পুরুলিয়ার নিখোঁজ এক তরুণীকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার পরে ওই তরুণী বারুইপুরেরই এক যুবকের হেফাজতে ছিল বলে পুলিশের দাবি। অসীম দাস নামে ওই যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার ধৃত যুবককে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে তার ১৪ দিন জেল হাজত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার কোটশিলা থানা এলাকার মুটুকুড়া গ্রামের বছর আঠারোর ওই তরুণী গত
|
অসীম দাস।
—নিজস্ব চিত্র। |
১৮ জুলাই সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার থেকে তাঁর খোঁজ মেলেনি। অস্বচ্ছল পরিবার, চাষবাস করেই মূলত সংসার চলে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মোবাইলে ‘মিস্ড কল’ থেকেই তরুণীটির সঙ্গে কিছু দিন আগে আলাপ বারুইপুরের বাসিন্দা পেশায় রঙমিস্ত্রি অসীমের। মোবাইলে মাঝে মাঝেই তাঁদের কথা হত। অসীম ওই তরুণীর কাছে নিজেকে ঠিকাদার বলে পরিচয় দিয়ে কোনও সংস্থায় তাঁকে কাজ জুটিয়ে দেওয়ার কথা বলে। ১৮ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আদারডি মোড় থেকে বাস ধরে পুরুলিয়া শহরে এসে ট্রেনে টেপে ওই তরুণী সেদিন রাতেই হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। ২২ জুলাই তাঁর পরিবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।পুলিশ জানিয়েছে, অসীম ওই তরুণীকে বারুইপুরের পিয়ালি এলাকায় একটি ভাড়া ঘরে রাখে। তদন্তে নেমে পুলিশ তরুণীর মোবাইলের ‘কললিস্ট’ পরীক্ষা করে দেখে যে ওই নম্বর এবং অন্য একটি মোবাইল নম্বরের মধ্যে ৭৬টি কল হয়েছে। অন্য মোবাইলটির সিমকার্ড যাঁর নামে রয়েছে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অসীমের নাম পায় পুলিশ। দেখা যায় ওই নম্বরটি (অসীমের ফোন) বারুইপুর এলাকাতেই রয়েছে। যদিও তরুণীর মোবাইল পুলিশ ‘ট্র্যাক’ করতে পারছিল না। পরে কম্পিউটারের সাহায্য তরুণীর মোবাইলের সিগন্যাল বারুইপুর এলাকাতেই পায় পুলিশ।
গত শনিবার কোটশিলা ও বারুইপুর থানার পুলিশ এবং এসওজি-র কর্মীরা যৌথভাবে বারুইপুরের চম্পাহাটির মণ্ডলপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পুরুলিয়ায় নিয়ে আসে। ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতনও চালানো হয়েছে। তরুণীর বাবার কথায়, “মেয়ে যে এ রকম ভাবে বাড়ি থেকেই বেরিয়ে চলে যাবে, সেটা আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।”
পুলিশের দাবি, জেরায় অসীম জানিয়েছে, মেয়েটি তাকে বিয়ে করবে বলেছিলেন। এখন তরুণীটি উল্টো কথা বলছেন। |