সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নাটক নিয়ে আগ্রহ বাড়াতে তিন দিনের নাটক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হল। সন্দেশখালির ন্যাজাট-সংলগ্ন রবীন্দ্র নিকেতন কমিউনিটি হলে স্থানীয় সাতটি স্কুলের ছেলেমেয়েরা ৭টি নাটক মঞ্চস্থ করে। নাট্যকর্মী গোপাল অধিকারীর স্মরণে এই প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা ‘ন্যাজাট সুন্দরবন নাট্য উৎসব কমিটি।’ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে দক্ষিণ আখড়াতলা রবীন্দ্র শিক্ষা নিকেতন। তাদের মঞ্চস্থ করা নাটক ‘বিফলে মূল্য ফেরত’ দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে। দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে কালীনগর হাইস্কুলের ‘নমুনা।’ তৃতীয় উত্তর আখড়াতলা সহদেব মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউশনের নাটক ‘জন্মান্তর।’ সেরা প্রতিশ্রুতিবান অভিনেতা ‘জন্মান্তর’-এর টিঙ্কু দাস ও ভোলা দাস। সেরা অভিনেত্রী ‘নমুনা’ নাটকের ঝর্না রায়চৌধুরী। আগামী ডিসেম্বর মাসে কমিটির নাট্য উৎসবে সফল প্রতিযোগিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ হবে।
গত বৃহস্পতিবার নাট্য প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন সন্দেশখালি ১ বিডিও অনিন্দ্য গৌতম। হাজির ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমকুমার দাস-সহ বিশিষ্টজনেরা। সরবেড়িয়া চিলড্রেন্স হোমের বালিকারা ‘চেতনা’ ও বালকেরা ‘বিশপ’ নাটক দু’টি মঞ্চস্থ করে। |
সন্দেশখালি রাধারানি হাইস্কুলের মেয়েদের অভিনীত ‘উসুল’ নাটকটি দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছে। এ ছাড়াও খুলনা পিসি লাহা ইন্সটিটিউশন, ছোট সেহেরা স্কুল নাটক পরিবেশন করেছে। বিচারক ছিলেন বাদল কাঞ্জিলাল ও বিভাস চট্টোপাধ্যায়। প্রেক্ষাগৃহ-ভর্তি দর্শক এবং প্রতিযোগিদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখে বিচারকেরা বলেন, “এখানে না এলে বুঝতাম না, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েদের নাটক করার এতটা আগ্রহ এবং তারা এতটা গুণী।” ‘সুযোগ পেলে’ আগামী দিনে কলকাতার নাট্যমোদী দর্শকেরও মন জয়ের ক্ষমতা এরা রাখে বলেও মন্তব্য করেন বিচারকেরা। অনুষ্ঠানের শেষ দিন উদ্যোক্তাদের পক্ষে মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘হজমশক্তি’, যা দর্শকেরা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। আগামী ১৫ অক্টোবর ন্যাজাটে নাটকের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান উদ্যোক্তা সংস্থার সম্পাদক তপন দেব। তিনি বলেন, “সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নাটক নিয়ে প্রচুর উৎসাহ রয়েছে। একটু সুযোগের অভাবে বহু সুপ্ত প্রতিভা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নাটকের পরিবেশ গড়ার পাশাপাশি ওদের উৎসাহিত করতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন।” |