উচ্চ ফলনশীল উন্নত প্রজাতির বীজের ব্যবহার বাড়িয়ে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিল কোচবিহার জেলা কৃষি দফতর। পরিকল্পনা রূপায়ণে চাষিদের নিয়ে জেলার ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রদর্শনী খেত তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে ওই সমস্ত খেতের ফলন ঘরে উঠবে। এর পরে উৎপাদনের পরিসংখ্যান সামনে রেখে আরও চাষিদের টেনে আনতে উদ্যোগী হবে দফতর। কোচবিহারের মুখ্য কৃষি আধিকারিক প্রণবজ্যোতি পন্ডিত বলেন, “গতানুগতিক প্রজাতির বীজের বদলে উন্নত ও অধিক ফলনশীল বীজের ব্যবহার নিয়ে চাষিদের উৎসাহিত করার কাজ চলছে। পরিকল্পনা মতো প্রদর্শনী খেত তৈরি করা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে জেলায় ধানের উৎপাদন গড়ে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে।” কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় ২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। উৎপাদন হয় প্রায় ৪ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। জেলায় বোরো চাষের এলাকা রয়েছে ৪০ হাজার হেক্টর। উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ ১ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশন এবং গ্রিন রেভ্যুলিউশন প্রকল্পের মাধ্যমে জেলায় ধানের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই কাজের জন্য মোট ২৬টি প্রদর্শনী খেত তৈরি করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন ব্লকে একলপ্তে ২৫০ হেক্টর জমি রয়েছে এমন প্রদর্শনী খেতের সংখ্যা ২০টি। অন্যদিকে কোচবিহার-১, তুফানগঞ্জ-১, দিনহাটা-১, মাথাভাঙা ১ ও ২ এবং মেখলিগঞ্জ ব্লকে একলপ্তে ১০০ হেক্টর জমি রয়েছে এমন ৬টি এলাকায় ওই প্রদর্শনী খেত তৈরি করা হয়েছে। সেখানে উন্নত প্রজাতির স্বর্ণ সাবওয়ান, আইআর-৩৬, স্বর্ণমাসুরি প্রজাতির ধানের চাষ করছেন প্রায় ১২ হাজার চাষি। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ওই সব প্রজাতির বীজে প্রতি বিঘা জমিতে ন্যূনতম ১১ মন থেকে সর্ব্বোচ্চ ১৫ মন পর্যন্ত ফলন হয়। অথচ সাধারণ ভাবে যেসব প্রজাতির বীজ চাষ করা হচ্ছে তাতে খুব বেশি হলে বিঘা প্রতি জমি থেকে ১০ মন ধান মিলছে। স্বাভাবিক ভাবে প্রদর্শন খেতের সাফল্য দেখলে চাষিদের মধ্যে উৎসাহ বাড়ানো কাজ অনেক সহজ হবে।” কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রদর্শন খেতের জন্য যে সমস্ত চাষিদের জমি ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁদের সরকারি ভাবে বিনামূল্যে বীজ শোধনের প্রয়োজনীয় ওষুধ, অণুখাদ্য, আগাছানাশক সরবরাহ করা হবে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাবেন সংশ্লিষ্ট চাষিরা। তাঁদের উৎপাদিত ফলন সরকারি উদ্যোগে কেনার বন্দোবস্ত রয়েছে। |