রানওয়ের সামনে মসজিদ সরাতে উদ্যোগী বিমানমন্ত্রী
লকাতা বিমানবন্দরের দ্বিতীয় রানওয়ের সামনে থেকে মসজিদ সরিয়ে ফেলার ব্যাপারে এ বার ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী হলেন বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ। এ ব্যাপারে একটি মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক ভাবে তিনি কথা বলেছেন।
অজিত সিংহ বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে মুসলিম সংগঠন দার-উল-উলুমের নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কলকাতায় মসজিদ কমিটির সঙ্গে কথা বলবেন।” কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রকের সচিব কে এন শ্রীবাস্তব বলেন, “কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে মসজিদ সরানোর বিষয়টি নিয়ে অনুকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নভেম্বরেই রাজ্য সরকার, কেন্দ্র ও মসজিদ কমিটির মধ্যে বৈঠক করার চেষ্টা হচ্ছে।”
মসজিদ কমিটির প্রধান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পক্ষপাতী। তিনি বলেন, “এ নিয়ে আলোচনায় দার-উল-উলুম এবং জমিয়েত উলেমায় হিন্দ-কেও ডাকতে হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনই কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে রানওয়ের সামনে থেকে ওই মসজিদ সরিয়ে ফেলার চেষ্টা এর আগেও বহু বার হয়েছে। কিন্তু তা সফল হয়নি। গত ডিসেম্বরে বিমান মন্ত্রকের দায়িত্ব পান অজিত সিংহ। গত এপ্রিলে কলকাতায় নতুন টার্মিনালের কাজ দেখতে আসেন অজিত সিংহ। তখন তাঁকে মসজিদের ব্যাপারে জানানো হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল বলেন, “এ বার বিমানমন্ত্রীর উদ্যোগে মনে হচ্ছে আমরা সদর্থক সাড়া পাব।”
বিমানবন্দরের সূচনা থেকেই এই মসজিদটি রানওয়ের সামনে রয়েছে। যশোহর রোডে বিরাটির কাছে বাঁকড়ায় বিমানবন্দরে ঢোকার আট নম্বর গেট। প্রতি দিন পাঁচ বার গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন সেই গেট দিয়ে ঢুকে মসজিদে নমাজ পড়েন। শুক্রবার সংখ্যাটি প্রায় একশো ছাড়িয়ে যায়। বাইরে থেকে বিমানবন্দরের অতি সুরক্ষিত এলাকায় এ ভাবে লোক ঢুকে আসা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাই, আট নম্বর গেট থেকে মসজিদ পর্যন্ত যাতায়াতের পথটি কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, মসজিদের জন্য বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। কলকাতায় দু’টি সমান্তরাল রানওয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত। প্রধান রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৬২৭ মিটার। কিন্তু, দ্বিতীয় রানওয়ের উত্তর প্রান্তে মসজিদ থাকায় সেটি ২ হাজার ৮৩৯ মিটারের বেশি বাড়ানো সম্ভব হয়নি। সে দিক থেকে বিমান যখন নামে, তখন দুর্ঘটনার ভয়ে রানওয়ের অনেকটা অংশ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রধান রানওয়ে মাঝেমধ্যেই বন্ধ থাকায় দ্বিতীয় রানওয়ে দিয়ে বিমান ওঠানামা করে। কিন্তু তার দৈর্ঘ্য কম থাকায় এয়ারবাস ৩৩০, বোয়িং ৭৪৭-এর মতো বড় বিমান সেই রানওয়ে দিয়ে ওঠানামা করতে পারে না। মসজিদ সরিয়ে দ্বিতীয় রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ালে সমস্যা আর থাকবে না। বেদপ্রকাশ বলেন, “দু’টি রানওয়ের দৈর্ঘ্য সমান হলে এক সঙ্গে দু’টি রানওয়ে থেকে বড় বিমান ওঠানামা করতে পারবে।”
বিমানবন্দরের অফিসারদের মতে, মসজিদ যদি সরিয়ে ফেলা যায় তা হলে দ্বিতীয় রানওয়ে যেমন উত্তর প্রান্তে বাড়ানো যাবে, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্যাক্সি-ওয়ে (রানওয়ে পৌঁছোনর রাস্তা)-র দৈর্ঘ্যও বাড়িয়ে দেওয়া যাবে। তখন দু’টি রানওয়ে থেকেই ঘণ্টায় তুলনায় বেশি বিমান ওঠানামা করতে সক্ষম হবে। আগামী কয়েক বছরে এই বিমানবন্দর থেকে যাত্রী ও উড়ান সংখ্যা বাড়বে ধরে নিয়েই নতুন টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে রানওয়ে থেকেও যাতে বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারে, সে বিষয়টির উপরেও নজর রাখতে হচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। বেদপ্রকাশ বলেন, “মসজিদ ওই জায়গা থেকে সরিয়ে যশোহর রোডে বিমানবন্দরের জায়গাতেই স্থানান্তরিত করা হবে। জায়গা বেছে রাখা হয়েছে। সেখানে মসজিদ থাকলে বিমান ওঠানামায় কোনও বিঘ্ন ঘটবে না।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.