পাড়ার জলসায় রাতে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় এক স্কুলশিক্ষিকার বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গড়িয়াহাটের ডোভার টেরেস এলাকার বাসিন্দা রুমা হালদারের অভিযোগ, বুধবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তাঁর বাড়ির সামনেই এক জলসার আয়োজন করা হয়। তাঁদেরই ভাড়াটে কয়েকটি পরিবার ও বাড়ি-লাগোয়া বস্তির কয়েক জন অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা। রাত ১০টার পরেও তারস্বরে মাইক বাজানোয় আপত্তি জানান রুমাদেবী। কিন্তু কর্ণপাত করেননি উদ্যোক্তারা। এর পরেই তিনি স্থানীয় থানায় গিয়ে নালিশ জানান। যাদবপুরের ঝিল রোডের একটি স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষিকা রুমাদেবী বৃহস্পতিবার বলেন, “পুলিশ এসে মাইক বন্ধ করার পরেই এলাকার কয়েক জন আমাকে ঘিরে ধরে মারধর করে। ওদের হাত থেকে বাঁচাতে পুলিশ আমাকে ফের থানায় নিয়ে যায়। তার পরেই বাড়িতে হামলা হয়।” রুমাদেবীর অভিযোগ, ঢিল মেরে জানলার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। ভাঙা হয় দরজাও। আতঙ্কিত হালদার পরিবার থানায় খবর দেয়। |
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতেই মনোজিৎ চৌধুরী ও গৌরব দাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপাল রজক এবং দিলীপ পাল নামে আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে শব্দবিধি ভাঙা এবং ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে।
রুমাদেবীর ভাড়াটে এবং বস্তির বাসিন্দারা এই অভিযোগ পুরোপুরি মানতে চাননি। তাঁরা জানান, ১০টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করা না-গেলেও জলসা আর বেশিক্ষণ চলত না। সে কথা জানানো সত্ত্বেও ওই মহিলা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে মাইক বন্ধ করে। পড়শিরা আরও জানান, এর পরে রুমাদেবীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে স্থানীয় কয়েক জন চেঁচামেচি করলেও ঢিল ছোঁড়া হয়নি। ওই বাড়ির লোকেরাই জানালার কাচ ভেঙেছেন।
বাড়িতে হামলায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল রুমাদেবীর ‘ভাইপো’ বছর আটেকের দেবজ্যোতি। সে বলল, “টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ ঝমঝম করে আওয়াজ। দোতলার বারান্দার জানলার কাচ ভেঙে ইট ভিতরে পড়ছিল। বাড়ির সামনের রাস্তায় ভিড়। সবাই খুব চিৎকার করছিল। ভয়ে কেঁদে ফেলেছিলাম।”
রাত পর্যন্ত মাইক বাজানো নিয়ে আপত্তি জানানোয় স্থানীয় ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি দেবাশিস কুমারের নাম করে তাঁকে ‘হুমকি’ দেওয়া হয় বলেও জানান রুমাদেবী। দেবাশিসবাবু বলেন, “আমার নাম করে কেউ হুমকি দিলে থানায় নিশ্চয়ই তা নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমি চাই পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিক।” বৃহস্পতিবার রুমাদেবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন দেবাশিসবাবু। |