বাম আমলে নেওয়া ছাত্রী ভর্তির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতেই পড়ুয়া সংখ্যা বেড়ে গেল বালুরঘাট কলেজে। গত বছরের তুলনায় এবছর একলাফে এই কলেজে ৬১ শতাংশ ছাত্রছাত্রী বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা সংকূল অবস্থার পরিবর্তনের আশা দেখছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ দিনাজপুরের ঐতিহ্যশালী বালুরঘাট কলেজ পরিচালন সমিতির পূর্বতন বাম কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, কলা বিভাগের পাস কোর্সে কোনও ‘ছাত্রী’ ভর্তি নেওয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে ন্যাক আপত্তি জানিয়ে ছিল। এর ফলে বিগত বছর গুলিতে ক্রমান্বয়ে বালুরঘাট কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে। পঠন পাঠনের উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় পড়ুয়ার অভাবে কলেজে উন্নয়ন তহবিলে মার খেয়ে বেহাল দশা হয়ে পড়ে। এনসিসি বিভাগ ছাত্রীর অভাবে উঠে যেতে বসে। ন্যাকের বিচারে মানন্নোয়নে নিচের সারিতে নেমে আসে। বালুরঘাট কলেজ এ বছর ফের পাস কোর্সে মেয়েদের ভর্তির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয় নিয়ে ন্যাক ফের প্রশ্ন তুললে নড়ে বসে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে পড়ে বর্তমান বালুরঘাট কলেজ পরিচালন সমিতির বামফ্রন্টের আরএসপি সভাপতি সুচেতা বিশ্বাস শিক্ষকদের দাবি মেনে সম্মতি দেন। গত চার দশক ধরে চলা ওই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। ফলে অন্যান্য কলেজের আগেই বালুরঘাট কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলে দেখা যায়, পাসে মোট পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন। ১৯২৯ জন এরমধ্যে ছাত্রী রয়েছেন ৬৫২ জন গত বছর পাসে ভর্তির সংখ্যা ছিল ৯০০ জন ছাত্র কলেজ পরিচালন সমিতির সভানেত্রী তথা পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা দেবী অবশ্য বলেন, “ছাত্র বৃদ্ধি আভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পড়ুয়া বেড়েছে আগামীতে এই প্রয়াস জারি থাকবে। তবে বালুরঘাটে গার্লস কলেজে ছাত্রী ভর্তি কমে যাওয়ায় সমতা ফেরাতে নেতারা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে এক শিক্ষক জানিয়েছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তারাশঙ্কর বন্দো বলেন, “সুনাম ও পরিকাঠামো সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রী ভর্তি হচ্ছিল না। পাসকোর্সে মেয়েদের ভর্তির উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ন্যাক আপত্তি জানিয়েছিল। এই বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে এবারে সকল ছাত্রছাত্রীর প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিতে পড়ুয়া সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।” তৃণমূল ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি অতনু রায় অভিযোগ করেন, বাম আমলে তাদের কুক্ষিগত কিছু কলেজে ছাত্র ভর্তি বাড়াতে এমন অন্যায় সিদ্ধান্ত কায়েম করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তে কেবল ছাত্রী নয়, ছাত্র ভর্তিও বেড়েছে।” কলেজ সূত্রের খবর, গত বছর কলা বিভাগে পাস কোর্সে ছাত্র ৯০০, অনার্সে ছাত্রছাত্রী মিলে ৫১৪, বিজ্ঞান বিভাগে ২০১ এবং বাণিজ্য বিভাগে ১৯ জন ছাত্র ছিলেন। এ বছর ছাত্রী ভর্তির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সব বিভাগে পড়ুয়া বেড়েছে। কলা বিভাগের পাসে নতুন ৬৫২ জন ছাত্রী-সহ মোট ১৯২০ জন ভর্তি হয়েছেন অনার্সে ৫১৪, বিজ্ঞানে ২৫৯ এবং বাণিজ্য বিভাগে ছাত্র বেড়ে হয়েছে ২৩ জন। |