নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কোনওটি আকাশে উড়ছে রামধনু রং নিয়ে। কোনওটি জ্বালালে সুরেলা আওয়াজে শরীরে দোলা লাগছে। কোনওটির রঙের ছটার সঙ্গে আবার আকাশে ছড়িয়ে পড়ছে একরাশ
দুরন্ত ডলফিন।
বৈচিত্র শুধু আলো ও সুরেলা শব্দের কারসাজিতেই নয়, বৈচিত্র নামেও। যেমন আকাশে রামধনু ছড়ানো বাজির নাম রাখা হয়েছে ‘ডার্টি উলালা’। সৌজন্য: বিদ্যা বালনের ডার্টি পিকচার। কোনওটির নাম আবার ডলফিন ড্রাইভ বা কালার মির্চি। বাজি বিক্রেতাদের বক্তব্য, শব্দবাজি নিয়ে কড়া নিষেধাজ্ঞার জন্যই আলোর বাজির বৈচিত্র ক্রমশ বাড়ছে। ফানুস থেকে শুরু করে নানা রকম অভিনব আলোর বাজিতে এ বার সেজে উঠেছে শহিদ মিনারের নীচের বাজি বাজার।
বিক্রেতারা জানালেন, গত বারের তুলনায় আলোর বাজির দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। তবে দাম বেশি হলেও নানা রকমের আলোর বাজির বৈচিত্রে মজেছেন ক্রেতারা। বাজেট ছাপিয়েও এ বছর বাজি কিনছেন অনেকে। বিক্রেতারা জানান, গত বছর নিষিদ্ধ থাকা কিছু বাজি এ বার বিক্রির ছাড়পত্র পেয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে সুপার স্টার, কালার মির্চি, ডলফিন ড্রাইভ। বিক্রেতাদের দাবি, আলোর বাজিগুলো যেটুকু শব্দ করবে, তা ৯০ ডেসিবেলের মধ্যেই। |
বাজির পাশাপাশি ফানুসও ফিরে এসেছে নতুন মোড়কে। বাজি বাজারের এক স্টলের বিক্রেতা হেমন্ত পাল বলেন, “এ বার সাধারণ মানুষের আলোর বাজি সম্পর্কে উৎসাহ অনেকটাই বেড়েছে। রকেট তো বিকোচ্ছেই, সঙ্গে প্রচুর ফানুসও কিনছেন অনেকে। তবে ফানুসের দাম একটু বেশি।” বাজি বিক্রেতারা জানান, এক-একটি ফানুস একশো টাকা করে। পাঁচটা ডার্টি উলালার দাম ৪৫০ টাকা।
রবিবার সন্ধ্যায় ভিড় জমতে থাকে বাজি বাজারের বিভিন্ন দোকানে। পার্ক সার্কাস থেকে পরিবার নিয়ে বাজি কিনতে এসেছিলেন এক বিজ্ঞাপন সংস্থায় কর্মী অনির্বাণ সরকার। অনির্বাণবাবু বলেন, “প্রতি বছরই বাজি কিনতে আসি। এ বার বাজির দাম কিছুটা বেশি। তবে আলোর বাজির এত বৈচিত্র আগে কখনও দেখিনি। রকেট, রংমশালের সঙ্গে এ বার বেশ কয়েকটি নতুন ধরনের আলোর বাজিও কিনেছি।” একই মত শোভাবাজার থেকে আসা রাহুল মজুমদারের। তিনি বলেন, “শব্দবাজির অভাব অন্তত এই বাজি বাজারে টের পাচ্ছি না। এ বার অনেক নতুন নতুন আলোর বাজি পাওয়া যাচ্ছে। দাম একটু বেশি হলেও নতুন ধরনের আলোর বাজি কিনছি।”
এ বার শহরে তিনটি বাজি বাজার হওয়ায় শহিদ মিনারের নীচে স্টলের সংখ্যা গত বারের থেকে কিছু কম। ‘বড়বাজার ফায়ার ওয়ার্কস্ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক চিত্তরঞ্জন মাইতি বলেন, “এ বার এখানে স্টলের সংখ্যা ৭২। গত বারের থেকে ১০টি কম। শহিদ মিনার ছাড়াও শহরের মধ্যে আরও দু’টি বাজি বাজার হয়েছে। তাই ক্রেতারাও তিনটি বাজারে ভাগ হয়ে গিয়েছেন।” |