ডেঙ্গি থাবা বসাল হুগলিতেও।
উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর এবং আরামবাগের সরকারি হাসপাতালে অন্তত ৯ জন রোগীর শরীরে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। সন্দেহের তালিকায় রয়েছে বেশ কয়েক জন। তাঁদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে হাসপাতালগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলার নার্সিংহোমগুলিতে এমন রোগী রয়েছেন কি না, তা নিয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি। ফলে, নার্সিংহোমগুলিতে স্বাস্থ্য দফতরের আদৌ নজরদারি আছে কি না, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তণিমা মণ্ডল এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলব না। যা জানার ওয়েবসাইট থেকে জানুন।”
শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল সূত্রের খবর, শহরের বাসিন্দা ৭৬ বছরের অঞ্জলি গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাজেশ ডোমের রক্তের এন এস-১ পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ হয়েছে। তাঁদের রক্তের নমুনা এমসি-অ্যালাইজা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের সুপার বিবেকানন্দ সরকার জানান, ডেঙ্গি সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে অবহিত করা হয়েছে। রাজেশবাবু কলকাতা পুরসভার সাফাইকর্মী। আরও অন্তত ২ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “ওঁদের লক্ষণ দেখেও ডেঙ্গি বলেই মনে হচ্ছে। রক্তের রিপোর্ট এলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
শ্রীরামপুরের পাশাপাশি উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও ২ জনের শরীরে ধরা পড়েছে ডেঙ্গির উপস্থিতি। আরও কয়েক জনের ডেঙ্গি হয়েছে বলে চিকিৎসকদের অনুমান। তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরীক্ষার জন্য। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে দু’জন মহিলা-সহ ৫ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। তাঁদের বাড়ি গোঘাট এবং খানাকুলে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, গত কয়েক দিন ধরে গড়ে ৫০ জন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন জ্বরের উপসর্গ নিয়ে। ওই চিকিৎসক বলেন, “অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসায় এ রোগ সারে। তবে, সকলের সতর্ক থাকা উচিত। জ্বর হলেই সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখানো উচিত।”
উত্তরপাড়া এবং শ্রীরামপুর দুই শহরের বাসিন্দাদেরই অভিযোগ, ডেঙ্গি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা অথবা ব্লিচিং পাউডার বা মশা নিরোধক রাসায়নিক ছড়ানো সব ব্যাপারেই পুরসভা উদাসীন। কোন্নগর, রিষড়া, বৈদ্যবাটি, ভদ্রেশ্বর, চন্দননগর, চুঁচুড়া বা আরামবাগের মতো শহরগুলিতেও এ নিয়ে পুরসভার উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা।
আইএমএ-র শ্রীরামপুর শাখার সম্পাদক চিকিৎসক প্রদীপ দাস বলেন, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিকদের সচেতনতার পাশাপাশি পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলির উচিত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্লিচিং পাউডার এবং রাসায়নিক ছড়ানো। আর দেখতে হবে যেন অকারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে না পড়ে।” |