|
|
|
|
বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিল |
বরাদ্দ অর্থের প্রকল্প জমা দিতে পারেননি অনেকেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ অর্থে কাজ নিয়ে ঢিলেমির অভিযোগ আছেই। এখন দেখা যাচ্ছে, একাংশ বিধায়ক বরাদ্দ অর্থের প্রকল্পই জমা দিতে পারেননি। ফলে, বরাদ্দ টাকা সময়ে খরচ করা যাবে কি না, সংশয় থাকছে। এ জন্য অবশ্য ওই বিধায়করা এ জন্য জেলা প্রশাসনকে দুষছেন। তাঁদের বক্তব্য, শুরুতে প্রশাসনই জানিয়েছিল, বরাদ্দ অর্থের ৯৮ শতাংশের প্রকল্প জমা দিতে। পরে আরও ২ শতাংশের প্রকল্প জমা দিতে বলা হয়েছে। অন্য দিকে, কাজে ঢিলেমির অভিযোগ উড়িয়ে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ অর্থে যে সব কাজ চলছে, তার অগ্রগতি সন্তোষজনক। এ ক্ষেত্রে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৯ জন বিধায়ক রয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, নিজ নিজ এলাকা উন্নয়নের জন্য বিধায়কেরা এখন বছরে ৬০ লক্ষ টাকা করে পান। উন্নয়ন তহবিলেই এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই মতো ১৯ জন বিধায়কের জন্য ১১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, ১৯ জন বিধায়ক সব মিলিয়ে ৫২৩টি প্রকল্প জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে দাঁতনের বিধায়ক অরুণ মহাপাত্র ৩৪টি, কেশিয়াড়ির বিধায়ক বিরাম মান্ডি ৪৭টি, পিংলার বিধায়ক প্রবোধচন্দ্র সিংহ ৪১টি, ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলুই ৮৯টি প্রকল্প জমা দেন। তবে শুরুতে সব প্রকল্প অনুমোদন করা হয়নি। হয়েছিল ৪৮৭টি প্রকল্প। এই ৪৮৭টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯৩০ টাকা। ওই রিপোর্ট থেকেই দেখা যাচ্ছে, ১০ জন বিধায়কের পুরো বরাদ্দ অর্থে প্রকল্প জমা পড়েনি। কারও ক্ষেত্রে পড়ে থাকা অর্থের পরিমান প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। আবার কারও ক্ষেত্রে পড়ে থাকা অর্থের পরিমান প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। যেমন কেশিয়াড়ির বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার প্রকল্প জমা পড়েনি। কেশপুরের বিধায়কের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার প্রকল্প জমা পড়েনি।
কেন এই পরিস্থিতি? কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই বলেন, “এ জন্য প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। শুরুতে প্রশাসনই জানিয়েছিল, বরাদ্দ অর্থের ২ শতাংশ বাদে বাকি অর্থের প্রকল্প জমা দিতে। পরে আরও ২ শতাংশের প্রকল্প জমা দিতে বলা হয়। ইতিমধ্যে সেই প্রকল্প জমাও দিয়েছি।” পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, “বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ অর্থে যে সব কাজ হচ্ছে, তার উপর ঠিকমতো নজর রাখা হচ্ছে না। ফলে কাজের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে। বছর শেষ হতে চলল। কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত।” প্রায় একই বক্তব্য কেশিয়াড়ির বিধায়ক বিরামবাবুর। তাঁর কথায়, “আমার বিধায়ক তহবিলের কোনও অর্থই পড়ে নেই। ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার জন্যও প্রকল্প জমা দিয়ে দিয়েছি।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুরুতে ১৯ জন বিধায়কের জন্য ১১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ায় সম্প্রতি ১৩ জন বিধায়কের জন্য ৩০ লক্ষ করে মোট ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, জেলার বিধায়কেরা কেউ ৪১টি, কেউ ৪৭টি প্রকল্প জমা দিলেও গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ মাত্র ১টি প্রকল্প জমা দিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যে পালাবদলের প্রায় এক বছরের মাথায় জেলা প্রশাসনের কাছে তাঁর প্রকল্প জমা পড়ে। গড়বেতা বাসস্ট্যান্ডের উন্নয়নের জন্য তিনি অর্থ বরাদ্দ করেছেন। বরাদ্দ হয়েছে ৫৯ লক্ষ ৬১ হাজার ৬৬৬ টাকা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “প্রতিটি কাজের উপরই নজর রয়েছে। কাজের গতি সন্তোষজনক। সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।” |
|
|
 |
|
|