এ বার আর চার লক্ষ নয়। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ২২ লক্ষ টাকা!
নিজের অ্যাকাউন্ট ঘাঁটতে গিয়ে এই তথ্য দেখে শহরের এক বাণিজ্যিক সংস্থার পদস্থ কর্তার চোখ ছানাবড়া। ইন্টারনেট মারফত ওই টাকা চলে গিয়েছে একাধিক অচেনা অ্যাকাউন্টে। তাঁর অজ্ঞাতেই। অথচ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, তাঁর ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের অ্যাকাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ওই টাকা লেনদেন করা হয়েছে। দিশাহারা ওই ব্যক্তি লালবাজারের দ্বারস্থ হন।
পুলিশ জানায়, নরেন্দ্র কপাডিয়া নামে ওই সংস্থা-কর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে মুম্বই থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম ভূপত রাই দোশি। মুম্বইয়ের কান্দিভেলি এলাকার অশোকনগরে ধরা পড়ে সে।
টাকা হাতিয়ে নেওয়া হল কী ভাবে? পুলিশি সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগেই একটি ভুয়ো ই-মেল এসেছিল নরেন্দ্রের কাছে। সেটিতে ‘ক্লিক’ করার পরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে গিয়েছিল।
কী ভাবে? সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানান, ওই ভুয়ো ই-মেলে ‘কি-লগার’ নামে একটি ‘কম্পিউটার প্রোগ্রাম’ ছিল। এর পরে নরেন্দ্রবাবু অনলাইন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করলে সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর ও পাসওয়ার্ড তখনই ওই প্রোগ্রামের মাধ্যমে হ্যাকারের কাছে চলে যায়। তার পরেই সেই গোপন তথ্য ব্যবহার করে ইন্টারনেট মারফত ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়।
কয়েক মাস আগে দেবাশিস দত্ত নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকেও এই কায়দায় টাকা লুঠ করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে নবি মুম্বইয়ে হানা দিয়ে ওকারা চিনেডু ফার্দিনান্দ ওরফে মাইক এবং চিনওকে কিংসলে ওরফে কিং নামে দুই নাইজেরীয়কে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃতেরা ওই চক্রের পাণ্ডা বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ জানায়, দেবাশিসবাবু বা নরেন্দ্র কেউই ইন্টারনেট মারফত (অনলাইন) টাকা লেনদেন সম্পর্কে কোনও এসএমএস পাননি। তদন্তকারীরা জানান, সাধারণত অনলাইনে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকের মোবাইলে ব্যাঙ্ক থেকে একটি ‘কোড নম্বর’ পাঠানো হয়। সেটা ইন্টারনেট মারফত ফের ব্যাঙ্ককে না-জানালে লেনদেন করা অসম্ভব। তা হলে এ ক্ষেত্রে লেনদেন কী ভাবে হল, সেটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেবাশিসবাবুর ক্ষেত্রে ফোন হারানোর ভুয়ো অভিযোগ করে ‘ডুপ্লিকেট’ সিম কার্ড তুলে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ফলে ব্যাঙ্কের পাঠানো ‘কোড নম্বর’ সরাসরি দুষ্কৃতীদের হাতে চলে গিয়েছিল। নরেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে কি না, জানার চেষ্টা চলছে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নরেন্দ্রের ২২ লক্ষ টাকা এক দফায় সরিয়ে নেওয়া হয়নি।
বরং ৩১ মে থেকে ৬ জুন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ওই সব অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি অভিযুক্ত ভূপতের। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, নরেন্দ্রের টাকা হাতানোর পিছনেও নাইজেরীয় চক্রের হাত রয়েছে। ভূপতকে বান্দ্রা আদালতে তোলা হয়। ১৪ অগস্ট পর্যন্ত তাকে ‘ট্রানজিট রিমান্ড’ (গ্রেফতারের জায়গা থেকে মূল মামলার এলাকায় ফেরা)-এ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আজ, সোমবার ভূপতকে এবং দেবাশিসবাবুর টাকা লোপাটের ঘটনায় ধৃত দুই নাইজেরীয়কে নিয়ে কলকাতায় ফিরছেন গোয়েন্দারা। |
মানুষেরই মতো চামড়া তৈরি করা গিয়েছে রোবটের জন্য। বিজ্ঞানীদের দাবি, নতুন পদ্ধতিতে এই কৃত্রিম চামড়া তৈরিও খুব সহজ। এতে নাকি তৈরি করা যাবে মানুষের মুখভঙ্গিমাও। |