বন বাঁচাতে জোট বাঁধল প্রাক্তন চোরাশিকারিরাই
গরাতলি রেঞ্জের ধুবাবতী-ভেলাগুড়ি গ্রাম। গত বছর অবধি সবচেয়ে বেশি চোরাশিকারি এই গ্রামেই গা-ঢাকা দিয়ে থাকত। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসীরা চোরাশিকারিদের পরিবারগুলিকে একঘরে করার হুমকি দেয়। তাতে কাজ হয়। বেশ কয়েকজন শিকারি অস্ত্র জমা দিয়ে মূল স্রোতে ফেরেন। আজ সেই গ্রামেই, প্রায় ২০ জন চোরাশিকারি একজোট হয় অরণ্য সুরক্ষার উদ্দেশে একটি কমিটি গড়লেন। এ বছর কাজিরাঙার প্রায় ১৭টি গন্ডার শিকারিদের হাতে মারা পড়েছে। এর মধ্যে গত এক মাসে প্রায় মারা পড়েছে ১০টি। তিনটি ক্ষেত্রে গন্ডারকে জখম করে, জীবন্ত অবস্থাতেই তাদের খড়্গ কেটে নিয়ে যায় শিকারিরা। গত কাল প্রাক্তন শিকারিদের আলোচনাসভায় বন বাঁচানোর জন্য ৭ সদস্যের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির প্রাথমিক লক্ষ্য হবে, অন্য শিকারিদের মূল স্রোতে টেনে এনে পশু সুরক্ষার কাজে লাগানো।
তবে প্রাক্তন শিকারিদের দাবি, পেটের জন্যই তাঁরা শিকার করতেন। গন্ডার মেরে টাকা মিলত। গন্ডার বাঁচাবার বিনিময়ে তাঁরা সরকারের কাছ থেকে পুনর্বাসন চান। কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মানসে যে ভাবে প্রাক্তন চোরাশিকারিদের বনরক্ষী হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে, কাজিরাঙায় তেমনটা করা গেলে ভালই হয়। জঙ্গলের অলি-গলি, শিকারিদের আশ্রয় নেওয়ার ঘাঁটি, খড়্গ-পাচার চক্রের সঙ্গে প্রাক্তন শিকারিরা পরিচিত।
শিকার কমাতে ও শিকারিদের গ্রেফতার করার জন্য প্রাক্তন শিকারিরাই অধিকতর কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারবেন বলেও মনে করেন কাজিরাঙার কর্তারা। কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। এক বনকর্তার বক্তব্য, সরাসরি বনরক্ষীর চাকরি না হলেও, গ্রামোন্নয়ন প্রকল্প বা জেলা স্বনির্ভরতা প্রকল্পের অধীনে প্রাক্তন শিকারিদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলা সম্ভব। প্রাক্তন শিকারিরা যখন স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছে, তখন সরকারেরও উচিত তাদের দিকটা ভাবা।
এ দিকে, এই প্রয়াসের মধ্যেই ফের চোরাশিকারির দল হানা দিল কাজিরাঙায়। তবে এ বার গন্ডার মারার আগেই, বনরক্ষীরা শিকারিদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। কাজিরাঙা সূত্রে খবর, গত কাল রাতে শিকারিদের দলটি পূর্ব কাজিরাঙার আগরাতলি রেঞ্জে প্রবেশ করে। রঙামারিয়া বনশিবিরের কাছে, নৌকা নিয়ে তারা জলাশয়ে ঘাপটি মেরে ছিল। টহলদারি বনরক্ষীরা নৌকা দেখতে পেয়ে গুলি চালায়। পাল্টা গুলি চালায় শিকারিরাও। দু’পক্ষে খানিকক্ষণ গুলির লড়াইয়ের পর নৌকা ও অন্যান্য সরঞ্জাম ফেলে শিকারিরা পালায়।
আজ সকাল থেকে হাতি নিয়ে শিকারিদের সন্ধানে জঙ্গলে তল্লাশি চলছে। অন্য দিকে, আজ কামরূপের পানিখাইতি এলাকায় একটি মৃত হরিণ-সহ তিন শিকারিকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.