এ যেন অন্য সংশোধনাগার। জেলের ভিতরে তৈরি হয়েছে ভলিবল মাঠ। সেখানে জেলকর্মীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কয়েদিরা। প্রতিদিন যাঁদের কড়া নজরদারিতে সংশোধনাগারে রাত কাটাতে হয় এ দিন তাঁদেরই খেলার ময়দানে পদে পদে নাকাল করলেন কয়েদিরা। রবিবার এমনই চেহারা দেখা গেল শিলিগুড়ি স্পেশাল জেলে ‘প্রিজন সানডে’তে। শিলিগুড়ি স্পেশাল জেলের সুপার থুপদেন রাপচি ভুটিয়াও বললেন, “এটাই চেয়েছিলাম। খেলার আনন্দে ওঁরা নিজেদের অতীত ভুলে যাক। নতুন করে বাঁচতে শিখুক। আমাদের এই অনুষ্ঠান ওঁদের নতুন করে বাঁচার আত্মবিশ্বাস যেন তৈরি করে দেয়।” রবিবার ছিল ‘প্রিজন সানডে’। জামার্ন সন্ত ম্যাক্সিমিলান কোলবের স্মরণে ওই দিন বিশ্বের বহু জেলে নানা অনুষ্ঠান হয়। শিলিগুড়ি স্পেশাল জেলে এদিন কয়েদিদের নিয়ে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছিল। জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগী উদ্যোক্তা ছিলেন কালিম্পঙের ক্লুনি চার্চের সন্ন্যাসিনীরা। প্রতি সপ্তাহে তাঁরা শিলিগুড়ি স্পেশাল জেলের মহিলা কয়েকদিনের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেন। এ দিন ৩০৫ জন কয়েদিকে নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ওই খেলাধুলার। ভলিবল ছাড়াও সীমিত ওভারের ক্রিকেট, বস্তা-দৌড়, মহিলাদের জন্য চোখ বেঁধে হাঁড়ি ভাঙা, মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো খেলাধুলাও ছিল। খেলার শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেল সুপার, ক্লুনি চার্চের প্রবীণা সন্ন্যাসিনী সিস্টার মার্গারেট-সহ অন্যান্যরা অতিথিরা। জেল সুপার জানান, এদিনের খেলাধুলার অনুষ্ঠান উপলক্ষে মাঠে চুনের দাগ দেওয়া থেকে শুরু করে বেশির ভাগ কাজই করেছেন কয়েদিরাই। জেল কর্মীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নানা বিষয়ে তদারকি করছেন তারা। এই ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণত বিশেষ খাওয়া যাওয়ার আয়োজন থাকে। এদিন অবশ্য তেমন কিছু ছিল না। ভাত, ডাল, আলু-পটলের তরকারি সঙ্গে পাঁপড় ভাজার কিছু বেশি জোটেনি। জেল সুপার বলেন, “কয়েকদিন পরেই তো স্বাধীনতা দিবস। তার পরে ইদ। সেজন্যই সকলে মিলে ঠিক করেছি, ভালখাওয়া-দাওয়া ওই দু’দিন হবে। স্বাধীনতা দিবসে মুরগির মাংস ও চাটনি হবে। ইদের দিন সিমাইয়ের পায়েস ছাড়াও মুরগির মাংস থাকবে।” |