কালনার মেডিসিনে আসছে ডাক্তার
মেডিসিন বিভাগের হাল ফেরাতে এক জন স্থায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ করা হচ্ছে কালনা মহকুমা হাসপাতালে। মঙ্গলবার হাসপাতালে এসে এ কথা জানালেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) দিলীপ মণ্ডল। তিনি জানান, স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে এক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগ দিতে চলেছেন। তিনি আগামী বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার কাজে যোগ দেবেন। পাশাপাশি, দুই অস্থায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রাতে না-থাকার অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান দিলীপবাবু।
সম্প্রতি কালনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে জানিয়েছিলেন, মেডিসিন বিভাগের দুই ডাক্তার ডিউটি দিতে রাজি না-হওয়ায় রাতে পরিষেবা মিলবে না। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই বিভাগে শেষ দু’জন স্থায়ী চিকিৎসক ছিলেন বছর দেড়েক আগে। এক জন স্থানান্তরিত হওয়ায় ও অপর জনের মৃত্যুর পরে সমস্যার শুরু। মাস তিনেক আগে দুই চিকিৎসককে পাঠানো হলেও তাঁরা রাতে থাকতে নারাজ। ফলে, বিকেল ৫টা থেকে পরের দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত ওয়ার্ডে কোনও চিকিৎসক থাকেন না। গত সোমবার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সিএমওএইচ কালনা হাসপাতালে পৌঁছন। গোটা হাসপাতাল পরিদর্শনের পরে সুপার অভিরূপ মণ্ডল ও এসিএমওএইচ সুভাষচন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ সময়েই মেডিসিন বিভাগের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। দিলীপবাবু খোঁজ নেন, যে দুই অস্থায়ী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এই বিভাগে রয়েছেন, তাঁরা কখন আসেন ও কী ভাবে কাজ করেন, তা জানতে চান। তাঁরা কেন রাতে থাকতে চান না, তা-ও খোঁজ নেন। হাসপাতাল সুপার জানান, ওই দুই ডাক্তারকে বারবার শো-কজ করা হলেও তাঁরা রাতে থাকতে আপত্তি জানিয়েছেন। দুপুরে সিএমওএইচ হাসপাতালের ডাক্তারদের নিয়ে বৈঠক করেন। চিকিৎসকদের সরকারি নিয়ম-কানুন মেনে কাজ করতে হবে বলে জানিয়ে দেন তিনি। সিএমওএইচের সঙ্গে বৈঠকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চতুর্থ শ্রেণির কর্মী কম থাকার কারণে সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান।
বিকেলে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা সিএমওএইচের কাছে হাসপাতালের ব্যাপারে নানা অভিযোগ জানান। হাসপাতালে দালাল-রাজ, অচেনা-অজানা লোকজনের অবাধ যাতায়াত, প্রসূতিদের জন্য রাখা মাতৃযান গাড়ি অন্য কাজে ব্যবহার করা ইত্যাদি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। এ ছাড়া হাসপাতালের দ্বিতীয় গেট বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যার কথাও জানান বাসিন্দারা। অভিযোগ জানাতে যাওয়া বাসিন্দা ভোলা বাছার, শ্যামল মল্লিকদের বক্তব্য, “রাতে মেডিসিন বিভাগে ডাক্তার না-থাকার কথা আমরা সিএমওএইচকে জানিয়েছি। তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য সব সমস্যার ব্যাপারে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তা না হলে তাঁকে লিখিত ভাবে জানাতে বলেছেন।”
মেডিসিন বিভাগের সমস্যা সম্পর্কে সিএমওএইচ দিলীপবাবু বলেন, “দু’জন অস্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেনই। এক স্থায়ী চিকিৎসক আসছেন। সম্প্রতি এক জন শিশু বিশেষজ্ঞ যোগ দিয়েছেন যিনি মেডিসিন বিভাগেও পারদর্শী। আপাতত তাঁরাই পালা করে মেডিসিন বিভাগের দায়িত্ব সামলাবেন।” তবে আরও এক জন স্থায়ী চিকিৎসকের প্রয়োজন রয়েছে বলে মেনে নেন দিলীপবাবু। শীঘ্রই সে প্রয়োজন মিটবে বলে তাঁর আশ্বাস। বক্ষ, দন্ত ও চর্ম বিভাগে চিকিৎসক না-থাকা প্রসঙ্গে সিএমওএইচ জানান, মহকুমা হাসপাতালের দন্ত বিভাগে শীঘ্রই চিকিৎসক আসবেন। পরে অন্য দুই বিভাগের সমস্যাও মিটবে।”
পরিদর্শনের সময়ে সিএমওএইচের নজরে আসে, দু’শো শয্যার হাসপাতালে রোগী রয়েছেন শ’খানেক শয্যায়। রোগী কম থাকার কারণ জানতে চান তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, শীতের সময়ে রোগী কম হয়। সিএমওএইচ জানান, গত বার এই সময়ে রোগীর সংখ্যা কেমন ছিল তা তুলনা করে দেখা হবে। এ ছাড়া হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বাড়ানো ও আয়ুর্বেদিক বিভাগের কাজকর্ম নির্দিষ্ট জায়গায় করার কথাও বলেন তিনি। সুপার অভিরূপ মণ্ডল বলেন, “বৈঠকে সিএমওএইচ সকলকে সরকারি নির্দেশ মেনে চলার কথা জানিয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.