বড় নাটমন্দির। মেঝেয় ফরাস পেতে দর্শকরা বসেছেন। তাঁদের সামনে অভিনয় হচ্ছে নাটকের।
উনিশ শতকের এই মেজাজ ফিরে আসছে আরও এক বার। শোভাবাজার নাটমন্দিরে চলছে তারই মহলা।
বাংলায় সাধারণ রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠার আগের যুগে নাট্যাভিনয়ের মূল কেন্দ্র ছিল উৎসাহী, বিত্তবান বাবুদের বসতবাড়িই। আশুতোষ দেবের বাড়ি, রামজয় বসাকের বাড়ি, চুঁচুড়ার নরোত্তম পালের বাড়ি, বেলগাছিয়া নাট্যশালা, পাথুরিয়াঘাটা রঙ্গনাট্যালয়, জোড়াসাঁকো নাট্যশালা...। শোভাবাজারও বাদ ছিল না। ১৮৬৫ সালে শোভাবাজার প্রাইভেট থিয়েট্রিক্যাল সোসাইটিতে ‘একেই কি বলে সভ্যতা’, ‘কৃষ্ণকুমারী’র মতো নাটক অভিনয় হয়েছিল বলে জানা যায়। এখন যখন আবার শোভাবাজার নাটমন্দিরে নাটকের অভিনয় শুরু হতে চলেছে, সেটা এক দিকে ইতিহাসকে মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। অন্য দিকে নাটক সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষাকেও এগিয়ে দিচ্ছে বলে দাবি করলেন পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। |
গৃহপ্রবেশ নাটকের মহড়া। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
কী রকম? দেবেশের কথায়, “মূল চ্যালেঞ্জ ছিল তিনটে। প্রথমত, জায়গাটা ঠিক কী ভাবে ব্যবহার করব। দুই, শব্দের ব্যবহার কী ভাবে হবে। তিন, আলোর নকশা কী দাঁড়াবে।” কারণ, মঞ্চে যে ভাবে উইং দিয়ে চরিত্ররা আনাগোনা করে, এখানে সেই ব্যাপারটাই ভেঙে গিয়েছে। জায়গাটার চরিত্র অনুযায়ী কখনও পিছনের দরজা দিয়ে, কখনও দোতলার সিঁড়ি বেয়ে, কখনও পাশের খিলান থেকে নাটকের চরিত্ররা ঢুকছে-বেরোচ্ছে। গোটা চত্বরটাই হয়ে উঠছে নাট্য-অঙ্গন। আওয়াজটা ধাক্কা খাচ্ছিল, প্রতিহত হচ্ছিল। সেটাকে চাপা দেওয়ার জন্য চট এবং ডিম রাখার চ্যাঙারি দিয়ে সাউন্ডপ্রুফ করার চেষ্টা হয়েছে। ডলবি ধাঁচের মেজাজ আনতে আট ট্র্যাকে শব্দবিন্যাস করছেন দ্রোণ আচার্য। ফুট লাইট, ফ্রন্ট, টপ লাইট প্রায় নেইই। এ নাটকের মূল স্তম্ভ সাইডলাইট।
দেবেশ অনেক দিন ধরেই বাঁধা মঞ্চের বাইরে পরীক্ষানিরীক্ষা করার কথা ভাবছিলেন। শোভাবাজার নাটমন্দিরটা বর্তমানে পুরসভার অধীনে। তাই সেটা ভাড়া নেওয়া গেল। আয়োজক দলের কর্ণধার বিভাস চক্রবর্তী বলছিলেন অন্নদাশঙ্কর রায়ের একটি লেখার কথা। অন্নদাশঙ্কর বিদেশে একটা প্রযোজনা দেখেছিলেন, সেখানে বসতবাড়ির মধ্যেই নাটক হচ্ছে। দর্শকরা যেন নেই, এমনি ভাবে ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। বিভাস বলেন, “অনেক দিন ইচ্ছে ছিল, ওই রকম নাটক করার। হয়নি, বাড়িও পাইনি।”
অথচ উনিশ শতকে নবীনচন্দ্র বসুর বাড়িতে ‘বিদ্যাসুন্দর’ নাটকে বৈঠকখানা থেকে পুকুর পাড় ঘুরে ঘুরে অভিনয় হত। বিদেশে এখন ‘সাইট-স্পেসিফিক নাটক’কে একটা আলাদা গোত্র হিসেবেই দেখা হয়। নাটকের জন্য নির্দিষ্ট লোকেশন ভাবা হয়। কলকাতাতেও বিভিন্ন সময়ে নানা রকম পরিসরকে ব্যবহার করার চেষ্টা হয়েছে। বিভাসবাবু মনে করতে পারেন, রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের একটি বাড়ির কিছু অংশ নিয়ে অঞ্জন দত্তের ‘ডলস হাউস’। বা, কলামন্দিরের অর্ধনির্মিত কাঠামোর উপরে ‘আমেরিকা হুররা’। বা এখন যেখানে জ্ঞান মঞ্চ, সেখানে এক সময় অর্ধনির্মিত বাড়িটা নিয়ে ব্রেশট-এর ‘মাদার কারেজ’ অভিনয় করে গিয়েছিলেন রিচার্ড শেখনার। ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়িতে ‘গওহর জান’ নাটক করেছিলেন ঈশিতা মুখোপাধ্যায়। ফ্রান্সে অরেঞ্জ শহরের রোমান থিয়েটার বা অ্যাভিগনন-এর প্রাসাদের নাট্যোৎসব তো পৃথিবীবিখ্যাত!
শোভাবাজার নাটমন্দিরে অভিনয় করার জন্য দেবেশ বেছে নিয়েছেন যে নাটক, সেটি রবীন্দ্রনাথের ‘গৃহপ্রবেশ’। ৩১ অক্টোবর থেকে অভিনয় শুরু। প্রথম লপ্তে পাঁচটি অভিনয়। নাট্যচর্চার এই গৃহ-প্রবেশ কী কী নতুন সম্ভাবনার জন্ম দেয়, দেখার অপেক্ষায় দর্শকরা।
|
আমিরকে চান অণ্ণা
নিজস্বসংবাদাদতা • মুম্বই |
আমির খানকে নিজের আন্দোলনে সামিল করতে চান অণ্ণা হজারে। জানুয়ারি থেকে নতুন ভাবে আন্দোলন শুরু করবেন তিনি। সেখানে আমিরকে চাইছেন অণ্ণা। মনে করা হচ্ছে, আমিরের ‘সত্যমেব জয়তে’-র সাফল্যের জন্যই অণ্ণার এই সিদ্ধান্ত।
|
বিয়ের পর প্রথম প্রকাশ্যে এলেন করিনা কপূর খান। ছবি: পিটিআই |