|
|
|
|
|
|
 |
মনোরঞ্জন ২... |
|
স্টেজে উঠলেই
ভাবব আনাকে নিয়ে
‘এসকেপ’ করবেন কবে |
এনরিকে ইগলেসিয়াস ভারতে আসছেন। পুজোর ঠিক আগে।
তাঁকে ঘিরে
এত উন্মাদনা কেন?
তাঁর ‘এসকেপ’ শুনে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘সোচতা হুঁ’
গেয়েছিলেন যিনি সেই এনরিকে-মুগ্ধ বাবুল সুপ্রিয় কলম ধরলেন |
 |
|
এনরিকে ভারতে আসছেন। বিরাট এই হেডলাইনটিকে আরও একটু অন্যরকম ভাবে সাজিয়ে লিখব আমি। এনরিকে সশরীরে ভারতে আসছেন। ১৭ অক্টোবর প্রথম শো। ‘সশরীরে’ শব্দটাই আমার কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কেন বলছি এ কথা? একবার নিজের আইপডের প্লে-লিস্টে চোখ বোলান। উত্তরটা ওখানে জ্বলজ্বল করছে। কী গানে, কী চেহারায়—জুলিও ইগলেসিয়াসের সুযোগ্য পুত্র এনরিকে প্রকৃতপক্ষেই একজন রকস্টার। আর তাই তাঁর ভারতে আসার উন্মাদনাতে আমার মন ওঁর শো-এর প্লে-লিস্ট সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি করে ফেলেছে কিছু প্রশ্নের একটা ইচ্ছেতালিকা। আর সেগুলোর উত্তর পাওয়া বা না-পাওয়ার মধ্যে উন্মোচিত হবে এনরিকে রহস্য।
|
নৈঃশব্দ্য থেকে বিগ ব্যাং
প্রথমেই জানতে চাই যে উনি নিজের মনকে কী ভাবে তৈরি করেন একটা অ্যালবাম পরিকল্পনার সময়? গানের কথা, সুর এবং প্রেমগীতির (লাভ ব্যালাডস) মধ্যে এতটা বৈচিত্র কী ভাবে নিয়ে আসেন তিনি? একটা অত্যন্ত সম্ভাবনাময় নৈঃশব্দ্য থেকে একটা বিগ ব্যাংকী ভাবে নিজের মনকে সুরে বাঁধেন? দারুণ হত যদি উনি নিজের জীবনের থেকে দৃষ্টান্ত নিয়ে সাজিয়ে বুঝিয়ে দিতেন কী ভাবে কঠোর পরিশ্রম আর সৃষ্টিশীলতার মধ্যে ভারসাম্য রাখা যায়? যে মানসিকতা থেকে তৈরি হয় এমন প্রেরণাদায়ক আর নেশা ধরানো গান।
ও ড্যাডি!
খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে প্রভাবশালী পিতার সন্তানেরা তাঁদের বাবা-মায়ের সাফল্যকে ছাপিয়ে গিয়ে নিজেদের জন্য একটা আলাদা জায়গা তৈরি করতে পেরেছেন। এনরিকে নিজের জীবনে তাঁর প্রবাদপ্রতিম বাবার উপস্থিতি কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন? জুলিও তাঁর জীবনে কোথায় আছেন? কোথায় বা একেবারে অনুপস্থিত? কোথায় তিনি অনুপ্রেরণা? আবার কোথায় তিনি বাবার খ্যাতির ভারে অনেকটাই পিছিয়ে? যে বাবার কোটি কোটি রেকর্ড বিক্রি হয়েছে তাঁর উত্তরাধিকারের বিশাল বোঝা কাঁধে নিয়ে তিনি কিন্তু স্বাতন্ত্র্যের চূড়া ছুঁয়ে ফেলেছেন। কী ভাবে হল সেটা?
মিস্টার ক্লিন
যখন চটজলদি সাফল্যের পেছনে অন্ধের মতো ছুটছে মানুষ, তখন উনি কিন্তু এখনও ব্যতিক্রমী। কোনও দিন পড়েছি বলে ঠিক মনে হয় না ওঁর ড্রাগস, মহিলা বা মদ্যপান করে গাড়ি চালানো নিয়ে কোনও অভিযোগ। থাক না অন্য শিল্পীদের উদাহরণ, যাঁদের কাছে
রকস্টার সংজ্ঞাটা পরিপূর্ণতা লাভ করে খানিকটা সঙ্গীত আর খানিকটা কেচ্ছার সুমিশ্রণে। এনরিকে কী ভাবে শুধু সঙ্গীতের ওপর ভর করে এ সব এড়িয়ে জনপ্রিয়তার এই শিখরে?
কেয়ারফুলি কেয়ারলেস
আরও একটা ব্যাপার বড্ড জানতে ইচ্ছে করে আর সেটা হল কী ভাবে এনরিকে তাঁর ব্যস্ত জীবন আর অগুনতি বিদেশ সফরের মধ্যেও নিজের ‘রকস্টার’ চেহারাটা এ ভাবে ধরে রেখেছেন এত দিন। এলভিস প্রেসলি, মাইকেল জ্যাকসন, লেডি গাগা থেকে প্রিন্স, জর্জ মাইকেলদের অদ্ভুত স্টাইল সেন্স যখন আমাদের হাসায়, তখন আপনার কুল গাই চেহারাই কি আপনার ইউএসপি? এই ‘সেক্সি’ কেয়ারফুলি কেয়ারলেস লুকের রহস্যটা কী? ঠিক মতো ডায়েট আর ব্যায়ামের মিশ্রণ? নাকি অন্তরালে কাজ করে যাওয়া একটা ইমেজ কনসালটেন্ট টিম?
