প্রকল্প রূপায়ণে বৈঠক, কাজ পাবেন বাসিন্দারাই
ভূমিক্ষয় রোধ, বৃষ্টির জল ধরতে উদ্যোগ
কদিকে ভূমিক্ষয় রোধ, বনসৃজন। অন্যদিকে, বৃষ্টির জল ধরে রেখে সেচের মানোন্নয়ন। সমান্তরাল ভাবে দু’টি ক্ষেত্রেই উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্টে’ এই কাজ হবে। প্রকল্পের কাজ কী ভাবে এগোবে, একেবারে গোড়ায় কী করতে হবে, সে সব নিয়েই বুধবার এক বৈঠক হয়েছে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষের দফতরে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১১টি সংস্থা এই প্রকল্পের কাজে যুক্ত। বৈঠকে ওই সব সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৈঠকে সংস্থাগুলিকে খসড়া প্রকল্প রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্ট জমা পড়লে দ্রুত তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। যে সব এলাকায় প্রকল্প রূপায়িত হবে, সেখানকার বাসিন্দারাই এই কাজে যুক্ত থাকবেন। ফলে, পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নের সুযোগ থাকছে।
বৈঠক শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, “জেলায় সব মিলিয়ে ১৬টি প্রকল্প হবে। প্রকল্পের সঙ্গে যে সব সংস্থা যুক্ত, তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।” বৃষ্টির জল ধরে রাখতে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্প রূপায়ণে আগেই তোড়জোড় করা হয়েছে। এ জন্য পুকুর, চেক ড্যাম প্রভৃতি তৈরি হচ্ছে। এ বার ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্টে’ও সেচের হাল ফেরানোর চেষ্টা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গড়বেতা-নয়াগ্রাম সহ সব মিলিয়ে ১৬টি জায়গায় প্রকল্পের কাজ হবে। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১৫ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হয়েছে কৃষি দফতর থেকে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “কয়েক দিনের মধ্যে একটি কর্মশালা হবে। সেখানে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হবে।” প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূমিক্ষয় রোধ, বনসৃজন প্রভৃতি কাজ হবে। সঙ্গে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য পুকুর খনন করা হবে। এমন পুকুরে মাছ চাষ করা যেতে পারে। জেলা প্রশাসনের ওই আধিকারিকের কথায়, “প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় গ্রামবাসীদের জীবনযাপনের মানও পাল্টাবে। প্রকল্পের কাজের সঙ্গে গ্রামবাসীদেরই যুক্ত করা হবে। এর ফলে, একদিকে তাঁদের কাছে রোজগারের সুযোগ আসবে। অন্য দিকে, গ্রামে স্থায়ী সম্পদ গড়ে উঠবে। যা থেকে আয়ও হতে পারে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর কমতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে চাষে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জেলায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১ হাজার ৫৪২ মিলিমিটার। পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়েই বয়ে গিয়েছে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা। কিন্তু, তা-ও বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের জল পৌঁছয় না। বৃষ্টির জল শেষমেশ নদীতে গিয়েই মেশে। এই পরিস্থিতিতে ওই জল ধরে রেখে তাকে সেচের কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। ২০০৮ সালে জেলায় ১৮৩৪.০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ২০০৯ সালে ১২৭০.০১ মিলিমিটার। ২০১০-এ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১০০১.০১ মিলিমিটার। গত বছর জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৭১৭. ০৯ মিলিমিটার। তবে চাষবাসের তেমন উন্নতি হয়নি।
জেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে মাত্র ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমিতে। স্রেফ সেচ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় প্রতি বছরই চাষের কাজ মার খায়। চাষের জল পেতে কৃষকের কালঘাম ছোটে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমেও উঁচু এলাকা থেকে গড়িয়ে আসা জল ধরে রাখার চেষ্টা হবে। যাতে বর্ষার পরও এই জল নানা কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।” এ দিন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, “প্রকল্পের জন্য সমীক্ষার কাজ হচ্ছে। গ্রুপ ফরমেশন হবে। বৈঠকে এ সব নিয়েই আলোচনা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.