স্থানীয় তারকা ক্লাব পেলেন
‘শান্তিচুক্তি’ ছুড়ে ফেলে আজ বাগানে আত্মপ্রকাশ টোলগের
সাড়ে তিন মাসের লড়াই, উৎকণ্ঠা, প্রতীক্ষা ছিল ধাতব চাকতিটার জন্য। যার নম্বর ৩৪২১। টোলগে ওজবের টোকেন!
সেই টোকেন হাতে পাওয়ার জন্য সোমবার ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে বসে ‘শান্তিচুক্তি’ করে এসেছিলেন টোলগে ওজবে। অথচ সেটা যে আসলে ভড়ং ছিল, তা বোঝা গেল মঙ্গলবার বিকেলেই। মোহনবাগান ফুটবলার হিসেবে আইএফএ-তে সই করে ফিরেই অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার কার্যত ছুড়ে ফেললেন সেই ‘শান্তিচুক্তি’। ক্লাবের বড় কর্তাদের পাশে বসে বলে দেন, “ফিফায় অভিযোগ জানালে আমিই জিততাম। মাঝের তিন মাস সময়ে মনে হয়েছে, আমাকে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে।”
আইএফএ থেকে টোলগে যখন বেরোন মুখে তৃপ্তির হাসি! বুধবারই সবুজ-মেরুন জার্সিতে আত্মপ্রকাশ করবেন এয়ারলাইন্স কাপের সেমিফাইনালে। মোহনবাগান তাঁবুতে হাজির টোলগের বান্ধবী সেরাপ-ও। তিনিও স্বস্তিতে। তবে টোলগের মনে রয়েছে খচখচানিও। একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললেন, “ফরগিভেন বাট নট ফরগটেন।” অর্থাৎ, লাল-হলুদ কর্তাদের মন থেকে ক্ষমা করলেও ভুলতে পারবেন না পুরো ঘটনাটা।
কী লেখা ছিল ইস্টবেঙ্গলে রেখে আসা টোলগের সেই মুচলেকায়? ‘এমন কোনও মন্তব্য তিনি করবেন না, যাতে ইস্টবেঙ্গলের ভাবমূর্তিতে কালির ছিটে লাগে।’ অথচ ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই টোলগে ১৮০ ডিগ্রি সরে গেলেন সেই মুচলেকা থেকে। তবে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকার আমলই দিলেন না ব্যাপারটা। ‘শান্তিচুক্তি’-ভঙ্গের কথা স্বীকার করলেও টোলগের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিতে চান না তিনি। বললেন, “টোলগের বিষয় শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাদের আরও অনেক জরুরি কাজ আছে।”
সমর্থকদের ভালবাসা গ্রহণ। ছবি: উৎপল সরকার
টোলগে-বিষয়কে কেন্দ্র করে একটা ঠান্ডা লড়াইও হয়ে গেল দুই ক্লাব কর্তাদের মধ্যে। এ দিন মোহনবাগান কর্তাদের কথায় ইঙ্গিত ছিল, টোলগের টোকেন নিয়ে আসল গলদটা রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের অন্দরেই। সচিব অঞ্জন মিত্র ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের কাছে অনুরোধ জানান, তদন্ত চালানোর। যা থেকে পরিষ্কার হবে, ইস্টবেঙ্গলের চুক্তিতে সই না করলেও টোলগের টোকেন কী করে লাল-হলুদ কর্তাদের জিম্মায় রইল? লাল-হলুদ কর্তারা দাবি করেছিলেন, টোলগে অগ্রিম নিয়েছে। অঞ্জনবাবু প্রশ্ন তোলেন, চুক্তিতে সই না করে কী করে এই কাজটা হল? ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রতবাবু যার জবাবে বলেন, “নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এ সব কথা যারা বলছে তারা বলুক। ফুটবলারের সঙ্গে কী ভাবে চুক্তি করতে হয় সেটা আমরা ভালই জানি।” টোকেন হাতে পাওয়ার জন্যই যে সবুজ-মেরুন কর্তারা সোমবার চুপচাপ ছিলেন তা সাফ জানিয়ে দেন দেবব্রতবাবু। বলেন, “যারা টোকেন পাওয়ার জন্য রাতে ফোনে বিব্রত করতে পারে, তারা এই সব কথা আগের দিন বলল না কেন?” ইঙ্গিতটা মোহনবাগানের এক কর্তার ফোনের প্রতি। যিনি ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলার কথা বলেছিলেন।
বান্ধবীর সঙ্গে চা-পান। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
মোহনবাগানের নিশানায় অবশ্য শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়, ছিল আইএফএ-ও। অঞ্জনবাবুর কথায়, “আইএফএ-র দেখা উচিত কেন সমস্যা সমাধানে এত দেরি হল।” সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়কে একটা অদৃশ্য দড়ি দিয়ে চালনা করা হয়েছে। তাঁকে ভয় দেখানো হয়েছে।” টোকেন-ব্যবস্থার প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন মোহন-কর্তারা। টোলগেও সেই যুক্তি সমর্থন করে বলেন, “ক্লাব ও আইএফএ, দু’পক্ষই যেন বিদেশি ফুটবলারকে বুঝিয়ে দেয় টোকেনের ব্যাপারটা।”
টোলগে ইস্টবেঙ্গল না ছাড়লে সাড়ে তিন মাসের এই লড়াইটাই লড়তে হত না। কী কারণ ছিল তাঁর লাল-হলুদ জার্সি ছাড়তে চাওয়ার পিছনে? টোলগে জানান, সেটা সঠিক ব্যক্তিরা জানেন। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের কথায়, “এই কারণটা আমার আর ওই সঠিক ব্যক্তিদের মধ্যেই থেকে যাবে।”
টোলগে মুখে বলছেন, ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ এর পরেও তাঁর কাছে আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। সাড়ে তিন মাসের এই টোকেন-যুদ্ধের পর কি অস্ট্রেলীয়র পক্ষে আসল সময় মাঠে এতটা নির্লিপ্ত থাকা সম্ভব হবে?

বুধবারে এয়ারলাইন্স গোল্ড কাপ সেমিফাইনাল

মোহনবাগান-জর্জ টেলিগ্রাফ (যুবভারতী, ৩-০০)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.