বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ২০টি বাঘ থাকলেও কেন তা পর্যটকদের চোখে পড়ছে না তা নিয়ে চিন্তিত বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং মেল থেকে নেমে কোচবিহারে ফেরার পথে পূর্ত দফতরের শিলিগুড়ির বাংলোয় ওই কথা জানান মন্ত্রী। তিনি জানান, ওড়িশার একটি বণ্যপ্রাণী সমীক্ষক দল বক্সায় সমীক্ষা চালিয়েছে। মল, মূত্র এবং পায়ের ছাপ সংগ্রহ সহ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চালানো ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, জঙ্গলে ২০টি বাঘ রয়েছে। তিনি বলেন, “স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকদের জঙ্গলে বাঘ নজরে পড়েনি বলেও আমি জেনেছি। আসলে অনেক বড় অরণ্য বক্সা। ভুটানের জঙ্গলের সঙ্গেও যোগ রয়েছে। সে জন্য বাঘ নজরে না ও পড়তে পারে।” কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষক দল ছাড়া গুয়াহাটির এক বেসরকারি সংস্থা বক্সায় সমীক্ষা চালিয়েছেন। তাতে ২০১০ -এর শেষে সেখানে ১৫টি বাঘ রয়েছে বলে জানা যায়। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ সমীক্ষায় সেই সংখ্যা ২০টি বলে জানা গিয়েছে। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “বক্সা ঘন জঙ্গল। অনেক বড়। সেই তুলনায় বাঘের সংখ্যা খুব কম। সে কারণে নজরে নাও পড়তে পারে।”
এ দিন বনমন্ত্রী পূর্ত দফতরের বাংলোতে বন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন বনমন্ত্রী। বাগডোগরা সহ বিভিন্ন এলাকায় হাতির হামলার ঘটনা ঘটছে। বহু জায়গায় ধান ক্ষেত হাতির হামলায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন মন্ত্রী। সে সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয় বৈঠকে। তিনি বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আধিকারিক ও কর্মীদের যোগাযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। বাসিন্দাদের হাতে বেশি করে সার্চ লাইট, পটকা দেওয়ার কথা বলেছি। পাশাপাশি আরও কী কী ভাবে হাতির হানা বন্ধ করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।” তিনি জানান, অল্প সংখ্যক কিছু হাতি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে হামলা চালায়। তাদের চিহ্নিত করে রেসকিউ সেন্টারে রাখার কথা দীর্ঘ দিন ধরে ভাবছে বন দফতর। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় সে কাজ করতে পারছে না তারা। পাশাপাশি, গরুমারা ও লাটাগুড়িতে গন্ডারের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে বাইসন ও হাতির সংখ্যাও। সে জন্য মাঝে মধ্যে বন্য জন্তুরা বাইরে বেরিয়ে আসছে বলে জানিয়ে চিন্তার কথা জানান মন্ত্রী। তিনি জানান, পর্যটকদের উৎসাহ দিতে শিলিগুড়ি সংলগ্ন সূরিয়া পার্কে কার সাফারি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বন দফতর। মহানন্দা অভয়ারণ্যের এক অংশে সুরিয়া পার্ক হওয়ায় পর্যটকরা বন্যজন্তু দেখার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। সেক্ষেত্রে জু অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অনুমতি লাগবে। মন্ত্রী বলেন, “অনুমতি চেয়ে জু অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। তারা কিছু ব্যাখ্যা চেয়েছেন। আশা করছি দ্রুত অনুমতি পাব।” |