|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা
|
ওয়াটার পার্ক |
অনিশ্চিত প্রকল্প |
কৌশিক ঘোষ |
জমি জবরদখল হয়ে যাওয়ায় আটকে গেল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) ‘ওয়াটার পার্ক’ নির্মাণ প্রকল্প।
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে পুকুর ও তার আশপাশের জমি মিলিয়ে প্রায় একশো বিঘা জমির উপর এই ‘ওয়াটার পার্ক’ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। ২০০৩-’০৪ সালে সিদ্ধান্ত হয়, একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প গড়বে কেএমডিএ। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়, বাইপাসের ধারে এই আধুনিক ‘ওয়াটার পার্কে’ যাবতীয় বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। ঝিলে নৌকায় ভ্রমণ, আধুনিক রেস্তোরাঁ, নানা রকম জলক্রীড়া, মাছ ধরা, এমনকী ঝিলের পাশের জমিতে অতিথিশালা তৈরির নকশাও হয়েছিল। পার্কে প্রবেশের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করে কেএমডিএ-র এই জমি থেকে সরকারের কিছু রোজগারের পরিকল্পনাও করা হয়। |
|
কেএমডিএ সূত্রের খবর, আলোচনার পরে দরপত্রের মাধ্যমে একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সমগ্র এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, ঝিলের চারপাশে রয়েছে শ’পাঁচেক ঝুপড়ি। কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে ঝুপড়িবাসীদের সরিয়ে প্রথমে এলাকাটি টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ওই এলাকায় ‘ওয়াটার পার্ক’ নির্মাণ হবে বলে একটি বোর্ডও লাগানো হয়। তবে কিছু দিনের মধ্যেই ফের টিনের সীমানা ভেঙে সেখানে বসবাস করতে শুরু করেন ঝুপড়িবাসীরা। ফলে ওই পুকুর ও জমি কার্যত বেহাত হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে কোনও সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা প্রকল্পটি নির্মাণে আগ্রহী নয়।
কেএমডিএ-র সিইও বিবেক ভরদ্বাজ বলেন, “কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রকল্পের জন্য জমিটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ওই জলাভূমিতে ‘ওয়াটার পার্ক’ নির্মাণের পরিকল্পনাও হয়। কিন্তু জলাভূমিটি জবরদখল হয়ে যাওয়ায় কেউ তা নিতে চাননি। এই অবস্থায় প্রকল্পটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।”
কেএমডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেএমডিএ ইতিমিধ্যেই দক্ষিণ কলকাতার পাটুলিতে জলাভুমিতেই একটি বিনোদন পার্ক তৈরি করছে। কিন্তু ‘ওয়াটার পার্ক’ প্রকল্পটি বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছে ঠিক জানা নেই। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে তা কী ভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করব।” |
|
বর্তমানে এই ঝিলের চারধারে ডাঁই হয়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। যেখানে-সেখানে ঝুপড়ি গড়ে উঠেছে। ঝুপড়িবাসীদের বক্তব্য, এই জমি কেএমডিএ-র। বহু বার এখান থেকে সরে যেতে বলা হলেও বিকল্প জায়গা না মেলায় তাঁরা এখানে রয়েছেন। মেয়রের কথায়: “শহরের অনেক ঝুপড়িবাসীকেই কেন্দ্রীয় সরকারের দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগেই প্রক্রিয়াটি চলছে। তবে, নির্দিষ্ট ভাবে এখানকার ঝুপড়িবাসীদের বিষয়ে পুরসভার কিছু করার নেই। কেএমডিএ-র জমিতে বাস করায় তাদেরই ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে কী ভাবে তা করা হবে তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।”
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|