আরপিএফের বিরুদ্ধে নালিশ
গ্রেফতারের পরে মনোরোগীর হাজতবাস
‘লেডিজ স্পেশাল’-এ ওঠার অভিযোগে হালিশহরের মানসিক অবসাদগ্রস্ত এক যুবককে গত ২ নভেম্বর গ্রেফতার করেছিল আরপিএফ। দশ দিন তাঁকে হাজতবাস করতে হয়। কোনও খবরই পাননি তাঁরা, এমনটাই দাবি যুবকের বাড়ির লোকজনের। ‘অশুভ’ কিছুর আশঙ্কায় তাঁদের রাতের ঘুম উবে গিয়েছিল। ১০ দিন পরে যুবক জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে আসার পরে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কি লঘু পাপে গুরু দণ্ড হল না!” এক যুবকের সঙ্গে আরপিএফের ‘অমানবিক’ আচরণ এবং অসহযোগিতার অভিযোগেও সরব হয়েছেন তাঁরা।
হালিশহরের পণ্ডিতপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দত্ত নামে ওই যুবক বলেন, “ভুল করে শাস্তি পেয়েছি। আরপিএফ প্রথমে আমার কাছে ৬০০ টাকা চায়। বলেছিলাম, বাড়িতে ফোন করতে দিন। টাকা আনিয়ে দিচ্ছি। পাত্তাই দিল না। ফোনও করতে দিল না।” জেলে অন্য কয়েদিরা তাঁর উপরে নির্যাতন চালায় বলেও অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বনাথ।
আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাউকে গ্রেফতার করার পরেই তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়াটাই নিয়ম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কেন তা হয়নি, সে ব্যাপারে কোনও উত্তর মেলেনি শিয়ালদহ আরপিএফ থেকে। শিয়ালদহ আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট আর কে তিওয়ারি অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কাছে এ রকম কোনও অভিযোগ না এলেও ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। ওঁরা যদি অভিযোগ জানান, নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।”
বাড়ি ফিরে বাবা-মায়ের সঙ্গে। ছবি: বিতান ভট্টাচার্য।
বছর ছত্রিশের বিশ্বনাথ বালিগঞ্জের একটি খাবারের দোকানে কাজ করেন। গত ২ নভেম্বর কাজে আসার পথে তিনি ‘লেডিজ স্পেশাল’ ট্রেনে উঠে পড়েন। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বিশ্বনাথকে গ্রেফতার করে আরপিএফ। ওই দিনই তাঁকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করায়। তাঁকে ১০ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। বিশ্বনাথকে পাঠানো হয় আলিপুর সংশোধনাধারে। ১০ নভেম্বর তাঁকে ফের আদালতে হাজির করানো হলে বিশ্বনাথ জামিন পান।
ওই ক’দিন নানা জায়গায় ছেলের খোঁজ করেছেন বিশ্বনাথের বাবা রঞ্জিতবাবু। গিয়েছিলেন পুলিশের কাছেও। আরপিএফের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “ছেলের অফিসের লোকজনের কথায় অসঙ্গতি থাকায় প্রথমে বিভ্রান্ত হয়ে ভেবেছিলাম ছেলেকে অপহরণ করে খুন বা পাচার করা হয়েছে। ও যে আর ফিরবে ভাবতেই পারিনি। আরপিএফ কি একটু খবর দিতে পারত না? এমন ভাবে মামলা সাজাল যে ছেলেকে ১০ দিন জেলে থাকতে হল! এমন কী অপরাধ ও করেছে!’’
আরপিএফের বিরুদ্ধে এই অসহযোগিতার অভিযোগ কোথায় জানাবেন তা এখনও জানেন না সত্তর ছুঁই ছুঁই রঞ্জিতবাবু। তাঁর কথায়, “ট্রেনে লজেন্স বেচে সংসার চালাই। আমরা কী আর পুলিশের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানাতে পারব? তাতে আদৌ কিছু হবে? পুলিশের এই রকম গাফিলতিতে কত ছেলে হারিয়ে যায়।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.