স্প্যানিশ সোনাটা
স্প্যানিশ ও ল্যাটিনো মিউজিকের প্রভাবের মধ্যেই তাঁর জন্ম। বেড়ে ওঠা মায়ামির মতো সঙ্গীতসমৃদ্ধ প্রাণবন্ত শহরে। সে রকম ভাবে কোনও স্টাইলে বন্দি একজন শিল্পী নন। প্রশ্ন হচ্ছে কী ভাবে তিনি এই অভাবনীয় সংগীত মূর্ছনা সৃষ্টি করেন? যতই বলা হোক সঙ্গীতের কোনও সীমাবদ্ধতা নেই, শিল্পী হিসেবে আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয় সঙ্গীতে ভাষার একটা বিরাট ভূমিকা আছে। বেশ কয়েকটি ভাষায় সুপারহিট গান আছে তাঁর। মনে রাখবেন, এগুলো ফিল্মের গান নয় যে সঙ্গীত পরিচালক যা চাইলেন, কাগজ দেখে গেয়ে দিলেন। জানতে চাইব কী করে তাঁর গান ভাষা বা ভূগোলের সব গণ্ডি ছাপিয়ে যায়? স্টাইলের বৈচিত্র আর বর্ণাঢ্যতা, পৃথিবীজোড়া ফ্যানদের যেমন কাঁদিয়েছে তেমনি সমান ভাবে উল্লাসে মাতিয়েছে...এক দিকে যেমন প্রেমের চূড়ান্ত ব্যাকুলতা প্রকাশ পায়, ‘আই হ্যাভ অলওয়েজ লাভড ইউ’ বা ‘এসকেপ’-এর মতো গানে, অন্য দিকে আবার যে কোনও পার্টির শেষ কথা ‘বাইলামোস’ বা ‘রিদম ডিভাইন’। জনপ্রিয় গান করার চাপ থেকে বেরিয়ে তিনিই আবার গেয়েছেন ‘স্যাড আইস’ বা ‘আই উইল সারভাইভ’-এর মতো সংবেদনশীল গান। ‘ডার্টি ডান্সার’ গাইলেন আশার-এর সঙ্গে, ‘আই লাইক হাউ ইট ফিলস’ পিটবুল-এর সঙ্গে। এই রকমই সব যুগলবন্দি তাঁর ঝুলিতে। এই বৈচিত্র তিনি সৃষ্টি করে চলেছেন কী ভাবে?
অ্যাডভান্টেজ আনা
আনা কুরনিকোভাকোনও কথা হবে না। আমাকে বোঝান তো কী সেই রহস্য যার জন্য সেই ২০০১ সাল থেকে একসঙ্গে আছেন বিয়ের কথা না ভেবে? এই সাফল্যের পিছনে রসায়ন বা ফিজিক্সটা বা কী? মানে দাম্পত্য জীবনে (পড়ুন প্রেমের কোর্টে) অপরের মুড (পড়ুন বিপদ) বুঝতে একটু আধটু দুষ্টু-মিষ্টি প্লে-অ্যাকটিং করে অপরকে আনস্টপড ‘এস’ মারতে দেওয়া? ভার্বাল ভলির লম্বা র্যালিগুলোকে বেস লাইন থেকে খেলে যাওয়াটাই কি আপনাদের প্রেমের গেমপ্লান? নাকি র্যালিগুলোকে ছোট রাখতে তাড়াতাড়ি নেটের কাছে চলে যাওয়া? কিছু তো আছে আপনাদের মধ্যে, কিন্তু কী সেটা?
পপস্টারদের নিয়ে যত জল্পনা কল্পনা ততটাই মুখরোচক তাদের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কেচ্ছা। স্যার পল ম্যাকার্টনি, ব্রিটনি স্পিয়ার্স, ম্যাডোনা থেকে শানিয়া টোয়েন, ক্রিস ব্রাউন আর রিহানা পর্যন্ত, সবারই বিবাহ পর্বে নানা মুখরোচক গল্প। কিন্তু আপনারা সব সময়ই ভীষণ স্বতন্ত্র থেকেছেন। এমনকী অনেকেই যখন মনে করেছেন
এ সব কেচ্ছা না করলে রকস্টার ইমেজটা ঠিক মানায় না,
আপনারা কিন্তু স্বেচ্ছায় অন্য পথ বেছে নিয়েছেন। এমনকী আপনার অনেক সাক্ষাৎকারে বারবার আপনাকে বলতে শুনেছি যে আনাকে বিয়ে করাটা তেমন প্রয়োজনীয় নয়। এমন প্রেমের ‘এসকেপ’ রুটটা কোথায়?
প্রশ্ন আরও অনেক আছে। করবও। কিন্তু প্রথমে কথা দিন যে আনাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন। আর নিজের পাশে তাঁকে বসিয়ে আমাদের সব বোঝাবেন।
তত দিন, উই উইল ‘বি উইথ ইউ’।
|
|
|
 |
|
|