|
|
|
|
পুজোর টুকরো খবর
|
|
তিস্তাপাড়ের উমা |
ময়নাগুড়ির তিস্তা পাড়ের সাবেক জোরপাকড়ি বন্দর এলাকায় দেবী উমা অভাবি ঘরের মেয়ে। তাঁকে বরণ করে নিতে আয়োজনে ব্যস্ত এলাকার বাসিন্দারা। জোতদারি ব্যবস্থা নেই। জোরপাকড়িও হারিয়েছে আর্থিক কৌলিন্য। সাধ ও সাধ্যের টানাপোড়েনে দোদুল্যমান জীবন। তারই মধ্যে চলছে দেবী বরণের প্রস্তুতি। এখন বটতলা, বাজার ও টাওয়ার মোড়ে তিনটি পুজোর আয়োজন হলেও গোড়ার ছিল একটি। সেটা হত স্থানীয় হাই স্কুল মাঠে। ১৯৪৫ সালে স্থান পরিবর্তন হয়। পুজো চলে যায় বাজারে বটতলায়। এর পরে আয়োজকদের দ্বন্দ্বের কারণে পুজো কমিটির ভাঙন ধরে। একটি পুজো থেকে তিনটি পুজো চালু হয়। ওই প্রাচীন জনপদে দেবী আরাধনার সূত্রপাত কবে হয়েছিল সেটা জানার উপায় নেই। বর্তমান পুজো আয়োজকদের কয়েকজন দাবি করেন, ১৯৩৫ সালে এখানে প্রথম দেবী আরাধনার আয়োজন হয়। ওই সময় জোরপাকড়ি অবিভক্ত বাংলার একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য বন্দর হিসেবে পরিচিত ছিল। ভুটান সহ বিভিন্ন দেশের বণিকরা এখানে বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে আসতেন। স্থানীয় জোতদার ও বিদ্বজনেরা সেখানে পুজোর আয়োজন করেন সমাজের মঙ্গলের আশায়। ধন সম্পদে সমৃদ্ধ বন্দরের পুজোয় জাঁকজমকের অভাব ছিল না। উমার বাপের বাড়ি তখন ধন সম্পদে সমৃদ্ধ। কয়েক বছরের মধ্যে দেবী বরণের ওই উৎসব তিস্তা পাড়ের উৎসবে পরিণত হয়। কিন্তু দেশ ভাগের পরে জোরপাকড়ি ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। জোতদারি ব্যবস্থা বিলোপের পরে তা আরও গতি পায়। পুজো আয়োজনেও সেই দুর্দশায় ছায়া পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা পুজো আয়োজক সংস্থার কর্তা মন্টু মিশ্র বলেন, “এখন অনেক কষ্টে পুজোর আয়োজন করতে হচ্ছে। এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। তবু মানুষ সব ভুলে কয়েকটা দিন আনন্দে মেতে থাকে।”
|
ঘর সামলে পুজোয় ময়নাগুড়ির বধূরা |
চাঁদা আদায় থেকে প্রতিমার বায়না, বাজার সবই সামাল দিচ্ছেন নিজের হাতে। আয়োজনে ছেলেদের ভূমিকা নেই তেমন নয়। কিন্তু মহিলাদের উৎসাহ তাকে গৌণ করে ছেড়েছে। দিনভর সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বিকেলের পরে তাঁদের দেখা মিলছে পাড়ার এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায়। চাঁদার জন্য রসিদ হাতে ঘুরছেন। আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তাঁদের পুজো দেখার। দুটি পুজোর একটি হচ্ছে ময়নাগুড়ির সার্ক রোডের পাশে। ওই পুজোর আয়োজক ‘শ্মশান মোড় মহিলা ইউনিট’। সদস্য ৩। এঁরা প্রত্যেকে গৃহবধূ। অন্য পুজোটি হচ্ছে চূড়াভাণ্ডার হাসপাতালপাড়া এলাকায়। সেখানে ২২ জন গৃহবধূ ‘মহিলা মহল’ নামে সংস্থা গড়ে আয়োজনে নেমেছেন। |
|
|
|
|
|