গজলডোবায় নামছে পরিযায়ী
শীত এখনও জাঁকিয়ে পড়েনি। তেমন কুয়াশাও নেই। কিন্তু ওরা পৌঁছে গিয়েছে ডুয়ার্সে। গজলডোবায় তিস্তা নদীর জলে আস্তানা গেড়েছে পরিযায়ীর দল। চিন, মঙ্গোলিয়া, সাইবেরিয়ার পরিযায়ীদের ভিড়ে অপরূপ হয়ে উঠেছে তিস্তা। এক-দুই করে সে খবর পৌঁছে গিয়েছে স্থানীয় পাখি-প্রেমীদের কাছে। তাঁরাও ভিড় জমাচ্ছেন সেখানে। পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হতেই এ বার আশায় বুক বাঁধছে গজলডোবা। আর সে সব বুঝেই বৈকুণ্ঠপুর বন দফতরের তরফে গজলডোবাকে পাখিদের জন্য সংরক্ষিত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কলকাতায়। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অনিমেষ বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, “মূলত নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে গজলডোবায় পাখিরা আসতে শুরু করে। এর আগে বেশ কিছু পাখি তিস্তার চরে দিন দশেক কাটিয়ে আরও দূরে কোথায় আস্তানা তৈরি করে। নভেম্বরের শেষ থেকে মার্চের শেষ অবধি গজলডোবাতে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করে থাকে। শীতের মাঝামাঝি সময়ে কোন প্রজাতির পাখি গজলডোবায় এসেছে তার হিসেব পাওয়া যায়।”
তিস্তায় ভিন দেশি পাখি। গজলডোবায় দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।
বন দফতর সূত্রে জানা যায়, কমন পোচার্ড, ফ্যালকেটেড টিল’রা অল্প অল্প করে ইতিমধ্যেই এসে পাড়ি জমাচ্ছে তিস্তার চরে। উত্তর চিন, মঙ্গোলিয়া, সাইবেরিয়া, রাশিয়ায় এই সময় প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। সেই সব এলাকা ছেড়ে একটু উষ্ণতার জন্যে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেয় এই পাখিরা। এশিয়ার বাইরে ইউরোপ থেকেও নানা প্রজাতির পাখিই ভিড় জমায় গজলডোবায়। ভিন দেশের বিরল প্রজাতির পাখি যেমন স্মিউ, গ্লোডেন ক্লোভার্ট, গোল্ডেন আই-এর মতো পাখিরা ভিড় করে। তাদের দেখতে পাখি বিশারদেরাও সেখানে হাজির হন। রং-বেরঙের পাখিদের দেখে মুগ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। ওদলাবাড়ির দুটি পরিবেশ প্রেমী সংগঠন, নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চচার সংস্থার সম্পাদক সুজিত দাস এবং নেচার ফর সোসাইটির নাফসার আলি এই বিষয়ে বলেন, “স্থানীয় মাঝি যারা বছরের বাকি সময়ে তিস্তায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই শুধুমাত্র পর্যটকদের নৌকোয় তিস্তায় ঘুরিয়ে পাখি দেখিয়ে ভাল টাকা রোজগার করেন। বিকল্প এই আয়ের সন্ধানে আরও বেশি পরিমাণে স্থানীয় বসিন্দাদের ব্যবহার করা হলে পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণের প্রচার আরও জোরালো হবে।” বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনের ডিএফও ধর্মদেব রাই বলেন, “গজলডোবাকে পাখিদের জন্যে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার জন্যে ইতিমধ্যেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেটি গৃহীত হলে গজলডোবায় পাখি সংরক্ষণ গুরুত্ব পাবে। এর বাইরে গজলডোবায় ফি’বছর পরিবেশ প্রেমী সংগঠন গুলিকে নিয়ে বনদফতরের উদ্যোগে সচেতনতা শিবির করা হয়। চলতি মরশুমেও সচেতনতা শিবির করা হবে বলে।” স্থানীয় প্রবীর সরকার, মনু মন্ডল বলেন, “পরিযায়ীদের নিয়ে পর্যটন দফতরের তরফে যদি বেশি করে প্রচার চালানো হলে ভাল হয়। আরও বেশি পর্যটক হাজির হলে অর্থনৈতিক ভাবে উপকৃত হব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.