বাড়তি ফি নেওয়া সহ পঠন-পাঠন নিয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্কুল পরিচালন সমিতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার জেরে শিক্ষকদের স্কুলে আটকে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল মালদহের রতুয়ার দেবীপুর এলাকা। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। স্কুল পরিচালন সমিতি সম্পাদক ও করণিকের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে রাজ্য সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে এলাকায় যান রতুয়া ১-এর বিডিও। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বিকেল ৪টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। শিক্ষক-শিক্ষিকারা মুক্ত হন। রতুয়া-১ বিডিও পার্থ দে বলেন, “কর্তৃপক্ষের নামে বাড়তি ফি নেওয়ার পাশাপাশি রসিদ না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। এ ছাড়া নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। সমস্যা মেটাতে ছাত্রদের নিয়ে পরিচালন সমিতিকে জরুরি সভা ডাকতে বলা হয়েছে।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক চালু হয়েছে। কিন্তু ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বাবদ তাঁদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে তা জানতে মঙ্গলবার এক ছাত্র কর্তৃপক্ষের কাছে যায়। অভিযোগ, ওই ছাত্রকে ডেকে পরিচালন সমিতির সম্পাদক রবি সাহা ও করণিক প্রদীপ সাহা ধমক দেন। এমনকী নেতাগিরি করলে ফল ভাল হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার পরে সম্পাদক ও করণিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় প্রশান্ত মন্ডল নামে ওই ছাত্র। বুধবার স্কুল খুলতে পড়ুয়ারা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘরে আটকে ফটকে তালা ঝুলিয়ে ভালুকা-রতুয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক ও করণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” যদিও পড়ুয়াদের তোলা অভিযোগ পরিচালন সমিতির সম্পাদক রবি সাহা ও করণিক প্রদীপ সাহা অস্বীকার করেছেন। তাঁরা বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ। কেন ছাত্রকে হুমকি বা ধমক দিতে যাব! ওই ছাত্র শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্র সুলভ আচরণ না-করায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে মাত্র।” এ দিকে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বাবদ অন্য স্কুলের তুলনায় বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। স্কুলে কিছু বিষয়ের শিক্ষক নেই। পঠন-পাঠন হচ্ছে না। একাদশ শ্রেণিতে পছন্দমতো বিষয় নিতে পারছে না পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন খালি থাকায় স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ লাটে উঠেছে। ছাত্র প্রশান্ত মন্ডলের কথায়, “ওই অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে জানাতে গেলে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে।” ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভাশিস সিংহ ছাত্রদের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “বাড়তি ফি নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। যে টাকা নেওয়া হচ্ছে তার রসিদ দেওয়া হচ্ছে।” |