বেঁধে দেওয়া হবে কাজের সীমা
গ্রামীণ স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে হাতুড়েদের প্রশিক্ষণের প্রস্তাব
প্রথাগত প্রশিক্ষণ নেই। তবু তথাকথিত হাতুড়েরাই এখনও গ্রামীণ চিকিৎসার অন্যতম স্তম্ভ। ওই স্বাস্থ্য পরিষেবকদের বাদ দিয়ে গ্রামে চিকিৎসা পরিষেবা জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের সরাসরি গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব উঠল। আর প্রস্তাবটি এল দেশ-বিদেশের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গবেষকদের এক আলোচনাচক্রে।
কেন ওই সব স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি, রবিবার কলকাতায় ওই আলোচনাচক্রে তার ব্যাখ্যা দেন বিভিন্ন বক্তা। বক্তাদের সর্বসম্মত প্রস্তাব, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা ভারতের গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষ গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবক (হাতুড়ে ডাক্তার)-দের উপরেই নির্ভরশীল। অনেক ক্ষেত্রেই পাশ করা ডাক্তার নেই। কোথাও কোথাও কিছু এমবিবিএস থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তাঁদের সংখ্যা নগণ্য। গ্রামবাসীরা রাতবিরেতে সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকের বদলে হাতের কাছে পান হাতুড়েদেরই। ওই স্বাস্থ্য পরিষেবকদের উপরে গ্রামের সাধারণ মানুষের নির্ভরতা এতটাই বেশি যে, তাঁদের বাদ দিয়ে সেখানে চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া প্রায় অসম্ভব। কিন্তু তাঁদের এই পেশা সরকার-স্বীকৃত নয়। বক্তারা বলেন, মূল চিকিৎসার দায়িত্ব না-দিলেও প্রশিক্ষণ দিয়ে ওই হাতুড়েদের প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়াই যায়। সে-ক্ষেত্রে পরিষ্কার ভাবে বলে দেওয়া হবে, চিকিৎসার প্রাথমিক পর্বে তাঁদের দায়িত্ব ঠিক কতটা।
পশ্চিমবঙ্গ লিভার ফাউন্ডেশন এবং আমেরিকার ব্রিস্টল মায়ার স্কুইব ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ দিনের আলোচনাচক্রে যে-বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে, তা হল, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা দেশে হাতুড়ে বা স্বাস্থ্য পরিষেবকেরাই গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। বক্তাদের অনেকে মন্তব্য করেন, গ্রামের মানুষের কাছে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের চেয়ে ওই স্বাস্থ্য পরিষেবকদের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি। তাঁদের বক্তব্য, ওই স্বাস্থ্য পরিষেবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জনস্বাস্থ্যের কাজে লাগানো গেলে গ্রামবাসীদের উপকার হবে। লিভার ফাউন্ডেশন ২০০৭ সালে বীরভূম জেলায় ওই স্বাস্থ্য পরিবেষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করেছিল।
ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অভিজিৎ চৌধুরী জানান, তাঁরা এ বার সারা রাজ্যেই এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চান।
ওই মুখপাত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত তাঁদের সংগঠন মোট ৭৯০ জন গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ওই প্রশিক্ষিতদের মধ্যে আছেন ৬০ জন মহিলাও। অভিজিৎবাবু বলেন, “আমরা ওই সব মানুষকে (হাতুড়েদের) সমাজ ও চিকিৎসার কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।” পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, সেই সঙ্গে ভারতের অন্যান্য প্রান্তে আরও দু’তিনটি সংগঠন ওই স্বাস্থ্য পরিষেবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে এ দিনের আলোচনাচক্রে জানানো হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, বরুণ কাঞ্জিলাল, দিলীপ ঘোষ, মীনাক্ষী গৌতম, কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, অরিজিতা দত্ত, অমরজিত সিংহ, সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.