক্তি, সীমান্ত চুক্তির ফলে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র বদলে যাবে। অনেক বেশি জমি হারাবে রাজ্য। সলমন তথা বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ১১১টি ছিটমহল ভারত বাংলাদেশকে দেবে এবং ৫১টি ভারত পাবে। এ ক্ষেত্রে ছিটমহলের প্রাপ্য সংখ্যা বাংলাদেশের বেশি হলেও এই জমিগুলিতে এখন রাজ্য সরকারের কোনও মালিকানা, এমনকী প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নেই। হস্তান্তর হলে যে ৫১টি ছিটমহলে ভারত পাবে, তার জমির পরিমাণ প্রায় ৭,১১০ একর। আর ‘অ্যাডভার্স পজেশন’-এর জমি ভারত পাবে ২৭৭৭.০৩৮ একর, পশ্চিমবঙ্গ পাবে প্রায় ২৩৯৮.০৫ একর।
১৯৪৭ সাল থেকে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত মীমাংসার চেষ্টা হয়েছে। ১৯৫৮ সালে জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। তার পরে বাংলাদেশ গঠনের পরেও দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে স্থলসীমন্ত নির্ধারণের চেষ্টা বারবার হয়েছে। কিন্তু সবই অমীমাংসিত থেকে গিয়েছে। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষর হয় সীমান্ত মীমাংসা প্রটোকল। এত দিন পর সেটিকেই চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে। সলমনের প্রশ্ন, সীমান্ত বিবাদ মীমাংসার একটি সুযোগ পাওয়া গেলে ভারত কেন সেটিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে না? বিশেষত, এলাকার সাধারণ মানুষও এখন সেটি চাইছেন। বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে, এই চুক্তি বাস্তবায়নে যত দেরি হবে, পরিস্থিতি ততই প্রতিকূল হবে।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন। প্রায় এক ডজন জঙ্গিকে ভারতের হাতে নিঃশব্দে তুলে দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত সমস্যা মিটলে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ লাগোয়া অঞ্চল অনেকটাই নিরাপদ হবে। আর এই কারণেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আপাতত কেন্দ্র বোঝাতে চাইছে, তিস্তা চুক্তিতে যদি আপত্তিও থাকে, সীমান্ত চুক্তিতে যেন তারা রাজি হয়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে তিনবিঘা করিডর দিয়ে দহগ্রাম ও আঙরাপোতা ছিটমহলের বাসিন্দাদের ২৪ ঘণ্টা যাতাযাতের বিষয়টি অনুমোদন করে ভারত সরকার।
ফলে বাংলাদেশের দীর্ঘকালের একটি দাবি পূরণ হয়। ছিটমহল দুটি পরিদর্শনও করেন শেখ হাসিনা। এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগও চালু হয়।
বাংলাদেশ সরকার অবশ্য ভারতের উপর চাপ দিচ্ছে, যাতে শুধু সীমান্ত চুক্তি নয়, তিস্তা চুক্তির ব্যাপারেও কেন্দ্র এখনই সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকা চাইছে, মমতার আপত্তি রেয়াত না করেই ভারতের উচিত সংসদে সীমান্ত চুক্তিটি পাশ করিয়ে নেওয়া। জোটে না থাকলেও মনমোহন সিংহ কিন্তু মমতাকে অগ্রাহ্য করে তিস্তা চুক্তি করতে রাজি নন। কারণ রাজ্যের সহযোগিতা ছাড়া কোনও চুক্তিই কার্যকর করা যাবে না।
সলমন তাই মমতার সঙ্গে আলোচনা করেই সীমান্ত চুক্তিটিতে তাঁর সমর্থন আদায়ের পথ নিয়েছেন।

পাক স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হানায় ২ দিনে হত সাত
ফের পাকিস্তানে স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে হামলা চালাল বন্দুকবাজরা। আজ এই হামলায় নিহত হয়েছেন পোলিও-প্রতিরোধ কর্মসূচির দুই কর্মী। তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা। জখম হয়েছেন ছ’জন কর্মী। কালও বন্দুকবাজদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন পোলিও-প্রতিরোধ কর্মসূচির পাঁচ মহিলা কর্মী। নিহতদের মধ্যে ১৪ বছরের একজন স্বেচ্ছাসেবীও ছিল। পোলিও-প্রতিরোধ কর্মসূচির দলটি যখন পেশোয়ার এবং করাচিতে শিশুদের পোলিও খাওয়াচ্ছিল, তখন এই হামলা হয়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের বন্দুকবাজদের হামলার শিকার হলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আজ পাকিস্তানের চারসাদ্দা, নওশেরা, পেশোয়ারে হামলা চালায় বন্দুকবাজরা। চারসাদ্দায় তারা পোলিও-প্রতিরোধ অভিযানের মহিলা সুপারভাইজারের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। নিহত হন সুপারভাইজার এবং তাঁর গাড়ির চালক। বন্দুকবাজরা অন্য মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের হুমকি দিয়েছে, পোলিও-প্রতিরোধ কর্মসূচি বন্ধ না করলে তাঁদেরও একই পরিণতি হবে।

চাভেসের শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ
ভাল নেই উগো চাভেস। ক্যানসারের কারণে চলতি মাসেরই ১১ তারিখ অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। অস্ত্রোপচারের পর এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের শিকার হলেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে তাঁর অবস্থা উদ্বেগজনক। চিকিৎসকদের পরামর্শ, আগামী কিছু দিনের জন্য সম্পূর্ণ বিশ্রাম দরকার চাভেসের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.